রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:…

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:@ যে আমার কোনো অলীর সাথে শত্রুতা করবে, আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছি। আর আমি বান্দার উপর যা ফরয করেছি তার চেয়ে প্রিয় কোনো জিনিস নেই যার দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করবে।* আর বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করতে থাকে, এক সময় আমি তাকে মহব্বত করি। আর আমি যখন তাকে মহব্বত করি, আমি তার কানে পরিণত হই, যার দ্বারা সে শ্রবণ করে এবং তার চোখে পরিণত হই, যার দ্বারা সে দেখে এবং তার হাতে পরিণত হই যার দ্বারা সে স্পর্শ করে এবং তার পায়ে পরিণত হই, যার দ্বারা সে হাঁটে, আর যদি সে আমার নিকট প্রশ্ন করে, আমি অবশ্যই তাকে দিব, আর যদি আমার নিকট পানাহ চায়, আমি অবশ্যই তাকে পানাহ দিব, আমি যা করতে চাই সেটা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যেরূপ দ্বিধা করি মুমিনের নফসকে গ্রহণ করতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে কষ্ট দিতে অপছন্দ করি।”

আবূ হুরাইরাহ রদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: যে আমার কোনো অলীর সাথে শত্রুতা করবে, আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছি। আর আমি বান্দার উপর যা ফরয করেছি তার চেয়ে প্রিয় কোনো জিনিস নেই যার দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করবে। আর বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন করতে থাকে, এক সময় আমি তাকে মহব্বত করি। আর আমি যখন তাকে মহব্বত করি, আমি তার কানে পরিণত হই, যার দ্বারা সে শ্রবণ করে এবং তার চোখে পরিণত হই, যার দ্বারা সে দেখে এবং তার হাতে পরিণত হই যার দ্বারা সে স্পর্শ করে এবং তার পায়ে পরিণত হই, যার দ্বারা সে হাঁটে, আর যদি সে আমার নিকট প্রশ্ন করে, আমি অবশ্যই তাকে দিব, আর যদি আমার নিকট পানাহ চায়, আমি অবশ্যই তাকে পানাহ দিব, আমি যা করতে চাই সেটা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যেরূপ দ্বিধা করি মুমিনের নফসকে গ্রহণ করতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে কষ্ট দিতে অপছন্দ করি।”

[সহীহ] [এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলার বাণী বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার কোনো অলীকে কষ্ট দেয়, তাকে রাগান্বিত করে বা তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, আমি তাকে সতর্ক করছি এবং তার সাথে শত্রুতা ঘোষণা করছি। অলী হলো সেই মুমিন ব্যক্তি, যে তাকওয়া অবলম্বন করে। বান্দার ঈমান ও তাকওয়ার পরিমাণ অনুযায়ী সে আল্লাহর অলী হয় বা তাঁর বন্ধুত্ব লাভ করে। মুসলিম তার রবের নিকটবর্তী হওয়ার জন্য ফরয ইবাদতগুলো পালন করা এবং হারাম কাজগুলো ত্যাগ করার চেয়ে বেশি প্রিয় কোনো আমল নেই। মুসলিম ফরয ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে থাকে, এমনকি এর মাধ্যমে সে আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করে। যখন আল্লাহ কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন তিনি তার চারটি অঙ্গকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন: তিনি তার কানকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, যাতে সে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক কথা শোনে। তিনি তার চোখকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, যাতে সে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক জিনিস দেখে। তিনি তার হাতকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, যাতে সে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক কাজ করে। তিনি তার পা কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, যাতে সে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হাঁটে এবং ভালো কাজের দিকে অগ্রসর হয়। এছাড়াও, যদি সে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, তবে আল্লাহ তাকে তা দান করেন। তার দুআ কবুল হয়। আর যদি সে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং তাঁর কাছে সুরক্ষা চায়, তবে আল্লাহ তাকে আশ্রয় দেন এবং যা সে ভয় করে তা থেকে তাকে রক্ষা করেন। এরপর আল্লাহ তাআলা বলেছেন: "আমি কোনো কাজ করতে ততটা দ্বিধান্বিত হই না, মুমিনের প্রাণ কব্জ করতে আমি যতটা দ্বিধান্বিত হই, তার প্রতি দয়াবশত :।" কারণ মুমিন মৃত্যুকে অপছন্দ করে, যাতে ব্যথা রয়েছে। আর আল্লাহ মুমিনের কষ্টকে অপছন্দ করেন।

فوائد الحديث

এই হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রবের কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন। এটি হাদীসে কুদসী বা ইলাহী হাদীস নামে পরিচিত। এর শব্দ ও অর্থ আল্লাহর কাছ থেকে, তবে এটি কুরআনের মতো নয়, যার বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেমন: তিলাওয়াতের মাধ্যমে ইবাদত, পবিত্রতার শর্ত, চ্যালেঞ্জ ও মুজিযা ইত্যাদি।

আল্লাহর অলীদের কষ্ট না দেওয়ার নির্দেশ, তাদেরকে ভালোবাসার প্রতি উৎসাহ এবং তাঁদের মর্যাদার স্বীকৃতি।

আল্লাহর শত্রুদের সাথে শত্রুতা করা এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব না করার নির্দেশ।

যে ব্যক্তি আল্লাহর শরীয়ত অনুসরণ না করে আল্লাহর অলী হওয়ার দাবি করে, সে মিথ্যাবাদী।

ফরয ইবাদত পালন এবং হারাম কাজ ত্যাগ করার মাধ্যমে আল্লাহর বন্ধুত্ব লাভ করা যায়।

আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন ও দুআ কবুল হওয়ার অন্যতম উপায় হলো, ফরয ইবাদত পালন ও হারাম কাজ ত্যাগ করার পর নফল ইবাদত করা।

অলীদের সম্মান ও তাঁদের উচ্চ মর্যাদা বুঝানো হয়েছে।

التصنيفات

তাওহীদুল আসমা ও সিফাত