1- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করেছি। তিনি তার ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখলেন তার বুকের উপর।

2- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর ও উমার সালাতকে আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দ্বারা শুরু করতেন।

3- তবে এ ব্যক্তি উত্তম বস্তু দ্বারা তার হাত পরিপূর্ণ করেছে।

4- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’ রাক‘আতে সূরাহ্ ফাতিহার সঙ্গে আরও দু’টি সূরাহ্ পাঠ করতেন। আর শেষের দুই রাকা‘আতে সূরা ফাতিহা পড়তেন। আর তিনি আমাদের তিলাওয়াত শুনাতেন।

5- আমরা যুহর ও আসরের সালাতে রাসূলে কিয়ামের সময় অনুমান করলাম। যুহরের প্রথম দুই রাকা‘আতে তার কিয়াম ছিল আলিফ লাম মীম সাজদাহ তিলাওয়াত করার সময় পরিমাণ। আর শেষের দুই রাকা‘আতে তার কিয়াম ছিল তার অর্ধেক।

6- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্য অমুকের মতো আর কারো পিছনে আমি সালাত আদায় করিনি। আমরা সেই লোকের পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যুহরের প্রথম দুই রাকা‘আত দীর্ঘ করতেন এবং পরের দুই রাকা‘আত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরকে হালকা করতেন এবং মাগরিবে ছোট সূরাসমূহ (কিসারে মুফাসসাল) পড়তেন। আর এশার সালাতে সূরা শামছ ওয়াদোহাহা ও এ ধরনের সূরা পড়তেন। ফজরের সালাতে দুইটি লম্বা সূরা পড়তেন।

7- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আরাইহি ওয়াসাল্লামকে মাগরিবের সালাতে সূরাহ তূর তিলাওয়াত করতে শুনেছি। যখন এ আয়াতে পৌঁছলেন (অনুবাদ): “তারা কি সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তা? তারা কি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে বরং তারা বিশ্বাস করে না। নাকি তাদের কাছে রয়েছে তোমার রবের ভান্ডারসমূহ না তাঁরাই ক্ষমতাশালী।” (সূরা তূর, আয়াত: ৩৫-৩৮), তখন আমার অন্তর উড়ে যাওয়ার উপক্রম হলো।

8- হে লোক সকল! মুসলিম ব্যক্তি যে ভালো স্বপ্ন দেখে অথবা তাকে যে ভালো স্বপ্ন দেখানো হয়, তা ব্যতীত নবুয়াতের সুসংবাদের কিছুই অবশিষ্ট নাই। আর জেনে রেখ যে, আমাকে রুকু অথবা সেজদাবস্থায় কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব তোমরা রুকুতে রবের বড়াই বর্ণনা কর (অর্থাৎ, ‘সুবহানা রাব্বিয়্যাল আযীম’ পড়)। আর সিজদায় দুআ করতে সচেষ্ট হও। কারণ, তোমাদের সে দুআ কবূল হওয়ার উপযুক্ত।”

9- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাত এবং রুকূ ছিল যখন তিনি রুকূ ও সেজদাহ থেকে মাথা তুলতেন এবং দুই সেজদার মাঝখানে বসতেন প্রায় সমান সময়।

10- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রুকূ করতেন তখন আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে দিতেন এবং যখন সেজদা করতেন তখন তার আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখতেন।

11- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালাতের বেজোড় রাক‘আতে (সাজ্দাহ হতে) উঠে স্থীর না বসে দাঁড়াতেন না।

12- বনু সুলাইমের কয়েকটি বস্তির ওপর বদ দো‘আ করার জন্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ‘র পরে এক মাস ব্যাপী কুনূত পাঠ করেছেন। তিনি বলেন, তিনি চল্লিশ —রাবী সন্দেহ করছেন অথবা সত্তর জন — কারীকে মুশরিকদের কতক লোকের নিকট পাঠান। এরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং তাদেরকে হত্যা করে। অথচ তাদের মাঝে ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে চুক্তি ছিল। তিনি তাদের থেকে যে কষ্ট পেলেন আর কারো কাছ থেকে এত কষ্ট পেতে আমি দেখিনি।

13- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সম্প্রদায়ের জন্য দো‘আ বা বদ-দো‘আ করা ছাড়া কুনূত পড়তেন না।

