“যাদু, তাবীজ ও অবৈধ প্রেম ঘটানোর মন্ত্র শির্ক-এর অন্তর্ভুক্ত।”(১)

“যাদু, তাবীজ ও অবৈধ প্রেম ঘটানোর মন্ত্র শির্ক-এর অন্তর্ভুক্ত।”(১)

আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি: “যাদু, তাবীজ ও অবৈধ প্রেম ঘটানোর মন্ত্র শির্ক-এর অন্তর্ভুক্ত।”(১)

[সহীহ] [এটি ইবন মাজাহ বর্ণনা করেছেন।]

الشرح

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীসে কতিপয় কাজকে শিরকের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন। তন্মধ্যে কয়েকটি হলো: প্রথমত: অবৈধ ঝাড়ফুঁক: যেসব শিরকী বাক্য দ্বারা জাহেলী যুগের মানুষেরা আরোগ্য তালাশ করত। দ্বিতীয়ত: তাবিজ-কবচ,পুঁতি-দানা ইত্যাদি ব্যাবহার: যা বাচ্চা, পশু ও অন্যের গলায় বদ নজর এড়ানোর জন্য ঝুলানো হয়। তৃতীয়ত: প্রেম ঘটানোর মন্ত্র: যা স্বামী স্ত্রীর উভয়ের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হয়। এসব কাজ শিরকের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এগুলোকে উপায় বানানো হয়; অথচ শরী‘য়তে এগুলোকে উপায় গন্য করার ব্যাপারে শরী‘য়তের দলীল সাব্যস্ত হয়নি। আবার এগুলো ইন্দ্রিয় কোন কারণও নয়; যা অভিজ্ঞতার দ্বারা প্রমাণিত। অন্যদিকে শরী‘য়তে যেগুলোকে কারণ সাব্যস্ত করা হয়েছে যেমন, কুরআন তিলাওয়াত বা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কারণ যেমন ঔষধ যা অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। এগুলো জায়েয; তবে বিশ্বাস থাকতে হবে যে, এগুলো নিছক অসিলা মাত্র; প্রকৃত উপকার বা ক্ষতি একমাত্র আল্লাহর হাতে।

فوائد الحديث

হাদীসে যা দ্বারা তাওহীদ ও আক্বীদা ত্রুটিযুক্ত হয়, তা থেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

অবৈধ ঝাড়ফুঁক, তা’বীজ ও জাদুটোনা করে কারো প্রেমে আকৃষ্ট করা হারাম।

এ তিনটির ব্যাপারে যদি মানুষ বিশ্বাস করে যে, এগুলো রোগমুক্তির অসিলা।তবে এটি ছোট শিরক। কেননা এগুলোকে শরী‘য়ত অসীলা বানায়নি। অন্যদিকে যদি কেউ বিশ্বাস করে এগুলো স্বয়ং নিজেই উপকার বা ক্ষতি করতে পারে, তবে এটি বড় শিরক হবে।

শিরকী ও হারাম উপায় গ্রহণ করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

ঝাড়ফুঁক, তা’বীজ-কবচ নিষিদ্ধ। কেননা এগুলো করা শিরক; তবে শরী‘য়তসম্মত উপায়ে ঝাড়ফুঁক করা জায়েয।

একমাত্র আল্লাহর সাথে অন্তরকে সম্পৃক্ত রাখা জরুরী। তাঁর থেকেই ক্ষতি ও উপকার হয়ে থাকে, তাঁর কোন শরীক নেই। সুতরাং আল্লাহ ব্যতীত কারো থেকে কল্যাণ আসতে পারে না। আবার আল্লাহ ব্যতীত কেউ অকল্যাণও দূর করতে পারে না।

বৈধ ঝাঁড় ফুক হলো যাতে নিম্নোক্ত তিনটি শর্ত পাওয়া যাবে: ১। এ বিশ্বাস করা যে, এটি উপকরণ মাত্র। আল্লাহর আদেশ ব্যতীত এগুলো কোন উপকার করতে পারে না। ২। কুরআন ও আল্লাহর নাম ও সিফাত, হাদীসে বর্ণিত দু‘আহ ও শর‘য়তসম্মত দু‘আর দ্বারা হতে হবে। ৩। এর ভাষা বোধগম্য হতে হবে এবং তাবিজ এবং যাদুবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত কোন কিছু হতে পারবে না।

التصنيفات

শর‘ঈ ঝাঁড়-ফুক, শর‘ঈ ঝাঁড়-ফুক