সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে (শোকের সময়) গালে আঘাত করে, বুকের কাপড় ছিঁড়ে এবং জাহেলিয়াতের ডাকের ন্যায় ডাক ছাড়ে।

সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে (শোকের সময়) গালে আঘাত করে, বুকের কাপড় ছিঁড়ে এবং জাহেলিয়াতের ডাকের ন্যায় ডাক ছাড়ে।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে মারফূ‘ হিসেবে বর্ণিত: “সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে (শোকের সময়) গালে আঘাত করে, বুকের কাপড় ছিঁড়ে এবং জাহেলিয়াতের ডাকের ন্যায় ডাক ছাড়ে।”

[সহীহ] [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

الشرح

আল্লাহ যা নিয়ে যান এবং যা দান করেন সবই তার জন্য। এরই মধ্যে পরিপূর্ণ হিকমত ও নির্ভুল পরিচালনা নিহিত। আর যে এর বিরোধিতা করে ও অমান্য করে সে আল্লাহর ফায়সালা এবং ক্বদরের ওপর আপত্তি করল যা কেবলই কল্যাণ, প্রজ্ঞা এবং ইনসাফ ও শৃংখলার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে আল্লাহর ফায়সালায় অসন্তুষ্ট হয় এবং হায়হুতাশ করে সে তার পছন্দনীয় তরীকা এবং মজবুত সুন্নাত থেকে বিচ্যুত। কারণ, সে রাস্তা হারিয়ে তাদের দিকে চলে গেল যারা কোন অকল্যাণে হায় হুতাশ ও চিল্লাপাল্লা করে। কারণ, তারা কেবল এ দুনিয়ার জীবনের সাথেই সম্পৃক্ত। ফলে তারা বিপদে ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে আল্লাহর সাওয়াব ও তার সন্তুষ্টি আশা করে না। তিনি তাদের থেকে দায় মুক্ত যাদের ঈমান দুর্বল ও যারা মুসিবত সহ্য করতে পারল না, ফলে জাহিলি আচরণকে জীবিত করার স্বার্থে তা তাদেরকে মাতম ও হায় হায় চিৎকারজনিত অসন্তুষ্টজনক অন্তর ও কথার দিকে নিয়ে গেল। অথবা অসন্তুষ্টজনক কর্মের দিকে নিয়ে গেল যেমন বুকের কাপড় ছিলে ফেলা, গালে আঘাত করা। বস্তুত তারাই আল্লাহর ওলী যাদেরকে কোন মুসীবত স্পর্শ করলে তারা আল্লাহর ফায়সালাকে মেনে নেয় ও বলে, “নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য আর আমরা তার দিকে ফিরে যাবো। তাদের ওপর রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে রহমত আর তাঁরাই হলো হিদায়াতপ্রাপ্ত”। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব হলো, একজন মুসলিম পাপ করার কারণে ইসলাম থেকে বের হয় না, যদিও সেটা বড় পাপ হয় যেমন কাউকে বিনা অপরাধে হত্যা করা। অনেক বিশুদ্ধ নস রয়েছে যেগুলোর বাহ্যিক অর্থ দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, কোন কোন কবীরা গুনাহ করার কারণে একজন মুসলিম ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় যেমন এ হাদীস: “সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে গালে আঘাত করে ও বুকের কাপড় ছিড়ে ফেলে”। এ সব নসের সুন্দর ব্যাখ্যা বলেছেন শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ। তিনি বলেন, ঈমান দুই প্রকার। এক—যা জাহান্নামে প্রবেশকে বাধা দেয়। দুই—যা প্রবেশে বাঁধা দেয় না তবে চিরস্থায়ী হতে বাঁধা দেয়। সুতরাং যার ঈমান পরিপূর্ণ হয় এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তরীকা এবং পরিপূর্ণ আদর্শের ওপর চলে তাকেই তার ঈমান জাহান্নামে প্রবেশ বাধা দিবে। তিনি রহ. বলেন, বস্তর জন্য রয়েছে কতক শর্ত এবং কতক বাধা। তার উদাহরণ কোন আমলের সাথে যদি কোনো শাস্তিকে নির্ধারণ করা হয়, তাহলে সে আমল সে শাস্তিকে অবধারিত করবে যদি কোনো বাধা না থাকে। আর বড় বাধা হচ্ছে ইমান যা ব্যক্তিকে জাহান্নামে স্থায়ী হতে বাঁধা দেয়।

التصنيفات

জাহেলী যুগের বিষয়াদি