14- হে পিতা! আপনি অবশ্যই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবূ বকর, ‘উমার ও ‘উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম-এর পিছনে সালাত আদায় করেছেন এবং এই কুফায় ‘আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর পেছনে প্রায় পাঁচ বছর সালাত আদায় করেছেন। তাঁরা কি ফজরের সালাতে দু‘আ কুনূত পড়তেন? তিনি বলেন, হে বৎস! এটা তো বিদ্আত।

15- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদ পড়ার জন্য বসতেন তখন ডান হাত ডান উরুর ওপর এবং বাঁ হাত বাঁ উরুর ওপর রাখতেন। আর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। এই সময় তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি মধ্যমার সাথে সংযুক্ত করতেন এবং বাঁ হাত তার হাঁটুকে গিলে ফেলত (লোকমা বানিয়ে ধরে রাখত)।

16- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তাশাহুদ এমনভাবে শেখাতেন যেমনটি তিনি কুরআনের সূরা শেখাতেন।

17- যদি তুমি সক্ষম হও যমীনে সালাত আদায় করো, অন্যথায় তুমি ইশারা করো আর তুমি তোমার সেজদাকে রুকূ থেকে বেশি নীচা করো।

18- যিয়াদ বিন আলাকাহ বলেন, মুগীরাহ বিন শু‘বা একদা আমাদের সালাতে ইমামতি করলেন। তিনি দুই রাকআতের পর দাঁড়িয়ে গেলে আমরা বললাম সুবহানাল্লাহ। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ এবং সালাত চালিয়ে গেলেন। যখন সালাত শেষ করলেন এবং সালাম ফিরালেন এবং দুটি সেজদা সাহু করলেন। তারপর যখন তিনি সালাত শেষ করে ঘুরে বসলেন, তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি এমনটি করতে দেখেছি।

19- আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাদের কাছে সূরা ইনশিকাক তিলাওয়াত করলেন। তিনি এতে সিজদা দিলেন। অতপর সিজদা শেষে তিনি বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সূরা তিলাওয়াত করে সিজদা দিয়েছেন।

20- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট সূরাহ্ ওয়ান্ন নাজ্ম তিলাওয়াত করা হল কিন্তু তাতে তিনি সাজদাহ্ করেননি।

21- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম, সূরা হজে কি দুটি সেজদাহ রয়েছে? সে বলল, হ্যাঁ। আর যে ব্যক্তি সেজদাহ দুইটি না করবে সে যেন সে দুটি তিলাওয়া না করে।

22- যখন কোন খুশীর খবর আসতো বা তাঁকে কোন সুসংবাদ দেওয়া হতো, তখনই তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে শোকর-সূচক সিজদা আদায় করতেন।

23- আব্দুল্লাহ মুযানী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা মাগরেবের পূর্বে (দু’ রাকআত) নামায পড়।” অতঃপর বললেন, “যার ইচ্ছা হবে মাগরিবের পূর্বে দু’রাকাত সালাত পড়বে”। মানুষ এটাকে সুন্নত হিসেবে গ্রহণ করতে পারে আশঙ্কায়। সুনানু আবূ দাউদ, এটা তারই শব্দ, তবে বুখারীতে অনুরূপ হাদীস রয়েছে।

24- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করল, তখন তিনি মিম্বারে ছিলেন— আপনি রাতের সালাত কীভাবে আদায় করতে বলেন? তিনি বললেন, দু’রাক‘আত দু’রাক‘আত করে আদায় করবে। যখন তোমাদের কারো ভোর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তখন সে আরো এক রাক‘আত আদায় করে নিবে। আর এটি তার পূর্ববর্তী সালাতকে বিতর করে দেবে।

25- বিতরের সালাত প্রমাণিত (ওয়াজিব)। অতএব, যে ইচ্ছা করবে সে সাত রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে পাঁচ রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে তিন রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে, আর যে ইচ্ছা করবে সে এক রাক‘আত দ্বারা বিতর আদায় করবে।

26- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে বিতির ও আট রাকা‘আত পড়তেন। তারপর যখন পরবর্তী রাত আসলো আমরা মসজিদে একত্র হলাম এবং আশা করছিলাম যে, তিনি আমাদের মাঝে বের হয়ে আসবেন। আমরা সকাল পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করলাম।

27- আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “হে আব্দুল্লাহ! তুমি অমুক লোকের মতো হয়ো না, যে রাতে নফল সালাত পড়ত, অতঃপর তা ছেড়ে দিয়েছে।

28- আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে কুরআনের ধারকগণ! তোমরা বিতির পড়। নিশ্চয় আল্লাহ বিতর (বিজোড়) তিনি বিতরকে (বিজোড়কে) ভালবাসেন। সুনানে আবূ দাউদ

