“আমলসমূহ ছয় প্রকার ও মানুষ চার প্রকার। দুটি আবশ্যককারী কাজ এবং একটি এমন কাজ যা অপরটির সমান। একটি ভালোকাজ তার…

“আমলসমূহ ছয় প্রকার ও মানুষ চার প্রকার। দুটি আবশ্যককারী কাজ এবং একটি এমন কাজ যা অপরটির সমান। একটি ভালোকাজ তার দশগুণ সমপরিমাণ আবার একটি ভালোকাজ সাতশত গুণ

খুরাইম ইবনু ফাতিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমলসমূহ ছয় প্রকার ও মানুষ চার প্রকার। দুটি আবশ্যককারী কাজ এবং একটি এমন কাজ যা অপরটির সমান। একটি ভালোকাজ তার দশগুণ সমপরিমাণ আবার একটি ভালোকাজ সাতশত গুণ। আবশ্যককারী কাজ দুটি হচ্ছে: যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শিরক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তির আল্লাহর সাথে কোন কিছু শিরক করে মারা যাবে, সে (জাহান্নামের) আগুনে প্রবেশ করবে। একটি অপরটির সমান কাজ হচ্ছে: যে ব্যক্তি কোন ভালোকাজের সংকল্প করে, এমনকি তার অন্তর তা অনুভব করে এবং আল্লাহ তা‘আলা তার থেকে এ নিয়তের ব্যাপারে অবগত থাকেন, তার জন্য একটি ভালোকাজ লিপিবদ্ধ করা হয়। আর যে ব্যক্তি কোন মন্দ কাজ করে, তার উপরে একটি গুনাহ লেখা হয়। আর যে ব্যক্তি কোন ভালোকাজ করে, তার জন্য এর দশগুণ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু দান করে, তার জন্য সাতশতগুণ ‍বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। আর মানুষ (চার প্রকার): ১) দুনিয়ায় স্বচ্ছল কিন্তু আখিরাতে অস্বচ্ছল, ২) দুনিয়াতে অস্বচ্ছল কিন্তু আখিরাতে স্বচ্ছল, ৩) দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই অস্বচ্ছল এবং ৪) দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই স্বচ্ছল।”

[সহীহ] [এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, ‘আমল হচ্ছে মোট ছয় ধরণের আর মানুষ হচ্ছে চার শ্রেণির। ছয় ধরণের আমল হচ্ছে: প্রথমত: যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শিরক না করে মারা যাবে, তার জন্য জান্নাত আবশ্যক হয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত: যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শিরক করে মারা যাবে, তার জন্য চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের আগুন আবশ্যক হয়ে যাবে। আর এ দুটি হলো আবশ্যককারী। তৃতীয়ত: নিয়ত সংক্রান্ত ভালোকাজ, যে ব্যক্তি কোন ভালোকাজের নিয়ত করে, আর সে তার নিয়তের ক্ষেত্রে সত্যবাদীও হয়, এমনকি তার অন্তরও এটি অনুভব করে এবং আল্লাহ তা‘আলাও তার এ নিয়ত সম্পর্কে জানেন। কিন্ত তারপরে তার সামনে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, সে আর উক্ত কাজটি সম্পাদন করতে পারে না, তাহলে এমতাবস্থায় তার জন্য পূর্ণ একটি ভালোকাজ লিখে দেয়া হয়। চতুর্থত: কৃত মন্দকাজ, যে ব্যক্তি কোন একটি মন্দকাজ করে, তার জন্য একটি মন্দকাজই লেখা হয়। আর এরা হচ্ছে: সমান, সমান কোন প্রকার বৃদ্ধি করা ছাড়া। পঞ্চমত: একটি ভালোকাজ, যা তার দশগুণ হয়ে থাকে। এটি হচ্ছে যে ব্যক্তি নিয়ত করে এবং সে অনুযায়ী আমলটি সম্পাদন করে; এতে তার দশটি ভালোকাজ লিখে দেয়া হয়। ষষ্ঠত: সাতশত গুণ বর্ধিত ভালোকাজ। এটি হচ্ছে: যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু দান করে, তার জন্য এ ভালোকাজটি সাতশত গুণ বৃদ্ধি করে লেখা হয়। এটি নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলার বান্দার উপরে তাঁর অনুগ্রহ ও করুণা। আর চার শ্রেণির মানুষ হচ্ছে: প্রথম: যাকে দুনিয়াতে রিযিকের প্রাচুর্যতা ও নি‘আমাত দান করা হয়েছে, সে এখানে যা চায় সব কিছুই পায়, তবে আখিরাতে সে সংকটে পতিত হবে। আর তার অবস্থান হবে জাহান্নামে, সে হচ্ছে মূলত: ধনী কাফির। দ্বিতীয়: যার উপরে দুনিয়ার রিযিকের সংকীর্ণতা রয়েছে, কিন্তু আখিরাতে সে প্রাচুর্যতা পাবে আর তার আবাস হবে জান্নাত, সে হচ্ছে: দরিদ্র মুমিন। তৃতীয়: যার উপরে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়টিই সংকীর্ণ, সে হচ্ছে: দরিদ্র কাফির। চতুর্থ: যে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই প্রাচুর্যতা পাবে, সে হচ্ছে: ধনী মুমিন।

فوائد الحديث

বান্দার উপরে আল্লাহ তা‘আলার বড় করুণা ও ভালোকাজকে বাড়িয়ে দেয়ার বর্ণনা।

আল্লাহর ন্যায়পরায়নতা ও অনুগ্রহ: যখন আমরা কোন একটি মন্দকাজ করি, তখন ন্যায়বিচার হিসেবে তিনি একটি মন্দকাজের শাস্তি দেন।

আল্লাহর সাথে শিরক করার ভয়াবহতা, তাতে রয়েছে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়া।

আল্লাহর পথে ব্যয় করার ফযীলতের বর্ণনা।

আল্লাহর পথে কোন কিছু ব্যয় করলে তা বহুগুণে বর্ধিত হয়, যা শুরু হয় সাতশত গুণ থেকে; কেননা এতে করে আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত করার ওপর সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।

মানুষের বিভিন্নতা ও তাদের মধ্যকার শ্রেণির বর্ণনা।

দুনিয়াতে মুমিন এবং কাফির উভয় ধরণের মানুষকে প্রাচুর্যতা প্রদান করা হলেও আখিরাতে মুমিন ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রাচুর্যতা দেয়া হবে না।

التصنيفات

তাওহীদের ফযীলত, অন্তরের আমলের ফযীলত, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমলের ফযীলত, নফল সাদকা