যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের পারিতোষিকসহ তার সম্মান করে। লোকেরা বলল,…

যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের পারিতোষিকসহ তার সম্মান করে। লোকেরা বলল, ‘তার পারিতোষিক কী? হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, “একদিন ও একরাত (উত্তমভাবে পানাহারের ব্যবস্থা করা)। আর সাধারণতঃ মেহমানের খাতির তিন দিন পর্যন্ত। তিনদিনের অতিরিক্ত হবে মেহমানের ওপর সাদকাহ স্ব¦রূপ।

আবূ শুরাইহ খুয়াইলিদ ইবনে আমর আল খুযায়ী নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের পারিতোষিকসহ তার সম্মান করে।” লোকেরা বলল, ‘তার পারিতোষিক কী? হে আল্লাহর রাসূল!’ তিনি বললেন, “একদিন ও একরাত (উত্তমভাবে পানাহারের ব্যবস্থা করা)। আর সাধারণতঃ মেহমানের খাতির তিন দিন পর্যন্ত। তিনদিনের অতিরিক্ত হবে মেহমানের ওপর সাদকাহ স্ব¦রূপ।” মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, “কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের নিকট এতটা থাকা বৈধ নয়, যাতে সে তাকে গোনাহগার করে ফেলে।” লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! তাকে কিভাবে গোনাহগার করে ফেলে?’ উত্তরে তিনি বললেন, “মেহমান মেযবানের কাছে অবস্থান করতে থাকে, অথচ ওর এমন কিছু থাকে না, যার দ্বারা সে মেহমানের খাতির করতে পারে।”

[সহীহ] [উভয় বর্ণনা মুত্তাফাকুন আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

الشرح

আবূ শুরাইহ খুয়াইলিদ ইবনে আমর আল খুযায়ী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীস মেহমানের সম্মান ও মেহমানদারি করার প্রমাণ। তার থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের পারিতোষিকসহ তার সম্মান করে।” এটি মেহমানের সম্মান করার ওপর উৎসাহ প্রদান ও উদ্বুদ্ধ করনের পদ্ধতি থেকে। অর্থাৎ, মেহমানের সম্মান করা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমানের আলামত এবং আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমানের পরিপূর্ণতা। যে সব কর্ম দ্বারা মেহমানের সম্মান করা হয় যেমন: হাসি মুখ, সুন্দর কথা, তিনদিন খাওয়ানো। প্রথম দিন তার সাধ্য অনুযায়ী। আর বাকী দিন কোন প্রকার কৃত্রিমতা ছাড়া যা উপস্থিত থাকে তা দ্বারা যাতে তার ওপর এবং আত্মার ওপর বোঝা না হয়ে যায়। আর তিনদিন পর হবে সাদকা স্বরূপ, ইচ্ছা করলে করবে না হয় করবে না। আর তার বাণী: “সে যেন অবশ্যই মেহমানের পারিতোষিকসহ তার সম্মান করে। আর মেহমানদারি তিনদিন।” উলামাগণ পারিতোষিকের অর্থ সম্পর্কে বলেন, একদিন এক রাত মেহমানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া সম্ভাব্য কল্যাণকামি পদর্শন ও সৎ ব্যবহার করা। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন তাকে তাই খেতে দেবে যা তার জন্য সহজ হয়। তার সাধারণ খাদ্যের ওপর বাড়তি করতে হবে না। আর তিনদিন পর তা হবে সাদকাহ স্বরূপ ও হিতকামনা, যদি চায় করবে আর যদি না চায় করবে না। মুসলিমের বর্ণনায় বর্ণিত: “কোন মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের নিকট এতটা থাকা বৈধ নয়, যাতে সে তাকে গোনাহগার করে ফেলে”। এর অর্থ, মেহমানের জন্য তার নিকট তিনদিনের বেশি অবস্থান করা ঠিক হবে না যাতে তাকে গুনাহে ফেলে দেয়। কারণ, অনেক সময় সে লম্বা সময় অবস্থানের কারণে তার সমালোচনা করবে, তার থেকে এমন কিছু প্রকাশ পাবে যা তাকে কষ্ট দেয় অথবা তার প্রতি এমন ধারণা করবে যা অবৈধ। এ গুলো সবই তখন হয় যখন মেজবানের আকাংখা ছাড়া তিনদিনের বেশি অবস্থান করে। জানা থাকা দরকার যে, মেহমানের অবস্থা অনুযায়ী তার সম্মান করা বিভিন্ন হয়ে থাকে। কতক মানুষ আছে কাওমের সরদার এবং মুখপাত্র, তখন তার মেহমানদারি তার অবস্থান অনুযায়ী হবে। আবার কতক আছে মধ্যবৃত্ত তখন তার মেহমাদারি তার অবস্থান অনুযায়ী আবার কতক আছে নিম্ন তাকে তার অবস্থান অনুযায়ী।

التصنيفات

প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী আল্লাহর ওপর ঈমান, শেষ দিবসের ওপর ঈমান, প্রশংসিত চরিত্রসমূহ, যিয়ারত ও অনুমতি প্রার্থনার আদব