“মানুষকে হাশরের মাঠে উঠানো হবে নগ্ন পদ, নগ্ন দেহ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়”

“মানুষকে হাশরের মাঠে উঠানো হবে নগ্ন পদ, নগ্ন দেহ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়”

উম্মুল মুমেনীন ‘আয়িশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “মানুষকে হাশরের মাঠে উঠানো হবে নগ্ন পদ, নগ্ন দেহ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়”। ’আয়িশাহ বলেন, আমি তখন বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তাহলে পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের দিকে তাকাবে। তিনি বললেন: “হে আয়েশা, একে অপরের দিকে দেখার চেয়ে তখনকার অবস্থা হবে অতীব ভয়াবহ”।

[সহীহ] [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন কী ঘটবে তার কিছু বর্ণনা দিয়েছেন এবং মানুষকে কবর থেকে উঠানোর পর বিচারের জন্য একত্রিত করা হবে এবং তাদের অবস্থা হবে এই যে তারা জুতা ছাড়াই খালি পায়ে থাকবে এবং তাদের দেহ থাকবে পোশাক বা আবরণ ছাড়াই নগ্ন, খৎনাবিহীন যেমনটি তাদের মায়েরা তাদের জন্মের দিন প্রসব করেছিল। মুমিনদের মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এই কথা শুনে অবাক হয়ে বললেন: হে আল্লাহর রাসূল, পুরুষ ও মহিলা একে অপরের দিকে তাকাবে না?! নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ব্যাখ্যা করলেন যে, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পরের পরিস্থিতি এবং হাশরের ময়দানে এমন ভয়াবহতা রয়েছে যা মানুষের চিন্তা ও দৃষ্টিকে গোপনাঙ্গের দিকে তাকানোর ক্ষমতাকে ছিনিয়ে নেবে।

فوائد الحديث

কিয়ামতের ভয়াবহতার একটি বিবরণ এ হাদীসে পাওয়া যায়। আর সেই দিন কোন কিছুই একজন ব্যক্তিকে তার জবাবদিহিতা এবং কর্ম থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।

এটা নিশ্চিত যে একজন ব্যক্তি গাফিল হওয়া ব্যতীত পাপ করে না; যদি সে যার নাফরমানি করে তার মহত্ত্ব বা শাস্তি স্মরণ করে, তাহলে সে চোখের পলকের জন্যও তাকে স্মরণ করত, তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে এবং তার যথাযথ উপাসনা করতে অবহেলা করত না। এজন্যই তুমি দেখতে পাবে যে, হাশরের লোকেরা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে না, নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নারীদের অধিক লজ্জাশীলতা লক্ষনীয়। এই যে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা যখন শুনলেন যে পুরুষ ও মহিলা সকলকে উলঙ্গ করে একত্রিত করা হবে, তখন তিনি লজ্জা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।

আস-সিন্দি বলেন: সবাই তার নিজের কাজে ব্যস্ত এবং তার ভাইয়ের অবস্থা সম্পর্কে জানবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “সেদিন তাদের প্রত্যেকের হবে এমন গুরুতর অবস্থা যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত রাখবে”। [আবাসা: ৩৭], তাই কেউ অন্যের লজ্জার দিকে তাকাবে না।

খৎনা: পুরুষদের ক্ষেত্রে হল পেশাবের রাস্তার মাথা ঢেকে থাকা অগ্রভাগের চামড়া কেটে ফেলা। মহিলাদের ক্ষেত্রে হল মোরগের ঠোটের মতো পুরুষাঙ্গ অনুপ্রবেশের স্থানের উপরে অগ্রভাগের চামড়া কাটা।

التصنيفات

আখেরাতের জীবন