1- হে বনু সালেমা! তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই থাক। কারণ, তোমাদের সালাতের জন্য মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিবদ্ধ করা হয়। তোমরা তোমাদের বাড়ীতেই থাক। কারণ তোমাদের সালাতের জন্য মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপ লিপিবদ্ধ করা হয়।

2- আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির ওপর রহম করুন যে রাত্রের কিছু অংশ জেগে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে এবং তার স্ত্রীকেও জাগিয়ে দেয়। তার স্ত্রী যদি জাগ্রত হতে না চায় তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়। সে মহিলার ওপরও আল্লাহ তা‘আলা রহম করুন, যে রাত্রের কিছু অংশ জেগে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে। অতঃপর তার স্বামীকেও জাগিয়ে দেয়, সে যদি জাগ্রত হতে না চায় তবে তার মুখে পানির ছিটা দেওয়া।

3- আল্লাহর পথে লড়াই করো, উটনীর দু’বার দুধ দোহনের মধ্যবর্তী সময় পরিমাণও যদি কেউ আল্লাহর পথে জিহাদ করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।

4- যখন তোমাদের কেউ রাতে জাগ্রত হয় এবং কুরআন তার মুখে কঠিন ঠেকে, কী বলছে বুঝতে পারে না, সে শুয়ে পড়বে।

5- “জান্নাতের মধ্যে এমন একটি দরজা আছে, যার নাম হল ‘রাইয়ান’; যার মধ্য দিয়ে কেবলমাত্র সিয়াম পালনকারীগণই কিয়ামাতের দিনে প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না

6- আল্লাহ তাআলা মূসার উপর রহম করুন। তাঁকে এর চেয়ে বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন।”

7- কোন কোন মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে রোযা ত্যাগ করতেন যে, মনে হত তিনি উক্ত মাসে আর রোযা রাখবেন না। অনুরূপভাবে কোন মাসে এমনভাবে রোযা রাখতেন যে, মনে হত তিনি ঐ মাসে আর রোযা ত্যাগই করবেন না। (তাঁর অবস্থা এরূপ ছিল যে,) যদি তুমি না চাও যে, তাকে সালাত রত অবস্থায় দেখবে, তবে অবশ্যই তাকে সেরূপ দেখতে পাবে, আর যদি তুমি না চাও যে, তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখবে, তবে অবশ্যই তাকে সেরূপ দেখতে পাবে।

8- কেবল দু’টি বিষয়ে ইর্ষা করা যায়: (১) যাকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ দিয়েছেন এবং তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতাও দিয়েছেন।(২) যাকে আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞা দান করেছেন। সে তার মাধ্যমে বিচার ফয়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়।

9- আল্লাহ্ তা‘আলার ভয়ে যে লোক ক্রন্দন করে তার জাহান্নামে যাওয়া এরূপ অসম্ভব যেমন দোহন করা দুধ আবার পালানের মধ্যে ফিরে যাওয়া অসম্ভব।

10- “তোমাদের মধ্যে কেউ রশি নিয়ে তার পিঠে কাঠের বোঝা বয়ে আনা এবং তা বিক্রি করা, ফলে আল্লাহ তার চেহারাকে (যাচ্ঞা করার লাঞ্ছনা হতে) রক্ষা করেন, তা মানুষের কাছে সওয়াল করার চেয়ে উত্তম, চাই তারা দিক বা না দিক”।

11- ঐ ব্যক্তি মিথ্যাবাদী নয়, যে মানুষের মধ্যে সংশোধন করার জন্যে ভালো কথা পৌঁছায় অথবা ভালো কথা বলে।

12- জান্নাতে প্রবেশের পর একমাত্র শহীদ ছাড়া আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তাকে দেওয়া হয়। শহীদ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্খা করবে। শাহাদাতের মর্যাদা দেখে সে দশবার শহীদ হওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করবে।

13- আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের উদাহরণ দিনের বেলায় সিয়াম পালনকারী এবং রাতে তাহাজ্জুদ নামাযে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াতকারীর ন্যায়, যে সিয়াম পালন করে ও সালাত আদায়ে ক্লান্ত হয় না, যতক্ষণ না মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা থেকে ফিরে আসে।

14- যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ঈমান ও তার সমস্ত প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বাস রেখে আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য ঘোড়া প্রস্তুত রাখে, কিয়ামতের দিন তার আমলের পাল্লায় ঘোড়ার খাদ্য, পানীয়, গোবর ও পেশাব ওজন করা হবে।

