তুমি পড়বে:…

তুমি পড়বে: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، اللهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ» অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই, তিনি একক, তার কোনই শরীক নেই। আল্লাহ অনেক বড়, আল্লাহর জন্য অনেক প্রশংসা, আমি পবিত্রতা ঘোষণা করি সে আল্লাহর যিনি সৃষ্টিজগতের রব, কারো কোন উপায় বা শক্তি নেই আল্লাহ ছাড়া, যিনি প্রতাপান্বিত ও প্রজ্ঞাবান।”

সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদিন এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কিছু দু’আ-কালাম শিখিয়ে দিন যা আমি পড়তে পারি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি পড়বে: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، اللهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ الْعَزِيزِ الْحَكِيمِ» অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই, তিনি একক, তার কোনই শরীক নেই। আল্লাহ অনেক বড়, আল্লাহর জন্য অনেক প্রশংসা, আমি পবিত্রতা ঘোষণা করি সে আল্লাহর যিনি সৃষ্টিজগতের রব, কারো কোন উপায় বা শক্তি নেই আল্লাহ ছাড়া, যিনি প্রতাপান্বিত ও প্রজ্ঞাবান।” (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো দু’আ শুনে) সে বেদুঈনটি বলল: হে আল্লাহর রাসূল! এটা তো আমার রবের জন্য (তাঁর প্রশংসা), আমার জন্য কী? তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি পড়বে:اللهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي». “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মাফ কর, দয়া কর, হিদায়াত দান কর এবং আমাকে রিযিক দাও)।

[সহীহ] [এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

একজন বেদুইন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে চাইলেন, তাকে যেন তিনি এমন একটি জিকির শিখিয়ে দেন, যা তিনি বলতে পারেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: বলো- "لا إله إلا الله وحده لا شريك له" "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু" (একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই) তিনি তাওহীদের সাক্ষ্য দিয়ে শুরু করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্যিকার মাবূদ নেই। "আল্লাহু আকবার কাবীরা" অর্থাৎ, আল্লাহ সবচেয়ে মহান এবং সবকিছুর চেয়ে বড়। "ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাসীরা" অর্থাৎ, আল্লাহর জন্য অনেক প্রশংসা, তাঁর গুণাবলী, কাজ এবং অগণিত নিয়ামতের জন্য। "সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আলামীন" অর্থাৎ, আল্লাহ সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র এবং মহান। "লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আজীযিল হাকীম" অর্থাৎ, এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তন শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বারা, তার সাহায্য ও তাওফীকের মাধ্যমেই সম্ভব। তারপর সেই ব্যক্তি বললেন: এই কথাগুলো আমার রবের যিকির ও মহিমা বর্ণনার জন্য। তাহলে আমার নিজের জন্য দুআ কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: বলো- "আল্লাহুম্মাগফির লী" অর্থাৎ, আল্লাহ আমার গুনাহগুলো মোচন করুন এবং তা ঢেকে দিন। "ওয়ারহামনী":আমার প্রতি দয়া করো অর্থাৎ, আমাকে ধর্মীয় ও পার্থিব উপকারিতা এবং কল্যাণ পৌঁছানোর মাধ্যমে। "ওয়াহদিনী" অর্থাৎ, আমাকে সর্বোত্তম অবস্থার দিকে এবং সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে হিদায়াত দিন। "ওয়ারযুকনী"আমাকে রিজিক দান করো অর্থাৎ আমাকে হালাল সম্পদ, সুস্বাস্থ্য এবং সব ধরনের ভালো ও সুস্থতা দান করুন।

فوائد الحديث

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার,আল হামদু লিল্লাহ ও সুবহানাল্লাহ এর মাধ্যমে আল্লাহর যিকির করার প্রতি উৎসাহ রয়েছে এখানে।

দু্আর আগে আল্লাহর যিকির ও প্রশংসা করা উত্তম।

প্রত্যেকের উত্তম দুআ এবং দুনিয়া ও আখিরাতের ব্যাপক কল্যাণের জন্য কুরআন, সুন্নাহে বর্ণিত দুআ করা উচিত। এছাড়াও যা চায়, তা দ্বারা দুআ করতে পারে।

বান্দার উচিত দুনিয়া ও আখিরাতে যা তার জন্য উপকারী তা শেখার প্রতি আগ্রহী হওয়া।

এতে রয়েছে মাগফিরাত, রহমত ও রিযিক চাওয়ার প্রতি উৎসাহ, কারণ এগুলোই হলো সব ধরনের কল্যাণের সমষ্টি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতকে উপকারী জিনিস শেখানোর ব্যাপারে আগ্রহ।

রহমতের পূর্বে মাগফিরাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেন প্রথমে পরিপূর্ণ ভাবে পাপ মুক্ত হয়ে যায়। যেহেতু মাগফিরাত হলো গুনাহ ঢেকে দেওয়া এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা, আর রহমত হলো সকাল কল্যাণ পৌঁছে দেওয়া এবং জান্নাতে প্রবেশ করা। এটাই হলো মহা সাফল্য।

التصنيفات

যিকিরের ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শ, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দো‘আসমূহ