إعدادات العرض
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তিখারা শিখাতেন, যেভাবে তিনি কুরআনের…
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তিখারা শিখাতেন, যেভাবে তিনি কুরআনের সূরা শেখাতেন।
জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তিখারা শিখাতেন, যেভাবে তিনি কুরআনের সূরা শেখাতেন। তিনি বলতেন: “যখন তোমাদের কারো কোন বিশেষ কাজ করার ইচ্ছা হয়, তখন সে যেন দু’ রাকআত সালাত পড়ে এই দুআ বলে: অর্থ, “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার নিকট আপনার ইলমের উসিলায় কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আপনার কুদরতের উসিলায় শক্তি প্রার্থনা করছি এবং আপনার বিরাট অনুগ্রহ থেকে ভিক্ষা যাচনা করছি। কেননা, আপনি শক্তি রাখেন, আমি শক্তি রাখি না। আপনি জানেন, আমি জানি না এবং আপনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। হে আল্লাহ! যদি আপনি জানেন যে, এই কাজটি আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের শেষ পরিণামে ভালো, তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন এবং তা সহজ করে দিন। অতঃপর তাতে আমার জন্য বরকত দান করুন। আর যদি আপনি জানেন যে, এই কাজটি আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের শেষ পরিণামে মন্দ, তাহলে তা আমার নিকট থেকে তা ফিরিয়ে নিন এবং আমাকে এর নিকট থেকে সরিয়ে দিন। আর যেখানেই কল্যাণ রয়েছে, তা আমার জন্য বাস্তবায়িত করুন, অতঃপর তাতে আমার মনকে পরিতুষ্ট করে দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “সে তার প্রয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ করবে।”
الترجمة
العربية Bosanski English Español فارسی Bahasa Indonesia Tagalog Türkçe اردو 中文 हिन्दी Français ئۇيغۇرچە Kurdî Русский Tiếng Việt অসমীয়া Nederlands Kiswahili Hausa සිංහල ગુજરાતી Magyar ქართული Română Moore Português ไทย తెలుగు मराठी دری አማርኛ Malagasyالشرح
যখন কোনো মুসলিম এমন কোনো কাজ করার ইচ্ছা করে, যার মধ্যে সঠিক পথ জানা নেই, তখন তার জন্য ইস্তিখারা নামায পড়ার বিধান রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এই নামায শিক্ষা দিতেন, যেমন তিনি তাদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি তাদেরকে দু’রাকআত নফল নামায পড়তে বলতেন, অতঃপর আল্লাহর কাছে এই বলে দোয়া করতে বলতেন: (اللهم إني أستخيرك) «হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ইস্তিখারা করছি»—দুটি কাজের মধ্যে উত্তমটির জন্য সঠিক পথনির্দেশনা চেয়ে। (بعلمك) “আমি আপনার কাছে আপনার অসীম জ্ঞানের উসিলায় প্রার্থনা করছি”, যা সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে। (وأستقدرك بقدرتك) “আমি আপনার কাছে আপনার কুদতের উসিলায় প্রার্থনা করছি”, যাতে আপনি আমাকে সামর্থ্য দান করেন, কেননা আমার কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই, আপনার সাহায্য ছাড়া। (وأسألك من فضلك) আমি আপনার মহান অনুগ্রহ ও দয়া চাই, যা ব্যাপক ও বিশাল। আপনার দান একান্তই আপনার অনুগ্রহ, কারো প্রতি আপনার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। (فإنك تقدر) «নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান», আর আমি দুর্বল ও অসহায়, (ولا أقدر) «আমি কোনো কিছুই করতে সক্ষম নই» আপনার সাহায্য ছাড়া। (أنت تعلم) «আপনি জানেন» আপনার সর্বব্যাপী জ্ঞানের মাধ্যমে, যা প্রকাশ্য ও গোপন সবকিছুকে ঘিরে আছে, ভালো ও মন্দ সবকিছুকে। (لا أعلم) «আমি জানি না» আপনার সাহায্য ও হিদায়াত ছাড়া। (وأنت علام الغيوب) «আপনি গায়ে সম্পর্কে জ্ঞানী», আপনার জ্ঞান পরিপূর্ণ এবং ক্ষমতা সর্বব্যাপী, আপনার ইচ্ছা ছাড়া অন্য কারো কোনো ক্ষমতা নেই। তারপর মুসলিম তার রবের কাছে দোয়া করবে এবং তার প্রয়োজন উল্লেখ করে বলবে: «হে আল্লাহ!» আমি আমার বিষয়টি আপনার উপর সোপর্দ করছি। «যদি আপনি জানেন» আপনার জ্ঞানে যে, এই বিষয়টি—«এবং তার প্রয়োজন উল্লেখ করে» যেমন এই বাড়িটি কেনা, বা এই গাড়িটি কেনা, বা এই মহিলাকে বিয়ে করা ইত্যাদি... যদি আপনার জ্ঞানে এই বিষয়টি আগে থেকেই থাকে যে এতে আমার দ্বীনের জন্য কল্যাণ রয়েছে, যা আমার জীবনের সুরক্ষা, আমার পাথিব জীবনে এবং আমার বিষয়ের পরিণতিতে, অথবা বলেছেন, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতে কল্যাণ রয়েছে, তবে তা আমার জন্য নির্ধারণ করুন, সহজ করুন এবং তা আমার জন্য সম্পন্ন করুন। আর যদি আপনি জানেন, হে আল্লাহ, এই বিষয়টি আমার দ্বীন, জীবন এবং পরিণতিতে অকল্যাণকর, অথবা আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতে ক্ষতিকর, তবে তা আমার থেকে দূরে রাখুন এবং আমাকে তা থেকে দূরে রাখুন। আমার জন্য কল্যাণ যেখানেই হোক সেখানে নির্ধারণ করুন এবং আমাকে তা দিয়ে সন্তুষ্ট করুন, তা আমি পছন্দ করি বা না করিفوائد الحديث
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এই নামায শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন; কারণ এতে রয়েছে বিশাল উপকারিতা ও কল্যাণ।
এস্তেখারার প্রতি উৎসাহ এবং এস্তেখারার পর মাসনুন দোয়া পড়ার প্রতি উৎসাহ।
ইস্তিখারা মুস্তাহাব এমন সব বৈধ বিষয়ে, যেখানে দ্বিধা বা অনিশ্চয়তা থাকে। এটি ওয়াজিব বা মুস্তাহাব কাজের জন্য প্রযোজ্য নয়; কারণ সেগুলো করার ব্যাপারে মূল নীতি হলো সেগুলো সম্পাদন করা। তবে সেগুলোর সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে ইস্তিখারা করা যেতে পারে, যেমন উমরা বা হজ্জের সময় সঙ্গী নির্বাচন করা।
ওয়াজিব ও মুস্তাহব কাজের ব্যাপারে ইস্তিখারা করা হয় না, কারণ সেগুলো করা আবশ্যক বা উত্তম। অনুরূপভাবে, হারাম ও মাকরূহ কাজের ব্যাপারে ইস্তিখারা করা হয় না, কারণ সেগুলো ত্যাগ করা আবশ্যক বা উত্তম।
দোয়া সালাতের পর পড়া উচিত; কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "ثم ليقل..."। তবে যদি সালামের আগে বলা হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
বান্দার উপর কর্তব্য হলো সব বিষয় আল্লাহর কাছে সোপর্দ করা এবং নিজের ক্ষমতা ও শক্তির দাবি থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত থাকা। কারণ, বান্দার কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া।