15- “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একটি তীর নিক্ষেপ করে, তার জন্য একটি গোলাম আজাদ করার সমান নেকী হয়।”

16- কোন মুসলিম যদি আল্লাহর রাহে এতটুকু সময় যুদ্ধ করে যতটুকু দু’বার উটনী দোহাবার মাঝে হয়, তাহলে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। আর যে মুজাহিদকে আল্লাহর পথে জখম করা হয় বা আঁচড় পৌঁছে, সে জখম বা আঁচড় কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তা হতে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশী রক্তধারা প্রবাহিত হবে। তার রং হবে জাফরান, আর তার গন্ধ হবে কস্তুরীর মত।

17- আব্দুল্লাহ ইবন উমার কতই না ভালো মানুষ হত, যদি সে রাতে সালাত পড়ত।

18- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর (জাবেরের) নিকট থেকে একটি উট ক্রয় করলেন। সুতরাং তিনি তার মূল্য পরিশোধ করার সময় (স্বর্ণ-রৌপ্য প্রাপ্য অপেক্ষা) ওজনে বেশি দিলেন।

19- “তোমার ভাইকে সাহায্য কর, সে যালিম হোক অথবা মাযলুম”

20- রেশম পরিধানকারীদের আখিরাতে কোনো অংশ নেই

21- কখনোই না। আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি একটি চাদর অথবা আংরাখা (বুক-খোলা লম্বা ও ঢিলা জামা) এর কারণে, যা সে (গনীমতের মাল থেকে) চুরি করেছিল।

22- কোন সদকার সাওয়াব সবেচেয়ে বড়? তিনি বললেন: সুস্থ ও সম্পদের প্রতি আকাঙ্খী থাকাবস্থায় সদকা করা। যখন তুমি অভাবী হওয়ার আশঙ্কা করবে এবং ধনী হওয়ারও আশা রাখবে। তুমি ততক্ষণ অপেক্ষা করবে না যে, যখন তোমার গলার কাছে রূহ পৌঁছে যাবে, তখন বলবে অমুকের জন্য এত,অমুকের জন্য এত।অথচ অমুকের জন্য হয়েই গেছে।

23- “এ দু’টি জিনিস আমার উম্মাতের পুরুষদের জন্য হারাম, তাদের নারীদের জন্য হালাল”।

24- সে আমাদের অনুসরণ করে চলে এসেছে। তুমি চাইলে তাকে প্রবেশের অনুমতি দিবে, অন্যথায় সে ফিরে যাবে।

25- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তিন আঙ্গুল দিয়ে খেতে দেখেছি।খাবার শেষে তিনি সেগুলো চেখে খেতেন।

26- আজকে ইফতারকারীরা (সিয়ামবিহীন লোকেরা) সাওয়াব নিয়ে গেল।

27- তিনি বাইতুল্লাহকে নিজের বামে রেখে এবং মিনাকে ডানে রেখে বললেন, এটিই ঐ সত্ত্বার দাঁড়ানোর স্থান, যার উপর সূরা বাকারাহ নাযিল হয়েছে।

28- হে আনসারগণ! আমি কি তোমাদেরকে গুমরাহীর মধ্যে লিপ্ত পাইনি, পরে আল্লাহ আমার দ্বারা তোমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন? তোমরা ছিলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরকে জুড়ে দিয়েছেন। তোমরা ছিলে অভাবগ্রস্ত, অতঃপর আল্লাহ আমার মাধ্যমে তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করেছেন।

29- যারা আমার সঙ্গে ই‘তিকাফ করেছে, তারা যেন শেষ দশকে ই‘তিকাফ করে। কারণ আমাকে স্বপ্নে লাইলাতুল কাদর দেখানো হয়েছিল। পরে আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আমি স্বপ্নে দেখতে পেয়েছি যে, ঐ রাতের সকালে আমি কাদা ও পানির মাঝে সাজদাহ করছি। তোমরা তা শেষ দশকে তালাশ কর।

30- আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে যেসব বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন তা তোমাদের গ্রহণ করা উচিত।

31- একবার আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রামাযান মাসে সফরে বের হলাম। তখন অত্যন্ত গরম ছিলো; এমনকি আমাদের কেউ কেউ গরমের প্রচণ্ডতা থেকে বাঁচার জন্য নিজের হাত মাথার উপর রাখতেন। আমাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্দুল্লাহ ইবন রাওয়াহা রাদিয়াল্লাহু আনহু ছাড়া আর কেউই সাওম পালনকারী ছিলেন না।