29- এক রাতে দুইবার বিতির নাই।

30- যে ব্যক্তি ঘুমানোর কারণে বিতর সালাত আদায় করতে পারেনি অথবা তা আদায় করতে ভুলে যায়, পরে স্মরণ হওয়া মাত্রই যেন তা আদায় করে নেয়।

31- যায়দ ইবন আরকাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একদা তিনি একদল লোককে পূর্বাহ্নের (চাশতের) সালাত পড়তে দেখলেন। তিনি বললেন, ‘যদি ওরা জানত যে, নামায এ সময় ছাড়া অন্য সময়ে পড়া উত্তম। আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আওয়াবীন (আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী)দের নামায যখন উঁটের বাচ্চার পা বালিতে গরম অনুভব করে।”

32- এমন করবে না, যখন তোমাদের কেউ তার ঘরে সালাত আদায় করে তারপর সে ইমামকে পেল যে, সে এখনো সালাত আদায় করেনি, তাহলে সে যেন তার সাথে পূণরায় সালাত আদায় করে। কারণ, তা তার জন্য নফল হবে।

33- হে লোক সকল! তোমরা মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি কর। অতএব যে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করবে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাদের মধ্যে রোগী, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকও থাকে।

34- জামা‘আতের ইমামতি ঐ ব্যক্তি করবে, যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল কুরআন পড়তে জানে।

35- হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে নূর (বা আলো) দান করুন, আমার চোখে নূর দান করুন, আমার শ্রবণশক্তিতে নূর দান করুন, আমার ডানে নূর দান করুন, আমার বামে নূর দান করুন, আমার উপরে নূর দান করুন, আমার নিচে নূর দান করুন, আমার সামনে নূর দান করুন, আমার পেছনে নূর দান করুন, আমার জন্য নূর দান করুন।

36- আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এবং একজন ইয়াতীম আমাদের ঘরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করি। আর আমার মা উম্মে সুলাইম আমাদের পিছনে। সহীহ বুখারী।

37- আল্লাহ তোমার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিন, তবে তুমি এমন আর করো না।

38- উম্মু ওয়ারাকাহ বিনত আব্দুল্লাহ ইবনু হারেস আল-আনসারিয়্যাহ যিনি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দেন যেন সে তার ঘরের লোকদের ইমামতী করে।

39- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবন উম্মে মাকতুমকে প্রতিনিধি বানিয়েছেন, যে মানুষদের ইমামতি করত, অথচ তিনি অন্ধ ছিলেন।

40- বিদায় হজে নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আমাকে নিয়ে হজ করা হয়েছে। আমি তখন সাত বছরের ছেলে।’

41- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনে চড়ে হজ সমাধা করেন। আর ঐ বাহনটিই ছিল প্রয়োজনীয় যাবতীয় সাজ-সরঞ্জামের বাহক।

42- উক্কায, মাজিন্নাহ ও যুল-মাজায নামক স্থানগুলো (ইসলামপূর্ব) জাহেলী যুগের বাজার ছিল। ফলে সাহাবায়ে কেরাম সে মৌসুমগুলোতে ব্যবসা করাকে পাপ মনে করলেন। তার বৈধতার জন্যে অবতীর্ণ হলো, যার অর্থ, “(হজের সময়) তোমাদের জন্য তোমাদের রবের অনুগ্রহ কামনা (ব্যবসা-বাণিজ্যে) করায় কোনো দোষ নেই।

43- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণীমতের মাল ঘোড়ার জন্য দুই অংশ এবং পুরুষের জন্য এক অংশ বন্টন করেন।

44- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৈন্যদলে যাদের পাঠাতেন তাদের কতককে সাধারণ সৈন্যের অংশ ব্যতিত অতিরিক্ত বিশেষ গণীমত প্রদান করতেন।

45- বনী নাযীরের ধন-সম্পদ ছিল আল্লাহর রাসূলের ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ যাতে মুসলিমগণ কোন উট বা ঘোড়া দোড়াতে হয়নি। তাই তা ছিল কেবল আল্লাহর রাসূলেন জন্য খাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালা তার পরিবারের এক বছরের খরচা আলাদা করে রাখতেন। তারপর অবশিষ্ট সম্পদ আল্লাহর রাস্তার প্রস্তুতি ও ঘোড়ার মধ্যে ব্যয় করতেন।

