1- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য গোসলের পানি ঢেলে রাখলাম। তিনি তাঁর ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতে পানি ঢাললেন এবং উভয় হাত ধুলেন। অতঃপর তাঁর লজ্জাস্থান ধৌত করলেন এবং মাটিতে তাঁর হাত ঘষলেন। পরে তা ধুয়ে কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তারপর তাঁর চেহারা ধুলেন এবং মাথার উপর পানি ঢাললেন। পরে ঐ স্থান হতে সরে গিয়ে দুই পা ধুলেন। অবশেষে তাঁকে একটি রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা দিয়ে শরীর মুছলেন না।

2- পুরুষের বীর্য গাঢ় সাদা আর মেয়েলোকের বীর্য পাতলা হলুদ। উভয়ের মধ্য থেকে যার বীর্য ওপরে উঠে যায় অথবা আগে চলে যায় (সন্তান) তারই সদৃশ হয়।

3- নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ইসতিঞ্জা করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, “এ দু’টি জিনিস পবিত্র করে না।

4- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন পায়খানা থেকে বের হন, তিনি বলেন, হে আল্লাহ আমি তোমার ক্ষমা চাই।

5- তিনি আমাদের পেশাব ও পায়খানা করার সময় কিবলামুখী হতে বা ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা করতে, বা তিন পাথরের কম দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করতে অথবা হাঁড় বা গোবর দিয়ে ইস্তেন্জা করতে নিষেধ করেছেন।

6- “ছিঃ ছিঃ! এটা ফেলে দাও। তুমি কি জান না যে, আমরা সাদকাহ খাই না?”

7- নিশ্চয় যামানা (কাল) নিজের ঐ অবস্থায় ফিরে এল যেদিন আল্লাহ তা‘আলা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। (অর্থাৎ দুনিয়া সৃষ্টি করার সময় যেরূপ বছর ও মাসগুলো ছিল, এখন পুনর্বার সে পুরাতন অবস্থায় ফিরে এল এবং আরবের মুশরিকরা যে নিজেদের মন মত মাসগুলোকে আগে-পিছে করেছিল তা এখন থেকে শেষ করে দেওয়া হল।) বছরে বারটি মাস; তার মধ্যে চারটি হারাম (সম্মানীয়) মাস।

8- প্রত্যেক মাসে (নফল) সাওম পালন করলে তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে পালন করো।

9- যখন সালাতের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান পিঠ দেখিয়ে পালায়।

10- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি প্রতি মাসে তিনদিন সাওম পালন করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

11- মুয়াজ্জিনগণ সবচেয়ে উঁচু ঘাড়ের অধিকারী হবেন।

12- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত ও মুকীমের জন্য একদিন একরাত নির্ধারণ করেছেন।

13- বলো: মু’মিন ও মুসলিম কবরবাসিগণ তোমাদের ওপর সালাম ! আল্লাহ তা‘আলা আমাদের পূর্বের এবং পরবর্তীদের প্রতি দয়া করুন। যদি আল্লাহ চান তাহলে আমরাও তোমাদের সঙ্গে অচীরেই মিলিত হব।

14- সূর্য (পশ্চিমাকাশে) ঢলে যাওয়ার পর যোহরের ওয়াক্ত হয় এবং মানুষের ছায়া তার সমপরিমাণ হওয়া থেকে আসরের ওয়াক্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকে। আসরের ওয়াক্ত সূর্য হলুদ না হওয়া পর্যন্ত থাকে। মাগরিবের ওয়াক্ত (পশ্চিমাকাশে) শাফাক তথা লালিমা দূরীভুত না হওয়া পর্যন্ত থাকে। আর ইশার ওয়াক্ত রয়েছে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত। এবং ফজরের ওয়াক্ত রয়েছে ঊষার উদয়কাল হতে সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত।

15- আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মাগরীবের সালাত আদায় করতাম। তখন আমাদের লোকজন এমন অবস্থায় ফিরে যেত যে, তারা তাদের তীরের নিশানা দেখতে পেত।

16- যে ব্যক্তি সূর্য উদয়ের পূর্বে ফজরের সালাতের এক রাকা‘আত সালাত পেল, সে ফজর পেল। আর যে ব্যক্তি সূর্য ডোবার পূর্বে আসরের সালাতের এক রাকা‘আত পেল সে আসর পেল।

17- এ ঘরের তাওয়াফ করে এবং রাত ও দিন যখন ইচ্ছা সালাত আদায় করতে চায় এমন কোন ব্যক্তিকে তোমরা নিষেধ করো না।

18- ফজর দুই প্রকার। এক ফজর হলো বাঘের লেজের মতো তাতে সালাত পড়া যাবে না এবং খাদ্য হারাম হবে না। আর যে ফজর আকাশে লম্বাভাবে দেখা তাতে সালাত বৈধ এবং খাদ্য নিষিদ্ধ।

19- তোমাদের যারা অনুপুস্থিত আছে উপস্থিত লোকেরা যেন তাদের নিকট পৌছে দেয়। তোমরা ফজর উদয় হওয়ার পর দুই রাকা‘আত ছাড়া আর কোন সালাত আদায় করবে না।

20- সুন্নাত হলো ফজরের আযানে মু‘আজ্জিন হাইয়্যা আলাল ফালাহ বলার পর আস সালাতু খাইরুম মিনান নাওম বলবে।

21- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লা মাগরিব ও এশার মাঝে একত্র করেন। মাগরিব তিন রাকা‘আত এবং এশা দুই রাকা‘আত আদায় করেন একই ইকামাত দ্বারা।

22- তুমি তাদের ইমাম। তাদের যারা দুর্বল তাদের অনুসরণ করবে। আর এমন একজন মুয়াজ্জিন নিয়োগ করবে যে তার আযানের ওপর বিনিময় গ্রহণ করে না।

23- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাললাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুয়াযযিন (তাঁর জন্য) প্রতীক্ষা করতে থাকতেন ও ইক্বামাত দিতেন না। যখন তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাললাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বেরিয়ে আসতে দেখতেন তখনই সালাতের জন্য ইক্বামাত দিতেন।

24- অন্ধকার রাতে একটি সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। আমরা জানলাম না যে কিবলা কোন দিকে? ফলে প্রত্যেকে নিজ নিজ ধারণা অনুযায়ী সালাত আদায় করল। তারপর যখন সকাল হলো বিষয়টি আমরা রাসূলুল্লাহর নিকট উল্লেখ করলাম। তখন আয়াত নাযিল হলো, “তোমরা যেদিকে ফিরো সেদিকেই আল্লাহর চেহারা”। [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১১৫]

25- পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানে কিবলা অবস্থিত।

26- তোমাদের কেউ যখন সজিদে আসে তখন সে যেন তার জুতা দু’টি দেখে নেয়। সে যদি তার জুতাদ্বয়ে কোনো নাপাকী বা ময়লা দেখে তা যেন মুছে নেয় এবং তা পরিহিত অবস্থাতেই সালাত আদায় করে।

27- যখন মোজাদ্বয় দ্বারা নাপাকী পাড়ানো হয়, তখন তার পবিত্রতা হলো মাটি।

28- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমতাবস্থায় সালাত আদায় করতে দেখেছি যে, কান্নার কারণে তার বুকের মধ্যে চাক্কির আওয়াজের মতো আওয়াজ ছিল।

29- আব্দুল্লাহ ইবন উমার থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবাতে গিয়ে সালাত আদায় করতে বের হলেন। তিনি বলেন, তখন আনসারগণ এসে তাকে সালাতরত অবস্থায় সালাম দিল। তিনি বললেন, আমি বিলালকে বললাম, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লামকে সালাত অবস্থায় সালামের উত্তর কীভাবে দিতে দেখেছ? তিনি বলেন, এভাবে বলেছেন, স্বীয় কব্জিকে প্রশস্ত করেন এবং তার পেটকে নিচে ও পিটকে উপরে রাখেন। সুনানু আবূ দাউদ।

30- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখিছি তিনি মানুষের সালাতের ইমামতি করছেন অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেয়ের মেয়ে উমামাহ বিনত আবীল আস তার কাঁধে ছিল। যখন তিনি রুকূ‘ করেন তখন তাকে নীচে রাখেন আর যখন সেজদা থেকে উঠেন তখন তাকে আবার তুলে নেন।

31- তিনি মুসাফিরের জন্য তিন দিন এবং তিন রাত এবং মুকীমের জন্য এক রাত একদিন মুজাদ্বয়ের উপর মাসেহ করার অনুমতি দিয়েছেন।

32- সাবুরাহ ইবন মা‘বাদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমাদের কেউ সালাত আদায় করে সে যেন তার সালাতের জন্যে তীর দিয়ে হলেও আড়াল হয়। মুসনাদে আহমাদ

33- আবূ যার থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ সালাতে দাঁড়ায়, তখন যদি তার সামনে শিবিকার খুঁটির ন্যায় কোন জিনিস থাকে সেটা তাকে আড়াল করে রাখবে। আর যদি শিবিকার খুঁটির ন্যায় কোন জিনিস না থাকে তখন নারী, গাধা ও কালো বর্ণের কুকুর তার সলাত নষ্ট করে দেয়। আমি বললাম, হে আবূ যার! লাল ও হলদে বর্ণের কুকুর থেকে কালো বর্ণের কুকুরের পার্থক্য কি? তিনি বলেন, হে ভাতিজা, তুমি আমাকে যেরূপ জিজ্ঞেস করলে আমিও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তদ্রুপ জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন, “কালো কুকুর হলো শয়তান।” সহীহ মুসলিম। অপর একটি হাদীসে এসেছে—“ঋতুবতী নারী ও কুকুর সালাত নষ্ট করে দেয়।” সুনানু আবূ দাউদ।

34- মুসল্লীর সালাতে কোমরে হাত রাখাকে আয়েশা অপছন্দ করতেন। আর তিনি বলতেন এটি ইয়াহুদীরা করে।

35- বিকেলের খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সলাতের পূর্বে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সলাতে তাড়াহুড়া করবে না।

36- আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এটা এক ধরনের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সালাত হতে অংশ বিশেষ ছিনিয়ে নেয়।

37- এ চাদরখানা আবূ জাহমের নিকট নিয়ে যাও, আর তার কাছ হতে আনবিজানিয়্যাহ (কারুকার্য ছাড়া মোটা চাদর) নিয়ে আস। এটা তো আমাকে সালাত হতে অমনোযোগী করে দিচ্ছিল।

38- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন এলাকায় মসজিদ নির্মান ও মসজিদকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

39- আমি তোমাকে আল্লাহর সপথ দিয়ে বলছি, তুমি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছো: আমার পক্ষ থেকে উত্তর দাও। হে আল্লাহ, তুমি তাকে রুহুল কুদুস দ্বারা শক্তিশালী করো। তিনি বললেন, আল্লাহুম্মা হ্যাঁ।

40- “যে ব্যক্তি কাউকে হারানো জিনিস সন্ধান (ঘোষণা) করতে শোনে, সে যেন বলে, ‘আল্লাহ যেন তোমাকে তা ফিরিয়ে না দেন।’ কারণ, মসজিদসমূহ এর জন্য বানানো হয়নি।”

41- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখবে তখন বলবে, আল্লাহ তোমার এ ব্যবসা লাভজনক না করুন। আর কাউকে যখন দেখবে সে মসজিদে কোন জিনিস হারানোর ঘোষণা দিচ্ছে তখন বলবে, আল্লাহ তোমার জিনিসটি ফেরত না দিন।