32- মুসলিমের ওপর তার ঘোড়া ও গোলামের মধে কোনো যাকাত নেই।

33- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওমে বেসাল থেকে নিষেধ করলেন। লোকেরা বললো, আপনি যে সাওমে বেসাল পালন করেন! তিনি বললেন: আমি তোমাদের মতো নই, আমাকে পানাহার করানো হয়।

34- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি জুমু‘আর দিন সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

35- যে ব্যক্তি মারা গেল অথচ তার ওপর রয়েছে সাওম, তার অভিভাবক তার পক্ষ থেকে সাওম পালন করবে।

36- আমার মা এক মাসের সাওম যিম্মায় রেখে মারা গেছেন, আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে এ সাওম কাযা করতে পারি? তিনি বললেন, যদি তোমার মায়ের ওপর ঋণ থাকত তুমি তার পক্ষ থেকে সেটা আদায় করতে? সে বলল: হ্যাঁ, অতএব আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করাই হলো অধিক যোগ্য।

37- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মুহরিমদের উদ্দেশে ‘আরাফাতে ভাষণ দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন: যার চপ্পল নেই সে মোজা পরিধান করবে আর যার লুঙ্গি নেই সে পায়জামা পরিধান করবে।

38- চতুষ্পদ জন্তুর আঘাত দায়মুক্ত, কূপ (খননে শ্রমিকের মৃত্যুতে মালিক) দায়মুক্ত, খনি (খননে কেউ মারা গেলে মালিক) দায়মুক্ত। আর রিকাযে এক-পঞ্চমাংশ ওয়াজিব।

39- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সহাবীগণ চার তারিখ সকালে মক্কায় আগমন করেন। তখন তিনি তাদের ইহরামকে উমরায় পরিণত করার নির্দেশ দেন। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কী কী জিনিস হালাল? তিনি বললেন: সবকিছু হালাল।

40- বিদায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন গতিতে পথ চলেছিলেন? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি সাধারণ গতিতে চলতেন আর যখন প্রশস্ত ফাঁকা জায়গা পেতেন, তখন দ্রুত চলতেন।

41- আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় সাওম হলো দাঊদ আলাইহিস সালামের নিয়মে সাওম পালন করা। আর আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় সালাত হলো দাঊদ আলাইহিস সালামের নিয়মে সালাত আদায় করা। তিনি রাতের অর্ধাংশ ঘুমাতেন, রাতের এক তৃতীয়াংশ সালাতে দাঁড়াতেন, আর এক ষষ্ঠাংশ আবার ঘুমাতেন। তিনি একদিন সাওম পালন করতেন, আর একদিন বিরত থাকতেন।

42- পাঁচ প্রকার প্রাণী; সবগুলোই ক্ষতিকর। এগুলোকে হারামেও হত্যা করা যাবে। কাক, চিল, বিচ্ছু, ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।

43- জামা, পাগড়ী, পাজামা, টুপি এবং মোজা পরিধান করবে না। কিন্তু জুতা না পেলে চামড়ার মোজা পরতে পারে, তবে টাখনুর নিচ থেকে কেটে ফেলবে। (যাতে মোজা দু’টি পায়ের গিরার নিচে থাকে।) আর কুসুম বা যা’ফরান রঙ্গে রঞ্জিত কোন কাপড় পরিধান করবে না।

44- আমি পরে যা জানতে পেরেছি তা যদি আগে জানতাম, তাহলে কুরবানীর পশু সাথে আনতাম না। আমার সাথে কুরবানীর পশু না থাকলে অবশ্যই ইহরাম ভঙ্গ করতাম।

45- “আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত জন্তু, শূকর ও মূর্তি কেনা-বেচা হারাম করে দিয়েছেন”

46- যখন আমরা সফরে বের হতাম, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে (সফরে) তিনদিন ও তিন রাত মোজা না খোলার আদেশ দিতেন (অর্থাৎ আমরা যেন এই সময়সীমা পর্যন্ত মাসাহ করতে থাকি), কিন্তু বড় অপবিত্রতা (সঙ্গম, বীর্যপাত ইত্যাদি) হেতু অপবিত্র হলে (মোজা খুলতে হবে)। কিন্তু পায়খানা, পেশাব ও ঘুমের কারণে খুলতে হবে না।

47- হে ইয়াযীদ! তোমার জন্য তাই রয়েছে যা তুমি নিয়ত করেছ এবং হে মা‘ন! তুমি যা নিয়েছ তা তোমার জন্য হালাল।

48- আমার উম্মতের ভালো-মন্দ কর্ম আমার কাছে পেশ করা হলো। সুতরাং আমি তাদের ভাল কাজের মধ্যে ঐ কষ্টদায়ক জিনিসও পেলাম, যা রাস্তা থেকে সরানো হয়। আর তাদের মন্দ কর্মসমূহের তালিকায় মসজিদে ঐ কফও পেলাম, যার উপর মাটি চাপা দেওয়া হয় নি।

49- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে (এত দীর্ঘ) কিয়াম করতেন যে, তাঁর পা দু’খানা (ফুলে) ফেটে (দাগ পড়ে) যেত। একদা আমি তাঁকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এরূপ কাজ কেন করছেন? আল্লাহ তো আপনার আগের ও পিছের সমস্ত পাপ মোচন করে দিয়েছেন।’ তিনি বললেন, আমি কি তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হতে পছন্দ করব না?

50- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজ্জাসীর (গায়েবানা) জানাযার সালাত আদায় করেন। আমি দ্বিতীয় বা তৃতীয় কাতারে ছিলাম।

51- আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় জমি হল মসজিদ আর আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণ্য জমি হল বাজার।

52- যুদ্ধ হচ্ছে কৌশল।

53- হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি (আমার প্রথম স্বামী) আবূ সালামাহর সন্তান-সন্ততির ওপর ব্যয় করি, তাতে কি আমি নেকী পাব? আমি তো তাদেরকে এভাবে ছেড়ে দিতে পারছি না, তারা তো আমারই সন্তান।’ তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তাদের ওপর ব্যয় করার দরুন নেকী পাবে।

54- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে তো আমরা এরূপ খাদ্য খুব কমই পেতাম। আর যখন আমরা তা পেতাম, তখন আমাদের হতের কব্জি, হাতের বাহু ও পা ছাড়া কোনো রুমাল ছিল না। তারপর (নতুন) অযু না করেই আমরা সালাত আদায় করতাম।

55- হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত-মৃত, ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, উপস্থিত ও অনুপস্থিত নির্বিশেষে সকলকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মধ্যে যাকে জীবিত রাখবেন তাকে ইসলামের ওপর জীবিত রাখুন এবং আমাদের মধ্যে যাকে মৃত্যু দান করবেন তাকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে এর প্রতিদান থেকে বঞ্চিত করবেন না এবং এর পরে আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন না।

56- হে আল্লাহ! অমুকের পুত্র অমুক আপনার দায়িত্বে ও আপনার প্রতিবেশিত্বের নিরাপত্তায়। অতএব, তাকে আাপনি কবরের পরীক্ষা ও জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। আপনি প্রতিশ্রুতি পালনকারী ও প্রশংসার পাত্র। হে আল্লাহ আপনি তাকে মাফ করুন ও তার প্রতি দয়া করুন। নিঃসন্দেহে আপনি মহাক্ষমাশীল অতি দয়াবান।

57- নিশ্চয় চোখ অশ্রুপাত করছে এবং অন্তর দুঃখিত হচ্ছে, তবুও আমরা সে কথাই বলব, যা আমাদের রব আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবে। হে ইবরাহীম! অবশ্যই আমরা তোমার বিরহে দুঃখিত।

58- জুমু‘আর দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের সামনে খুতবাহ দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি আসলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে অমুক! তুমি কি সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না; তিনি বললেন, উঠ, সালাত আদায় করে নাও।

59- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সফর করেছি। তিনি সফরে (চার রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতে) দু’রাক‘আতের বেশি আদায় করতেন না। আবূ বকর, উমার ও উসমানও এমনই করতেন।

60- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে এক মহিলার জানাযার সালাত আদায় করেছি যিনি নিফাস অবস্থায় মারা গিয়েছিল। তিনি তার জানাযার ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়েছিলেন।

61- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন লোককে সৈন্যদলের আমীর বানিয়ে পাঠান। সে সাথীদের নিয়ে পড়ত, তবে সূরা ইখলাস দ্বারা কিরাত শেষ করতেন।

62- চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দুটি নিদর্শন। কারো মারা যাওয়া বা জন্ম হওয়ার কারণে চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ হয় না। যখন তোমরা তা দেখো আল্লাহকে ডাকো, তাকবীর বলো, সালাত আদায় করো এবং সাদকা করো।

63- আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে ঘুমাতাম।আমার পদদ্বয় তাঁর ক্বিবলার দিকে থাকতো। তিনি যখন সাজদায় যেতেন তখন আমাকে খোঁচা দিতেন। তাতে আমি পা দু’টি গুটিয়ে নিতাম। আর তিনি দাঁড়িয়ে গেলে আমি তা প্রসারিত করতাম। সে সময় ঘরগুলোতে বাতি ছিল না।

64- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বৃষ্টির জন্য দু‘আ করার উদ্দেশ্যে বের হলেন। অতঃপর কিবলামুখী হয়ে দু’আ করলেন। আর নিজের চাদর উল্টিয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি দুই রাকআত সলাত আদায় করলেন। তাতে তিনি উঁচু আওয়াজে কিরাআত পড়লেন।

65- আমি ও ‘ইমরান হুসাইন ‘আলী ইবন আবূ ত্বলিবের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি সাজদাহ্ করার সময় তাকবীর বলেছেন। উঠার সময় তাকবীর বলেছেন এবং দু’ রাক‘আত শেষে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলেছেন।

66- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাদা ইয়ামনী কাপড়সমূহে কাফন দেওয়া হয়েছিল, তাতে কোন জামা ও পাগড়ী ছিল না।

67- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবে সূরা আত-তূর পড়তে শুনেছি।

68- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহুমা খুতবার পূর্বে দুই ঈদের সালাত আদায় করতেন।

69- সফরে দ্রুত চলার সময় আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহর ও ‘আসরের সালাত একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন।

70- হে আবু যার, যখন তুমি ঝোল রান্না করবে, তখন আরও পানি যোগ করবে এবং তোমার প্রতিবেশীদের কাছে যাবে।

71- তোমরা পানাহার করো, দান-খয়রাত করো এবং পরিধান করো অপচয় ও অহংকার মুক্ত হয়ে।

72- আমি কখনো কোন ইমামের পিছনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে অধিক সংক্ষিপ্ত ও পরিপূর্ণ সালাত আদায় করিনি।

73- আমি অবশ্যই তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করবো, বস্তুত আমার উদ্দেশ্য সালাত আদায় করা নয় বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে আমি যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি, তা তোমাদের দেখানোই আমার উদ্দেশ্য।

74- তুমি কেন সূরা আ‘লা, শামস এবং লাইল দ্বারা সালাত আদায় করো না। কারণ, তোমার পিছনে বুড়া, দূর্বল এবং জরুরত আছে এমন সব লোক সালাত আদায় করে।

75- নাজাশী যেদিন মারা যান সেদিন-ই আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মৃত্যুর খবর দেন এবং তাদের নিয়ে জানাযার স্থানে পৌছান, তারপর তাদের কাতারবন্দী করেন ও চার তাকবীর বলেন।

76- আমরা নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে জুমু‘আহর সালাত আদায় করতাম। অতঃপর আমরা ফিরে আসতাম। তখন দেয়ালের একটু ছায়াও দেখতাম না যার ছায়া দ্বারা আমরা ছায়া গ্রহণ করতে পারি।

77- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে দুই খুতবাহ দিতেন। আর তিনি উভয় খুতবার মাঝখানে বসার মাধ্যমে ব্যবধান করতেন।

78- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন সালাত আদায় করেন, অতঃপর খুতবাহ দেন। অতঃপর যবেহ্ করেন এবং তিনি বলেন, সালাতের পূর্বে যে ব্যক্তি যবেহ্ করবে তাকে তার স্থলে আর একটি যবহ্ করতে হবে এবং যে যবেহ্ করেনি, আল্লাহর নামে তার যবেহ্ করা উচিত।

79- সিরকা কতই না চমৎকার তরকারি। সিকা কতই না ভালো দরকারি।

80- “আশ‘আরীগণ যখন জিহাদের ময়দানে অবস্থান করত অথবা মদীনায় তাদের পরিবারের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিত”

81- জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আগমন করল। সে যিনার কারণে গর্ভবতী ছিল।

82- “আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি- সে সব জিনিস হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয়, সব আত্মার খারাবী অথবা হিংসুকের কুদৃষ্টি হতে আল্লাহ আপনাকে মুক্তি দিন, আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি”।

83- ১৭৮৫- আবূ শা’সা’ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (একবার) আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সঙ্গে মসজিদে বসে ছিলাম। (এমন সময়) মুআয্যিন আযান দিল। তখন এক লোক মসজিদ থেকে চলে যেতে লাগল। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন তার মসজিদ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত। অতঃপর আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘এই লোকটি আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাফরমানি করল।’

84- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে (শিকার করা) এক জংলী গাধা উপঢৌকন দিলাম।

85- যখন সালাত আদায় করা অবস্থায় তোমাদের কারো তন্দ্রা আসবে, তখন তার উচিত ঘুমিয়ে যাওয়া, যতক্ষণ না তার ঘুম চলে যাবে।

86- আল্লাহর কসম! তোমরা যে কেউ অন্যায় পন্থায় কোন কিছু গ্রহণ করবে, সে কিয়ামতের দিন তা বয়ে নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে

87- তাকে ছেড়ে দাও এবং তার পেশাবের উপর এক কলস অথবা এক বালতি পানি ঢেলে দাও। কেননা তোমাদেরকে সহজ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরতা করার জন্য পাঠানো হয় নি।

88- তার কিছু্ বাকী নেই? অর্থাৎ বকরির। তিনি বললেন, কাঁধ ছাড়া কিছু্ই বাকী নেই, তিনি বললেন, সবই বাকী আছে, কাঁধ ছাড়া।

89- আমি নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সালাত আদায় করতাম। তাঁর সালাতও মধ্যম ধরনের হতো এবং তাঁর খুৎবাও মধ্যম ধরনের হতো।

90- “মুহাম্মাদের পরিবারে কাছে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। সুতরাং যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম নয়”।

91- যখনই কোনো মহিলা দুনিয়াতে নিজ স্বামীকে কষ্ট দেয়, তখনই তার সুনয়না হূর স্ত্রী (অদৃশ্যভাবে) ঐ মহিলার উদ্দেশ্যে বলে, ‘আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুন। তাকে কষ্ট দিও না। সে তো তোমার নিকট সাময়িক মেহমান মাত্র। অচিরেই সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে এসে যাবে।

92- (আল্লাহর পথে) খরচ করো, আর হিসাব করতে যেওনা, তাহলে আল্লাহ্ তোমার বেলায় হিসাব করে দিবেন। জমা করে রাখবে না, তবে আল্লাহও তোমার বেলায় জমা করে রাখবেন।

93- “আমি যদি কাউকে কারো জন্য সাজদাহ করার আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সাজদাহ করে।”

94- তোমাদের কারও জন্য উচিৎ হবে সে যেন কর্ম সচেতন থাকা কালে সালাত আদায় করে। অতঃপর সে যখন শ্রান্ত হয়ে পড়বে, তখন সে যেন শুয়ে যায়।

95- “কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্যে সঙ্গত নয়, তার কাছে ওয়াসিয়্যাত করার মতো সম্পদ আছে এমতাবস্থায় ওয়াসিয়্যাত লিখিত না রেখে তিন রাত অতিবাহিত করা”

96- কৃপণ ও দানশীল ব্যক্তির উদাহরণ এমন দু’ব্যক্তির ন্যায়, যারা বুক থেকে উভয় কণ্ঠাস্থি পর্যন্ত আঁটসাঁটভাবে লৌহ বর্ম পরিহিত।

97- লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে যায়, বসে এবং তার সাওম সমাপ্ত করে।

98- যে তার হুবহু মাল এমন লোকের কাছে পেল, যে নিঃশ্ব হয়ে গেছে, সেই তার বেশি হকদার অন্যের চাইতে।

99- যে তাবীর (পরাগায়ন) করার পরে খেজুর গাছ বিক্রি করল তার ফল হবে বিক্রেতার জন্যে, অবশ্য ক্রেতা যদি (ফলের) শর্ত করে তবে সে পাবে।

100- থামো! তোমরা সাধ্যমত আমল কর। আল্লাহর কসম! আল্লাহ ক্লান্ত হন না, যতক্ষণ না তোমরা ক্লান্ত হয়ে পড়।” আর সেই আমলই তাঁর নিকট প্রিয়তম, যেটা ব্যক্তি লাগাতার করে।