إعدادات العرض
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট যখন আরোহণ করার উদ্দেশ্যে বাহন আনা হলো তখন তিনি বাহনের পাদানীতে স্বীয় পা রেখে…
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট যখন আরোহণ করার উদ্দেশ্যে বাহন আনা হলো তখন তিনি বাহনের পাদানীতে স্বীয় পা রেখে ‘বিসমিল্লাহ’ বললেন।
আলী ইবন রাবী‘আহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আলী ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট হাযির ছিলাম। যখন তার নিকট আরোহণ করার উদ্দেশ্যে বাহন আনা হলো এবং যখন তিনি বাহনের পাদানীতে স্বীয় পা রাখলেন তখন ‘বিসমিল্লাহ’ বললেন। অতঃপর যখন তার পিঠে স্থির হয়ে সোজাভাবে বসলেন তখন বললেন, ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী সাখ্খারা লানা হা-যা অমা কুন্না লাহু মুকরিনীন। অইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবূন।’ অতঃপর তিনবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়লেন। তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ পড়লেন। অতঃপর পড়লেন, ‘সুবহানাকা ইন্নী যালামতু নাফ্সী ফাগফিরলী, ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।’ অতঃপর তিনি হাসলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম, তিনি তাই করলেন, যা আমি করলাম। অতঃপর তিনি হাসলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি হাসলেন কেন?’ তিনি বললেন, “তোমার মহান রব্ব তাঁর সেই বান্দার প্রতি আশ্চার্যান্বিত হন, যখন সে বলে, ‘ইগফিরলী যুনূবী’ (অর্থাৎ আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও।) সে জানে যে, আমি (আল্লাহ) ছাড়া পাপরাশি আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না।”
الترجمة
العربية Bosanski English Español فارسی Français Bahasa Indonesia Русский Tagalog Türkçe اردو 中文 हिन्दी Tiếng Việt සිංහල Kurdîالشرح
আলী ইবন রাবী‘আহ থেকে বর্ণিত, আর তিনি বিশিষ্ট তাবে‘ঈগণের একজন ছিলেন। তিনি বলেন, আমি আলী ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট হাযির ছিলাম। তখন তার আরোহণের উদ্দেশ্যে তাঁর নিকট তার বাহনটি নিয়ে আসা হলো। অভিধানে দাব্বাহ শব্দের অর্থ, যে সব জন্তু যমীনের উপরে বিচরণ করে। তারপর পরিভাষায় চতুষ্পদ জন্তুর ক্ষেত্রে এ শব্দটি ব্যবহার নির্ধারিত। যখন তিনি বাহনের পাদানীতে স্বীয় পা রাখলেন তখন (‘বিসমিল্লাহ’) বললেন। অর্থাৎ আল্লাহর নামে আরোহণ করলাম। অতঃপর যখন তার পিঠে স্থির হয়ে সোজাভাবে বসলেন তখন বললেন, ‘(আলহামদু লিল্লাহ।) অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য এ মহান নি‘আমতের ওপর। আর তা হলো, অপরিচিত পলায়নকারী জন্তুকে আমাদের অনুগত করে দেওয়া। আর তার খারাবী থেকে নিরাপদে আরোহণ করার ক্ষেত্রে তাকে আমাদের অনুগত করা। যেমনটি স্পষ্ট করলেন তার কথা দ্বারা (যিনি আমাদের জন্য এ আরোহণকে অনুগত করলেন) যাকে অনুগত করার কোনো ক্ষমতা আমাদের ছিল না। (অবশ্যই আমরা আমাদের রবের দিকে ফিরে যাবো।) অতঃপর অর্থাৎ তাকে যে নি‘আমত দান করেছে তার ওপর প্রশংসার পর তিনি তিনবার (‘আলহামদুলিল্লাহ’) পড়লেন। অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এমন প্রশংসা যা কোনো কিছুর সাথে সম্পৃক্ত নয়। একাধিকবার বলার মধ্যে আল্লাহ যে মহান তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আর বান্দা আল্লাহর যথাযথ সম্মান করতে সক্ষম নয়। তবে তার সক্ষমতা অনুযায়ী তার আনুগত্য করার প্রতি বান্দা নির্দেশিত। অতঃপর তিনবার ‘(আল্লাহু আকবার’) পড়লেন। এখানে বার বার বলা অধিক গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। (তারপর বলল, ‘সুবহানাকা) অর্থাৎ আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। (ইন্নী যালামতু নাফ্সী) অর্থাৎ, আমি আমার নিজের ওপর যুলুম করছি। তোমার হক পালন না করার কারণে এবং এত বড় মহান নি‘আমতের শুকরিয়া আদায়ের ক্ষেত্রে দুর্বলতা প্রত্যক্ষ করার কারণে। চাই তা অলসতার কারণে হোক বা অন্য যে কোন কারণেই হোক। (ফাগফিরলী) অর্থাৎ আমার গুনাহগুলোকে গোপন করুন, তার ওপর শাস্তি দেওয়ার জন্য পাকড়াও না করার মাধ্যমে। (ইন্নাহু লা য়্যাগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আন্তা) এতে আল্লাহর অনেক নি‘আমত প্রাপ্তি সত্ত্বেও নিজের ত্রুটি স্বীকার করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। (অতঃপর তিনি হাসলেন।) (তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো) ইবন রাবি‘আ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আমীরুল মুমিনীন! আপনি হাসলেন কেন?)’যেহেতু এমন কোনো আশ্চর্য বিষয় প্রকাশ পায় নি যাতে হাসি সৃষ্টি করে। তাই তিনি তার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। প্রশ্ন করার আগে তিনি তাকে সম্বোধন করলেন, যেমনটি কাউকে সম্বোধন করার শিষ্টাচার। (তিনি বললেন, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম, তিনি তাই করলেন, যা আমি করলাম।) তথা আরোহণ করলেন এবং বিভিন্ন জায়গায় যিকির করলেন। (অতঃপর তিনি হাসলেন। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি হাসলেন কেন?) (তিনি বললেন, “তোমার মহান প্রতিপালক আশ্চর্যান্বিত হন), আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর যখন ঐ কথাটি স্মরণ হলো, তখন তিনি তার অধিক শুকরীয়া জ্ঞাপনকে ওয়াজিব করলেন। ফলে তিনি তাকে সুসংবাদ দিলেন এবং হাসলেন। তার হাসি শুধু অনুকরণ ছিল না। কারণ, হাসি সাধারণত ইচ্ছাকৃত করা যায় না। যদিও কখনো সময় হাসির ভান করা যায়। (সেই বান্দার প্রতি) এটা সম্মান সূচক সম্পর্ক। (যখন সে জেনে বলে, ‘ইগফিরলী যুনূবী’ অর্থাৎ, আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দাও।) অর্থাৎ সে তা জেনে বলে, অমনোযোগী হয়ে নয় (আমি আল্লাহ ছাড়া পাপরাশি আর কেউ মাফ করতে পারে না।)