“যে ব্যক্তি (আমীরের) আনুগত্য থেকে বের হলো এবং জামা’আত থেকে বিচ্ছিন্ন হলো তারপর মারা গেল, সে জাহিলিয়াতের মরা মরলো

“যে ব্যক্তি (আমীরের) আনুগত্য থেকে বের হলো এবং জামা’আত থেকে বিচ্ছিন্ন হলো তারপর মারা গেল, সে জাহিলিয়াতের মরা মরলো

আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি (আমীরের) আনুগত্য থেকে বের হলো এবং জামা’আত থেকে বিচ্ছিন্ন হলো তারপর মারা গেল, সে জাহিলিয়াতের মরা মরলো। আর যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন নেতৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করল, গোত্ৰপ্রীতির জন্য ক্রুদ্ধ হয় অথবা গোত্র প্রীতির দিকে আহবান করে অথবা গোত্রের সাহায্যার্থে যুদ্ধ করে (আল্লাহর সন্তুষ্টির কোনো ব্যাপার থাকে না) আর নিহত হয়, সেটা জাহিলি মরা। আর যে ব্যক্তি আমার উন্মাতের উপর বিদ্রোহ করে এবং ভালো মন্দ সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করে। মু’মিনকেও রেহাই দেয় না এবং যার সাথে সে ওয়াদাবদ্ধ হয় তার ওয়াদাও রক্ষা করে না, সে আমার কেউ নয়, আমিও তার কেউ নই”।

[সহীহ] [এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি শাসকদের আনুগত্য থেকে বের হলো এবং ইমামের বায়আতের ওপর ঐকমত্য পোষণকারী ইসলামের জামাআত পরিত্যাগ করল, তারপর জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ও আনুগত্য ত্যাগ করা অবস্থায় মারা গেলো, সে জাহিলিয়্যতের মতই মারা গেলো, যারা কোনো আমীরকে মানতো না এবং কোনো এক জামাআতের সাথে সম্পৃক্ত হতো না, বরং তারা বিভিন্ন দল ও গ্রুপে বিভক্ত ছিল, একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হত। ... নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন, যে ব্যক্তি এমন পতাকার অধীনে যুদ্ধ করলো যেখানে হক থেকে বাতিল স্পষ্ট নয়, স্রেফ জাতি অথবা গোত্রের স্বার্থে গোস্বা করে, দীন ও হককে সাহায্য করার জন্যে নয়, ভালো-মন্দ যাচাই না করে ও না জেনে কেবল গোত্রপ্রীতির স্বার্থে যুদ্ধ করে, যখন সে এই অবস্থায় মারা গেলো, তার মৃত্যুটি জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুর মত হলো। আর যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের ওপর বিদ্রোহ করল, তার উম্মতের নেককার ও বদকার সবাইকে হত্যা করে, আর সে যা করে তার পরিণতির কোনো পরোওয়া করে না এবং মুমিনদের হত্যা করার শাস্তির ভয় করে না, কাফিরদের অথবা শাসকদের ওয়াদাকে পূর্ণ করে না, বরং তা কেবল ভঙ্গ করে, তাহলে এটা কবীরা গুনাহ। যে এরূপ করল সে এই কঠোর হুশিয়ারীর উপযুক্ত হলো।

فوائد الحديث

আল্লাহর নাফরমানী ব্যতিরেকে শাসকদের আনুগত্য করা ওয়াজিব।

হাদীসটিতে যে ইমামের আনুগত্য থেকে বের হলো এবং মুসলিমদের জামাআত ত্যাগ করলো তার প্রতি কঠোর হুশিয়ারী রয়েছে, যখন সে এই অবস্থায় মারা গেলো, জাহিলিয়্যাতের তরিকার ওপর মারা গেলো।

হাদীসে গোত্রপ্রীতির যুদ্ধ থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

ওয়াদা পূর্ণ করা ওয়াজিব।

আনুগত্য করা ও মুসলিমদের জামাআত আঁকড়ে থাকার ভেতর অনেক কল্যাণ, নিরাপত্তা, প্রশান্তি ও ভালো অবস্থার স্থিতি রয়েছে।

জাহিলিদের অবস্থার সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করার নিষেধাজ্ঞা।

মুসলিমদের জামাআত আঁকড়ে থাকার নির্দেশ।

التصنيفات

রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা, রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা