হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি।” অতঃপর হে মুআয আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের…

হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি।” অতঃপর হে মুআয আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে: (অর্থ) “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকির, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য কর।” দোআটি পড়া অবশ্যই ত্যাগ করবে না।

মুআয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, “হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি। অতঃপর হে মুআয আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে: (অর্থ) “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকির, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য কর।” দোআটি পড়া অবশ্যই ত্যাগ করবে না”।

[সহীহ] [এটি নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। - এটি আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন। - এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন। - এটি মালেক বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

মু‘আয এর হাদীস ইসলামী মহব্বতের একটি নতুন দিগন্ত তুলে ধরল যার ফলাফল হলো কল্যাণের প্রতি উপদেশ ও দিক নির্দেশনা প্রদান করা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আযকে বলেছেন, “আমি তোমাকে ভালোবাসি”। আর তিনি শপথ করেন, “আল্লাহর শপথ আমি তোমাকে ভালোবাসি”। এটি মু‘আয ইবনে জাবালের জন্য মহান পাওনা যে, আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শপথ করে বললেন, নিশ্চয় তিনি তাকে মহব্বত করেন। আর প্রেমিক তার প্রেমিকের জন্য ঐ জিনিষটি সংগ্রহ করে রাখেন যা তার জন্য কল্যাণকর। আর তিনি তাকে এ কথা এ জন্য বলেছেন যে, যাতে তাকে পরবর্তীতে যা দেওয়া হবে তার জন্য সে প্রস্তুত থাকে। কারণ, তিনি মহব্বত থেকে তা তাকে পেশ করবেন। তারপর তিনি তাকে বলেন, “প্রত্যেক সালাত” অর্থাৎ ফরয সালাত “এর পর এ কথাগুলো বলা ছাড়বে না। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকির, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য কর”। আর এখানে সালাতের শেষে অর্থ, শেষাংশে সালামের পূর্বে। কোন কোন বর্ণনায় এমনই এসেছে যে, সালামের পূর্বে তিনি তা বলতেন। এটিই সঠিক। যেমনটি নির্ধারণ করা আছে যে, শেষের দ্বারা যদি দো‘আ উদ্দেশ্য হয়, তবে তা হবে সালামের পূর্বে। আর যদি যিকির হয় তবে তা হবে সালামের পর। এ নিয়মের প্রমাণ হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদের হাদীসে তাশাহহুদের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, তারপর তুমি তোমার ইচ্ছা মতো বা তোমার পছন্দ মতো বা যা তোমার ভালো লাগে এমন দো‘আ নির্বাচন করো। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যখন তোমরা সালাত আদায় কর, তোমরা দাঁড়িয়ে, বসে এবং কাত হয়ে শুয়ে আল্লাহর যিকির করো। আর তার বাণী: তুমি আমাকে তোমার যিকিরের ওপর সাহায্য কর। অর্থাৎ, যত কথা আল্লাহর নিকট পৌঁছায় এবং যত জিনিস আল্লাহর নিকট পৌঁছায় তা অবশ্যই আল্লাহর যিকির ও তার শুকরিয়ার অংশ। অর্থাৎ নি‘আমতের শুকরিয়া ও আযাবের প্রতিকার। আল্লাহর কতই নিআমত রয়েছে তার মাখলুকের ওপর আর কত আযাব রয়েছে যা তাদের থেকে দূর করে দেওয়া হয়েছে। তাই এর ওপর সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে।

التصنيفات

সালাতের যিকিরসমূহ