46- আমরা রাসূলুল্লাহুর সাথে সাতটি যুদ্ধ টিড্ডি (ফড়িং) খেতে খেতে করেছি।

47- নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাত্হায় অবস্থিত সানিয়্যা ‘উলয়ার কাদা নামক স্থান দিয়ে মাক্কায় প্রবেশ করেন এবং সানিয়্যা সুফলার দিক দিয়ে বের হন।

48- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মদীনা থেকে বাইরে গমনকালে) শাজারা নামক জায়গার রাস্তা ধরে বের হতেন এবং ফিরার সময় (যুল হুলাইফার) মুআর্রাস মসজিদের পথ ধরে (মদীনায়) প্রবেশ করতেন। অনুরূপ যখন তিনি মক্কায় প্রবেশ করতেন তখন আস্-সানিয়াতুল উল্ইয়ার পথ হয়ে। আর যখন বের হতেন তখন আস্-সানিয়াতুস সুফলার পথ হয়ে বের হতেন।

49- তোমরা তোমাদের পরবিারের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মাঝেই বসবাস কর । তাদেরকে শিক্ষা দান কর এবং তাদেরকে (ভাল কাজের) আদেশ দাও। অমুক সালাত অমুক সময়ে পড়। অমুক সালাত অমুক সময়ে পড়। সুতরাং যখন সালাতের সময় হবে তখন তোমাদের মধ্যে কেউ একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে বড় সে ইমামতি করবে।

50- মুতআর আয়াত —অর্থাৎ হজ্জে তামাত্তুর আয়াত নাযিল হলো। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করার জন্য আমাদের আদেশ দিলেন। তারপর এমন কোন আয়াত নাযিল হয়নি যা হজ্জে তামাত্তকে রহিত করে। এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমৃত্যু তা থেকে নিষেধ করেননি।

51- ইবন আব্বাসকে মুত‘আ (তামাত্তু হজ্জ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম? তিনি তা করতে আমাকে আদেশ দেন। আর আমি তাকে হাদী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম? তিনি বলেন, তাতে উট, অথবা গরু অথবা ছাগল অথবা একটি জন্তুর রক্তে অংশিদার। তিনি বলেন: কতক মানুষ তা অপছন্দ করেছে।

52- মুহরিম শিকারকৃত জন্তুর গোস্ত ভক্ষণ করল যা তার জন্যে শিকার করা হয়নি এবং শিকার করতে সে সাহায্যও করে নি।

53- একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইইহ ওয়াসাল্লামের যুগে র্সূযগ্রহণ হল, তখন তিনি ভীত অবস্থায় উঠলনে ও কিয়ামত সংঘটিত হবার ভয় করতে লাগলেন, অবশেষে তিনি মাসজিদে আসেন ও দাঁড়িয়ে যান এবং সবচেয়ে দীর্ঘ কিয়াম ও সাজদা দ্বারা সালাত আদায় করেন। আমি কখনো তাকে তার সালাতে এরূপ করতে দেখেনি। অতঃপর তিনি বললেন, এগুলো হল নিদর্শন যা আল্লাহ্ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না। বরং আল্লাহ্ তা‘আলা এর মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। কাজেই যখন তোমরা এর কিছু দেখতে পাবে, তখন ভীত অবস্থায় আল্লাহর যিকির, দু‘আ ও ইস্তিগ্ফারের দিকে ধাবিত হবে।

54- আমাদের পূর্বে কারো জন্য গণীমতের মাল হালাল ছিল না। পরে আল্লাহ তা‘আলা যখন আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা দেখলেন, তখন আমাদের জন্য তা হালাল করে দিলেন।

55- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি যখন তিনি মক্কায় আগমন করেন তাওয়াফের শুরুতে হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেন এবং প্রথম তিন চক্করে রমল করেন।

56- হে আল্লাহর রাসূল! আমি এখনও ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, এমন কি সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করিনি। অতঃপর আমরা উঠে বুতহানের দিকে গেলাম। সেখানে তিনি সালাতের জন্য উযূ করলেন এবং আমরাও উযূ করলাম; অতঃপর সূর্য ডুবে গেলে ‘আসরের সালাত আদায় করেন, তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করেন।

57- উহুদের যুদ্ধ যখন সংঘটিত হয়। রাতে আমাকে আমার পিতা ডেকে বললেন, ‘আমার মনে হয় যে, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহচরবৃন্দের মধ্যে যাঁরা সর্বপ্রথম শহীদ হবেন, আমিও তাঁদের অন্তর্ভুক্ত। আর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর, তোমাকে ছাড়া ধরাপৃষ্ঠে প্রিয়তম আর কাউকে ছেড়ে যাচ্ছি না। আমার উপর ঋণ আছে, তা পরিশোধ ক’রে দেবে। তোমার বোনদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।’