42- হে আবূ বকর! ওদের বাঁধা দিও না। কেননা এগুলো ঈদের দিন। আর সে দিনগুলো ছিল মিনার দিন।

43- মানুষ মসজিদসমূহ নিয়ে অহংকার না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না।

44- রিফা‘আহ ইবন রাফে‘ আয-যুরাকী থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগনের একজন ছিলেন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আসল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসা ছিল। সে তার কাছাকাছি স্থানে সালাত আদায় করল। তারপর সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তাঁকে সালাম দিলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি তোমার সালাত আবার পড়ো। কেননা তুমি সলাত পড়োনি। তিনি বলেন, তারপর সে ফিরে গেল এবং আগের মতো সালাত আদায় করলো। তারপর আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফিরে এলো। তিনি তাকে বললেন, তুমি তোমার সালাত আবার পড়ো। কেননা তুমি সলাত পড়োনি। সে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমাকে শিখিয়ে দিন কীভাবে সালাত আদায় করবো। তিনি বলেন, “তুমি যখন কিবলামুখী হবে তাকবীর (তাহরীমা) বলো, এরপর তুমি সূরা ফাতিহা পড়ো। তারপর কুরআনের যে অংশ তোমার কাছে সহজ সেখান থেকে পাঠ করো। তারপর যখন তুমি রুকূ করবে তখন তুমি তোমার দুই হাত দুই হাঁটুর উপর রাখবে এবং তোমার পিটকে লম্বা করে বিছিয়ে দেবে। তুমি তোমার রুকূর জন্য ধীরস্থিরতা অবলম্বন করো। অতঃপর যখন তুমি তোমার মাথা উঠাবে তখন তুমি তোমার মেরুদন্ড সোজা কর। যাতে হাঁড়গুলো নিজ নিজ জোড়ার স্থানে ফিরে যায়। তারপর যখন সেজদা করবে তখন তুমি তোমার সেজদার জন্য ধীরস্থিরতা অবলম্বন করো। তারপর যখন তুমি তোমার মাথা উঠাবে তখন তুমি তোমার বাম উরুর ওপর বসো। অতঃপর প্রতি রুকু ও সেজদায় তা করো। মুসনাদে আহমাদ। অপর বর্ণনায় বর্ণিত। তিনি বলেন, “আল্লাহর নির্দেশ মত পূর্ণাঙ্গরূপে উযূ না করলে তোমাদের কারো সালাত পরিপূর্ণ হবে না। সে তার মুখমণ্ডল ও দু’ হাত কনুইসহ ধৌত করবে, তার মাথা মাসহ করবে এবং দু’পা গোছা পর্যন্ত ধৌত করবে। তারপর তাকবীর বলবে এবং আল্লাহর প্রশংসা করবে। তারপর তাকে যতটুকু অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং তার জন্য যা সহজ হয় তা থেকে কুরআন পড়বে। তারপর তাকবীর বলবে এবং সেজদা করবে। তারপর চেহারাকে বা কপালকে যমীনে এমনভাবে রাখবে যাতে তার শরীরের জোড়াগুলো স্থীর হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকে পড়ে। তারপর তাকবীর বলবে এবং সোজা হয়ে তার আসনে বসবে এবং মেরুদন্ডকে সোজা করবে। এভাবে চার রাকা‘আত সালাতের পদ্ধতি বর্ণনা করেন। এ সব কর্মসমূহ সম্পাদন করা ছাড়া তোমাদের কারো সালাত পূর্ণ হবে না।” সুনানে আবূ দাউদ। অপর বর্ণনায় বর্ণিত: “তারপর তুমি আল্লাহ যেভাবে আদেশ করেছেন সেভাবে ওযূ কর। তারপর তাশাহুদ পড়। ইকামত দাও এবং তাকবীর বলো। যদি তোমার কাছে কুরআন জানা থাকে তা থেকে পড়ো। অন্যথায় আল্লাহর প্রশংসা কর, তার তাকবীর বল এবং তাহলীল পড়ো।” সুনানু আবূ দাউদ।

45- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে জাগ্রত হতেন তাকবীর বলতেন, অতঃপর বলতেন : “হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা ও আপনার প্রশংসা এবং আপনার নাম বড়ই বরকতময়, আপনার প্রতিপত্তি অতি উচ্চ। আর আপনি ব্যতীত অন্য কোনো হক্ব ইলাহ্ নেই।

46- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর ও আলহামদু লিল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিরাত দ্বারা সালাত আরম্ভ করতেন। আর তিনি যখন রুকূ করতেন তখন তিনি মাথা উপরে তুলতেন না এবং নিচেও ঝুকাতেন না তবে দুইয়ের মাঝামাঝি থাকতেন।

47- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করেছি। তিনি তার ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখলেন তার বুকের উপর।

48- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর ও উমার সালাতকে আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দ্বারা শুরু করতেন।

49- তবে এ ব্যক্তি উত্তম বস্তু দ্বারা তার হাত পরিপূর্ণ করেছে।

50- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’ রাক‘আতে সূরাহ্ ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরাহ্ পাঠ করতেন। আর শেষের দুই রাকা‘আতে সূরা ফাতিহা পড়তেন। আর তিনি আমাদের তিলাওয়াত শুনাতেন।

51- আমরা যুহর ও আসরের সালাতে রাসূলে কিয়ামের সময় অনুমান করলাম। যুহরের প্রথম দুই রাকা‘আতে তার কিয়াম ছিল আলিফ লাম মীম সাজদাহ তিলাওয়াত করার সময় পরিমাণ। আর শেষের দুই রাকা‘আতে তার কিয়াম ছিল তার অর্ধেক।

52- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্য অমুকের মতো আর কারো পিছনে আমি সালাত আদায় করিনি। আমরা সেই লোকের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যুহরের প্রথম দুই রাকা‘আত দীর্ঘ করতেন এবং পরের দুই রাকা‘আত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরকে হালকা করতেন এবং মাগরিবে ছোট সূরাসমূহ (কিসারে মুফাসসাল) পড়তেন। আর এশার সালাতে সূরা শামছ ওয়াদোহাহা ও এ ধরনের সূরা পড়তেন। ফজরের সালাতে দুইটি লম্বা সূরা পড়তেন।

53- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবের সালাতে সূরাহ তূর তিলাওয়াত করতে শুনেছি। যখন এ আয়াতে পৌঁছলেন (অনুবাদ): “তারা কি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তা? তারা কি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে বরং তারা বিশ্বাস করে না। নাকি তাদের কাছে রয়েছে তোমার রবের ভান্ডারসমূহ না তাঁরাই ক্ষমতাশালী।” (সূরা তূর, আয়াত: ৩৫-৩৮), তখন আমার অন্তর উড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো।

54- হে লোক সকল! মুসলিম ব্যক্তি যে ভালো স্বপ্ন দেখে অথবা তাকে যে ভালো স্বপ্ন দেখানো হয়, তা ব্যতীত নবুয়াতের সুসংবাদের কিছুই অবশিষ্ট নাই। আর জেনে রেখ যে, আমাকে রুকু অথবা সেজদাবস্থায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব তোমরা রুকুতে রবের বড়াই বর্ণনা কর (অর্থাৎ, ‘সুবহানা রাব্বিয়্যাল আযীম’ পড়)। আর সিজদায় দুআ করতে সচেষ্ট হও। কারণ, তোমাদের সে দুআ কবূল হওয়ার উপযুক্ত।”

55- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত এবং রুকূ ছিল যখন তিনি রুকূ ও সেজদাহ থেকে মাথা তুলতেন এবং দুই সেজদার মাঝখানে বসতেন প্রায় সমান সময়।

56- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রুকূ করতেন তখন আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে দিতেন এবং যখন সেজদা করতেন তখন তার আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখতেন।

57- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালাতের বেজোড় রাক‘আতে (সাজ্দাহ হতে) উঠে স্থীর না বসে দাঁড়াতেন না।

58- বনু সুলাইমের কয়েকটি বস্তির ওপর বদ দো‘আ করার জন্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ‘র পরে এক মাস ব্যাপী কুনূত পাঠ করেছেন। তিনি বলেন, তিনি চল্লিশ —রাবী সন্দেহ করছেন অথবা সত্তর জন — কারীকে মুশরিকদের কতক লোকের নিকট পাঠান। এরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং তাদেরকে হত্যা করে। অথচ তাদের মাঝে ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে চুক্তি ছিল। তিনি তাদের থেকে যে কষ্ট পেলেন আর কারো কাছ থেকে এত কষ্ট পেতে আমি দেখিনি।

59- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সম্প্রদায়ের জন্য দো‘আ বা বদ-দো‘আ করা ছাড়া কুনূত পড়তেন না।

60- হে পিতা! আপনি অবশ্যই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবূ বকর, ‘উমার ও ‘উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-এর পিছনে সালাত আদায় করেছেন এবং এই কুফায় ‘আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর পেছনে প্রায় পাঁচ বছর সালাত আদায় করেছেন। তাঁরা কি ফজরের সালাতে দু‘আ কুনূত পড়তেন? তিনি বলেন, হে বৎস! এটা তো বিদ্আত।

61- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদ পড়ার জন্য বসতেন তখন ডান হাত ডান উরুর ওপর এবং বাঁ হাত বাঁ উরুর ওপর রাখতেন। আর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। এই সময় তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি মধ্যমার সাথে সংযুক্ত করতেন এবং বাঁ হাত তার হাঁটুকে গিলে ফেলত (লোকমা বানিয়ে ধরে রাখত)।

62- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তাশাহুদ এমনভাবে শেখাতেন যেমনটি তিনি কুরআনের সূরা শেখাতেন।

63- যদি তুমি সক্ষম হও যমীনে সালাত আদায় করো, অন্যথায় তুমি ইশারা করো আর তুমি তোমার সেজদাকে রুকূ থেকে বেশি নীচা করো।

64- যিয়াদ বিন আলাকাহ বলেন, মুগীরাহ বিন শু‘বা একদা আমাদের সালাতে ইমামতি করলেন। তিনি দুই রাকআতের পর দাঁড়িয়ে গেলে আমরা বললাম সুবহানাল্লাহ। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ এবং সালাত চালিয়ে গেলেন। যখন সালাত শেষ করলেন এবং সালাম ফিরালেন এবং দুটি সেজদা সাহু করলেন। তারপর যখন তিনি সালাত শেষ করে ঘুরে বসলেন, তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি এমনটি করতে দেখেছি।

65- আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাদের কাছে সূরা ইনশিকাক তিলাওয়াত করলেন। তিনি এতে সিজদা দিলেন। অতপর সিজদা শেষে তিনি বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সূরা তিলাওয়াত করে সিজদা দিয়েছেন।

66- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট সূরাহ্ ওয়ান্ন নাজ্ম তিলাওয়াত করা হল কিন্তু তাতে তিনি সাজদাহ্ করেননি।

67- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম, সূরা হজে কি দুটি সেজদাহ রয়েছে? সে বলল, হ্যাঁ। আর যে ব্যক্তি সেজদাহ দুইটি না করবে সে যেন সে দুটি তিলাওয়া না করে।

68- যখন কোন খুশীর খবর আসতো বা তাঁকে কোন সুসংবাদ দেওয়া হতো, তখনই তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে শোকর-সূচক সিজদা আদায় করতেন।

