নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে সালাত কায়েম, যাকাত আদায় ও প্রতিটি মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার শর্তে আমি…

নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে সালাত কায়েম, যাকাত আদায় ও প্রতিটি মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার শর্তে আমি বায়আত করেছি।’

জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে সালাত কায়েম, যাকাত আদায় ও প্রতিটি মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার শর্তে আমি বায়আত করেছি।’

[সহীহ] [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

الشرح

জারির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সালাত কায়েম করা যাকাত আদায় করা এবং প্রতিটি মুসলিমের কল্যাণকামী হওয়ার ওপর বাইয়াত গ্রহণ করেছি। এখানে বাইয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য চুক্তিবদ্ধ হওয়া। একে বাইয়াত বলে নাম করণ করা হয়েছে কারণ,বায়আত দাতা ও গ্রহিতা উভয় একে অপরের দিকে স্বীয় বাহুকে প্রসারিত করেন, অর্থাৎ যেন একে অপরের হাতকে ধরতে পারে। এখানে তিনটি বস্তু পাওয়া যায়: এক—কেবলই আল্লাহর হক। দুই—কেবল মানুষের হক। তিন—সম্মিলিত হক। কেবল আল্লাহর হক, তা হলো তার বাণী: সালাত কায়েম করা। অর্থাৎ, একজন মুসলিম তা যেভাবে চাওয়া হয়েছে সেভাবে সঠিকভাবে আদায় করবে। সুতরাং সে সময় মতো আদায় করবে, তার রুকনসমূহ, ওয়াজিবসমূহ এবং শর্তসমূহ ভালোভাবে আদায় করবে। আর তা পরিপূর্ণ করবে তার মুস্তাহাবসমূহ আদায় করার মাধ্যমে। পুরুষদের জন্য সালাত কায়েম করার ক্ষেত্রে মসজিদসমূহে জামাতে আদায় করাও সামিল। কারণ, এটি সালাত কায়েমেরই অংশ। আর সালাত কায়েমের একটি অংশ হলো সালাতে বিনয়ী হওয়া। খুশু হলো অন্তরের উপস্থিতি এবং একজন মুসল্লি কি বলে ও করে সে বিষয়ে চিন্তা করা। এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এটিই হলো সালাতের জীবন ও মগজ। আর তৃতীয়টি হলো তার বাণী যাকাত আদায় করা। অর্থাৎ, তার হকদারকে তা পৌঁছানো। আর দ্বিতীয়টি হলো প্রতিটি মুসলিমের জন্য কল্যাণকামী হওয়া। অর্থাৎ প্রতিটি মুসলিমের জন্য হিতাকাঙ্খি হওয়া। ছোট হোক বা বড় হোক কাছের হোক বা দূরের হোক নারী হোক বা পুরুষ হোক। প্রতিটি মুসলিমের জন্য হিতাকাঙ্খি হওয়ার ধরণ সম্পর্কে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে উল্লেখ করা হয়, “তোমাদের কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণনা সে তার নিজের জন্য যা মহব্বত করবে তার ভাইয়ের জন্যও তা মহব্বত করবে। এটিই হলো কল্যাণকামিতা যে, তুমি তোমার ভাইদের জন্য তাই পছন্দ করবে যা তুমি তোমার নিজের জন্য পছন্দ কর। ফলে যা তাদের খুশি করবে তা তোমাকেও খুশি করবে। আর যা তাদের কষ্ট দেবে তা তোমাদেরকেও কষ্ট দেবে। তাদের সাথে যে ধরনের মুয়ামালাহ করা ওয়াজিব তুমি তাদের সাথে সে ধরনের মুআমালাহ করবে। এ অধ্যায়টি অনেক প্রসস্থ ও বড়।

التصنيفات

সালাতের ফযীলত