নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করে অযু না করেই সালাতের জন্য বের হয়ে গিয়েছিলেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করে অযু না করেই সালাতের জন্য বের হয়ে গিয়েছিলেন।

উরওয়া রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণনা করেন যে, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করে অযু না করেই সালাতে দাঁড়িয়েছেন।” বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আপনি ছাড়া আর কে? এ কথা শুনে তিনি হাসলেন।

[সহীহ] [এটি ইবন মাজাহ বর্ণনা করেছেন। - এটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। - এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন। - এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এ হাদীসে সংবাদ দিচ্ছেন যে, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করলেন, অতঃপর অযু না করেই সালাতের জন্য চলে গেলেন।” অতঃপর উরওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু, যিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে হাদীসটির বর্ণনাকারী, তিনি বিচক্ষণতার কারণে তা উপলব্ধি করলেন এবং তিনি বুঝতে পারলেন যে, হাদীসে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অস্পষ্ট স্ত্রী হলেন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা। তিনি যখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে এ কথা বললেন তখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা উরওয়াহ’র বুঝকে সমর্থন করে হাসলেন। “তিনি অযু করেননি”। এটিই হচ্ছে মূলনীতি: পুরুষ তার স্ত্রীকে স্পর্শ করলে বা চুম্বন করলে কখনো অযু ভঙ্গ হয় না; চাই সেটি কামভাবসহ হোক বা কামভাব ছাড়া হোক। কেননা মূল হলো অযু ও পবিত্রতা বহাল থাকা। অতএব, বিরোধহীন সঠিক দলীল ব্যতীত এ কথা বলা ঠিক নয় যে, স্ত্রীকে স্পর্শ করলে অযু ভঙ্গ হয়। এখানে নারী স্পর্শ করলে অযু ভঙ্গ হওয়ার কোনো দলীল নেই। তাই পবিত্রতা অবশিষ্ট থাকাই নীতি। আর আল্লাহ তা‘আলার বাণী “কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ করেছ” (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৩) এ আয়াতের সঠিক ব্যাখ্যা হলো স্ত্রী সহবাস করা। তাছাড়া অন্য কিরা‘আতে এসেছে “أو لمستم النساء” “কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ করো”। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ও অন্যান্য আলেমের মতে এই আয়াতের উদ্দেশ্য হলো সহবাস করা। এছাড়াও পুরুষ তার স্ত্রীকে অধিকাংশ সময়ই কামভাবের সাথেই চুম্বন করে থাকে। সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, কামভাবের সাথে পুরুষ তার স্ত্রীকে স্পর্শ করলে অযু ভঙ্গ হয় না; কিন্তু যদি এর সাথে কোনো কিছু বের হয় তবে অযু ভঙ্গ হয়ে যায়। তখন বের হওয়ার কারণে অযু ভঙ্গ হবে। দেখুন, মাজমু‘উ ফাতাওয়া, শাইখ বিন বায (১৭/২১৯); ফাতহু যিল জালালি ওয়াল ইকরাম (১/২৫৩-২৫৫)।

التصنيفات

অযু ভঙ্গের কারণসমূহ