69- আব্দুল্লাহ মুযানী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা মাগরেবের পূর্বে (দু’ রাকআত) নামায পড়।” অতঃপর বললেন, “যার ইচ্ছা হবে মাগরিবের পূর্বে দু’রাকাত সালাত পড়বে”। মানুষ এটাকে সুন্নত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে আশঙ্কায়। সুনানু আবূ দাউদ, এটা তারই শব্দ, তবে বুখারীতে অনুরূপ হাদীস রয়েছে।

70- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করল, তখন তিনি মিম্বারে ছিলেন— আপনি রাতের সালাত কীভাবে আদায় করতে বলেন? তিনি বললেন, দু’রাক‘আত দু’রাক‘আত করে আদায় করবে। যখন তোমাদের কারো ভোর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তখন সে আরো এক রাক‘আত আদায় করে নিবে। আর এটি তার পূর্ববর্তী সালাতকে বিতর করে দেবে।

71- বিতরের সালাত প্রমাণিত (ওয়াজিব)। অতএব, যে ইচ্ছা করবে সে সাত রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে পাঁচ রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে তিন রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে এক রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে।

72- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে বিতির ও আট রাকা‘আত পড়তেন। তারপর যখন পরবর্তী রাত আসলো আমরা মসজিদে একত্র হলাম এবং আশা করছিলাম যে, তিনি আমাদের মাঝে বের হয়ে আসবেন। আমরা সকাল পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করলাম।

73- আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “হে আব্দুল্লাহ! তুমি অমুক লোকের মতো হয়ো না, যে রাতে নফল সালাত পড়ত, অতঃপর তা ছেড়ে দিয়েছে।

74- আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে কুরআনের ধারকগণ! তোমরা বিতির পড়। নিশ্চয় আল্লাহ বিতর (বিজোড়) তিনি বিতরকে (বিজোড়কে) ভালবাসেন। সুনানে আবূ দাউদ

75- এক রাতে দুইবার বিতির নাই।

76- যে ব্যক্তি ঘুমানোর কারণে বিতর সালাত আদায় করতে পারেনি অথবা তা আদায় করতে ভুলে যায়, পরে স্মরণ হওয়া মাত্রই যেন তা আদায় করে নেয়।

77- যায়দ ইবন আরকাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একদা তিনি একদল লোককে পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাত পড়তে দেখলেন। তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, নামায এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের নামায যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে।”

78- এমন করবে না, যখন তোমাদের কেউ তার ঘরে সালাত আদায় করে তারপর সে ইমামকে পেল যে, সে এখনো সালাত আদায় করেনি, তাহলে সে যেন তার সাথে পূণরায় সালাত আদায় করে। কারণ, তা তার জন্য নফল হবে।

79- হে লোক সকল! তোমরা মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি কর। অতএব যে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করবে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাদের মধ্যে রোগী, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকও থাকে।

80- জামা‘আতের ইমামতি ঐ ব্যক্তি করবে, যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল কুরআন পড়তে জানে।

81- হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে নূর (বা আলো) দান করুন, আমার চোখে নূর দান করুন, আমার শ্রবণশক্তিতে নূর দান করুন, আমার ডানে নূর দান করুন, আমার বামে নূর দান করুন, আমার উপরে নূর দান করুন, আমার নিচে নূর দান করুন, আমার সামনে নূর দান করুন, আমার পেছনে নূর দান করুন, আমার জন্য নূর দান করুন।

82- আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং একজন ইয়াতীম আমাদের ঘরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করি। আর আমার মা উম্মে সুলাইম আমাদের পিছনে। সহীহ বুখারী।

83- আল্লাহ তোমার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিন, তবে তুমি এমন আর করো না।

84- উম্মু ওয়ারাকাহ বিনত আব্দুল্লাহ ইবনু হারেস আল-আনসারিয়্যাহ যিনি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দেন যেন সে তার ঘরের লোকদের ইমামতী করে।

85- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবন উম্মে মাকতুমকে প্রতিনিধি বানিয়েছেন, যে মানুষদের ইমামতি করত, অথচ তিনি অন্ধ ছিলেন।

