إعدادات العرض
যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাবার ইচ্ছা করতেন, তখন স্বীয় ডান হাতটি গালের নিচে স্থাপন…
যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাবার ইচ্ছা করতেন, তখন স্বীয় ডান হাতটি গালের নিচে স্থাপন করতেন, তারপর এই দো‘আ পাঠ করতেন। “আল্লাহুম্মা ক্বিনী আযাবাকা য়্যাওমা তাব্আসু ইবাদাকা।
হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান ও হাফসা বিনতে উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমাবার ইচ্ছা করতেন, তখন স্বীয় ডান হাতটি গালের নিচে স্থাপন করতেন, তারপর এই দো‘আ পাঠ করতেন। “আল্লাহুম্মা ক্বিনী আযাবাকা য়্যাওমা তাব্আসু ইবাদাকা।” অর্থাৎ হে আল্লাহ! সেই দিনের আযাব থেকে আমাকে নিষ্কৃতি দাও, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদের পুনরুত্থান ঘটাবে। অন্য বর্ণনায় আছে যে, তিনি ঐ দো‘আ তিনবার পড়তেন।
[সহীহ] [এটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন। - এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন। - এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।]
الترجمة
العربية Bosanski English Español فارسی Français Bahasa Indonesia Русский Tagalog Türkçe اردو 中文 हिन्दी Hausa Kurdîالشرح
এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফে‘লী (কর্ম সংক্রান্ত) এবং কাওলী (কথা সংক্রান্ত) সুন্নাতকে শামিল করে, আর উভয় সুন্নাতই হলো ঘুমের সুন্নাত। অতএব, ফে‘লী সুন্নাত হলো: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘুমের পদ্ধতি। হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহা আমাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘুমের পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “যখন তিনি ঘুমাবার ইচ্ছা করতেন, তখন স্বীয় ডান হাতটি গালের নিচে স্থাপন করতেন।” এতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডান পার্শ্বে কাত হয়ে ঘুমানোর দলীল বিদ্যমান। কেননা যখন তিনি স্বীয় ডান হাতটি গালের নিচে স্থাপন করতেন তখন নিসন্দেহে তিনি ডান পার্শ্ব হয়ে ঘুম যেতেন। আর অন্যান্য বর্ণনা একথাই প্রমাণ করে, কিন্তু এ হাদীসটি গালের নিচে হাত রাখা অংশটি বৃদ্ধি করেছে। সুতরাং যে ব্যক্তি এরূপ করতে সক্ষম সে তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণার্থে আঞ্জাম দেবে। আর যে ব্যক্তি শুধু ডান পার্শ্ব হয়ে ঘুমাবে তা তার জন্য যতেষ্ট হবে। আর তার প্রমাণ হচ্ছে যে, কতক বর্ণনা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ডান পার্শ্বে ঘুমের কথাই বলেছে, তাতে গালের নিচে হাত রাখার কথা উল্লেখ নেই। হতে পারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো এভাবে ঘুমিয়েছেন, কতক সাহাবীর বর্ণনা করা এবং কতক সাহাবীর বর্ণনা না করা সে কথার ইঙ্গিত বহন করে। কিন্তু সকল বর্ণনা ডান পার্শ্বে ঘুমের ব্যাপারে একমত। সুতরাং বুঝা গেল যে, এটি নির্ধারিত সুন্নাত। অতঃপর বলেন, “সুম্মা” শব্দটি ক্রম অনুসরণ ও বিলম্বে করাকে বুঝায়। যে ব্যক্তি ঘুমাতে চায় এটিই তার জন্য উপযোগী। তিনি প্রথমে ডান পার্শ্বে শয়ন করতেন এবং তাঁর ডান হাতকে ডান গালের উপর রাখতন, এরপর তিনি (উল্লিখিত) যিকিরগুলো পড়তেন। শয়নের সাথে সাথে মানুষের জন্য এ যিকিরগুলো বলা জরুরি নয়, কেননা হাদীসে যে “সুম্মা” শব্দ এসেছে এটি একটির বিরতির পর অন্যটি করার ওপর প্রমাণ বহন করে। অতএব, যদি ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে কথা বলার পর এই যিকিরগুলো বলে তাহলে কোনো দোষ নেই।” “হে আল্লাহ! সেই দিনের আযাব থেকে আমাকে নিষ্কৃতি দাও, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদের পুনরুত্থান ঘটাবে।” এখানে ‘ইসমে আজম’ দ্বারা আহ্বান করা হয়েছে; যেমনটি কেউ কেউ বলেছেন। আর এটি অধিকাংশ আলেমের বক্তব্য। “আমাকে নিষ্কৃতি দাও” অর্থাৎ আমাকে পুনরুত্থান দিবসের আযাব থেকে রক্ষা কর। এবং “কিনি” শব্দটি আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ ও দয়ার মাধ্যমে রক্ষা করা অথবা বান্দার যেন এমন কাজ করার তাওফীক হয় যা জান্নাত ওয়াজিব করে দেয় এবং আযাব থেকে রক্ষা করে অথবা উভয়টিই অন্তর্ভুক্ত করে। এটিই অধিক গ্রহণযোগ্য অভিমত। কেননা বাক্যের ব্যাপক অর্থই মূল, দলীল ছাড়া ব্যাপক অর্থ ত্যাগ করে বিশেষ অর্থ করা যাবে না। আর তুমি দেখছ যে, শব্দটি উভয় অর্থকে অন্তর্ভুক্ত করে। তাঁর বাণী “আপনার আযাব” এটি কিয়ামত দিবসের সকল প্রকার আযাবকে অন্তর্ভুক্ত করে। সর্বাগ্রে এতে জাহান্নামের আগুন অন্তর্ভুক্ত হয়। এটি ঐ দিন যে দিনকে আল্লাহ তা‘আলা ক্বারি‘আহ, সাক্কাহ, তাম্মাহ, কিয়ামাহ...বলে নামকরণ করেছেন। এটি কিয়ামতের ভয়াবহতা ও কাঠিন হওয়ার প্রমাণ বহন করে। এজন্য এখানে সেই দিনের আযাব থেকে আল্লাহ তা‘আলার কাছে মুক্তি কামনা করা উচৎ। তাঁর বাণী “আপনার আযাব” সে দিনের ভয়াবহতা, কাঠিন্যতা এবং বড়ত্ব বুঝানোর জন্যে এটিকে আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এতেও তাফয়ীতের অর্থ রয়েছে। যেহেতু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বান্দার ওপর ও আযাবের ওপর চাপ প্রয়োগকারী মালিকের ন্যায় কর্তৃত্বকারী। আর শব্দটি দু’টি অর্থকেই শামিল করে। এখানে মৃত্যুর ভাই ঘুম অথবা ছোট মৃত্যুর মাঝে ও মৃত্যুরপর পুনরুত্থানের মাঝে সুক্ষ্ন সমন্বয় লক্ষ্য করুন। সুতরাং হাদীসে একটি সূক্ষ্ম সম্পর্ক রয়েছে যা বস্তু ও তার অনুসারীকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শব্দ ব্যবহারের মহত্ব ও সৌন্দর্য।التصنيفات
ঘুম ও জাগ্রত হওয়ার আদব