86- বিদায় হজে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আমাকে নিয়ে হজ করা হয়েছে। আমি তখন সাত বছরের ছেলে।’

87- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনে চড়ে হজ সমাধা করেন। আর ঐ বাহনটিই ছিল প্রয়োজনীয় যাবতীয় সাজ-সরঞ্জামের বাহক।

88- উক্কায, মাজিন্নাহ ও যুল-মাজায নামক স্থানগুলো (ইসলামপূর্ব) জাহেলী যুগের বাজার ছিল। ফলে সাহাবায়ে কেরাম সে মৌসুমগুলোতে ব্যবসা করাকে পাপ মনে করলেন। তার বৈধতার জন্যে অবতীর্ণ হলো, যার অর্থ, “(হজের সময়) তোমাদের জন্য তোমাদের রবের অনুগ্রহ কামনা (ব্যবসা-বাণিজ্যে) করায় কোনো দোষ নেই।

89- উমার ইবনুল খাত্তাব নারীকে অকালে গর্ভপাত করানো সম্পর্কে মানুষের কাছে পরামর্শ চাইলেন।

90- তোমাদের কেউ কি অপর ভাইকে এমনভাবে চিবাতে পারে যেমন উট চিবায়, তোমার কোন ক্ষতিপূরণ নেই

91- মাররুয-যাহরান নামী স্থানে আমরা একটি খরগোশকে উত্যক্ত করলাম। লোকেরা ছুটোছুটি করে ক্লান্ত হয়ে পড়ল।

92- আনসারদের এক ব্যক্তি তার গোলামকে মৃত্যুর পরে কার্যকর হবে এই শর্তে আযাদ করলেন।

93- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক যিনাকারী অবিবাহিতা দাসী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়।

94- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণীমতের মাল ঘোড়ার জন্য দুই অংশ এবং পুরুষের জন্য এক অংশ বন্টন করেন।

95- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৈন্যদলে যাদের পাঠাতেন তাদের কতককে সাধারণ সৈন্যের অংশ ব্যতিত অতিরিক্ত বিশেষ গণীমত প্রদান করতেন।

96- বনী নাযীরের ধন-সম্পদ ছিল আল্লাহর রাসূলের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ যাতে মুসলিমগণ কোন উট বা ঘোড়া দোড়াতে হয়নি। তাই তা ছিল কেবল আল্লাহর রাসূলেন জন্য খাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালা তার পরিবারের এক বছরের খরচা আলাদা করে রাখতেন। তারপর অবশিষ্ট সম্পদ আল্লাহর রাস্তার প্রস্তুতি ও ঘোড়ার মধ্যে ব্যয় করতেন।

97- কেউ যদি কোন ক্রীতদাস হতে নিজের অংশ মুক্ত করে আর ক্রীতদাসের মূল্য পরিমাণ অর্থ তার কাছে থাকে, তবে তার উপর দায়িত্ব হবে ক্রীতদাসের ন্যায্য মূল্য নির্ণয় করা। তারপর সে শরীকদেরকে তাদের প্রাপ্য অংশ পরিশোধ করবে এবং ক্রীতদাসটি তার পক্ষ হতে মুক্ত হয়ে যাবে।

98- কেউ তার অংশীদারী গোলাম থেকে নিজের অংশ আযাদ করে দিলে তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে নিজস্ব অর্থে সেই গোলামকে পূর্ণ আযাদ করা। যদি তার প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকে, তাহলে গোলামের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।

99- আমরা রাসূলুল্লাহুর সাথে সাতটি যুদ্ধ টিড্ডি (ফড়িং) খেতে খেতে করেছি।

100- নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাত্হায় অবস্থিত সানিয়্যা ‘উলয়ার কাদা নামক স্থান দিয়ে মাক্কায় প্রবেশ করেন এবং সানিয়্যা সুফলার দিক দিয়ে বের হন।