58- হে আল্লাহর রাসূল! লোকদের কী হল, তারা ‘উমরাহ শেষ করে হালাল হয়ে গেল, অথচ আপনি ‘উমরাহ হতে হালাল হচ্ছেন না? তিনি বললেন, আমি মাথায় আঠালো বস্তু লাগিয়েছি এবং কুরবানীর জানোয়ারের গলায় মালা ঝুলিয়েছি। কাজেই কুরবানী করার পূর্বে হালাল হতে পারি না।

59- আমি আমার খালা মায়মুনার নিকট রাত্রি যাপন করলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে সালাতে দাঁড়ালেন, আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম, তিনি আমার মাথা ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন।

60- আল্লাহ তা‘আলা তাদের ঘর ও কবরসমূহ আগুন দিয়ে ভরে দিক। যেমনিভাবে তারা আমাদেরকে মধ্যবর্তী সালাত থেকে বিরত রাখছে, এমনকি সূর্য ডুবে গেল।

61- সাবাস! সেটা তো খুব লাভজনক সম্পদ, সেটা তো খুব লাভজনক সম্পদ। তোমার কথা আমি শুনেছি। তবে আমি ভাল মনে করছি সেটা তুমি নিকট আত্মীয়দের মধ্যেই বণ্টন কর।

62- মক্কা বিজয়ের বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় (মক্কায়) প্রবেশ করেছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিরস্ত্রাণটি মাথা থেকে খোলার পর এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বললেন, ইবন খাতাল কা‘বার গিলাফ ধরে আছে। তিনি বললেন, তাকে তোমরা হত্যা কর।

63- হে উমার! তুমি কি উপলব্ধি করছো না যে, কোনো ব্যক্তির চাচা তার পিতার সমতুল্য?

64- মুহরিম অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কীভাবে তাঁর মাথা ধৌত করতেন? আবূ আইউব রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় হাতকে কাপড়ের ওপর রেখে তা সরালেন। এতে আমার সামনে তার মাথা উন্মুক্ত হলো। অতঃপর যে লোকটি তার শরীরে ঢালছিল তাকে বললেন, পানি ঢালো। সে তাঁর মাথায় পানি ঢালল। অতঃপর তিনি দু’হাত দিয়ে মাথা নাড়া দিয়ে হাত দু’টি একবার সামনে আনলেন আবার পেছনের দিকে টেনে নিলেন। এরপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এভাবে গোসল করতে দেখেছি।

65- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আমরা হজ্জের তালবিয়া পাঠ করতে করতে মক্কায় উপনীত হলাম। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে আমরা হজ্জকে উমরায় পরিণত করলাম।

66- নিশ্চয় মানুষের রক্তের শিরায় শয়তান চলাচল করে। আমি শংকাবোধ করছিলাম যে, সে তোমাদের মনে কোন খারাপ ধারণা অথবা বললেন অন্য কিছু সৃষ্টি করে দেবে।

67- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো। তখন আমার চেহারার উপর দিয়ে মাথার উকুন ঝরে পড়ছিল। তিনি বললেন, আমি মনে করতাম না যে, তোমার কষ্ট এই পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তুমি কি একটি বকরীর ব্যবস্থা করতে পারবে? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে তুমি তিনদিন সিয়াম পালন কর অথবা ছয়জন মিসকীনকে খাবার প্রদান করো অর্থাৎ তাদের প্রত্যেককে অর্ধ সা খাবার প্রদান করো।

68- সাজদা সাহু বিষয়ে যুল ইয়াদাইনের হাদীস

69- শহীদ হলো পাঁচ প্রকার: মহামারীতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধসে মৃত, আর হলো আল্লাহর রাস্তায় শহীদ।

70- যাতুররিকা‘ যুদ্ধে সালাতুল খাওফ আদায়ের পদ্ধতি

71- আকরা, হালকা (বিরক্তি প্রকাশক শব্দ), সেকি কুরবানির দিন তাওয়াফ করেছে? বলা হলো হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে রওয়ানা দাও।

72- এক ব্যক্তি উপবনে হাঁট ছিল।

73- সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমলসমূহ উপস্থাপন করা হয়। আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলসমূহ (সিয়াম অবস্থায়) তুলে ধরা হোক।

74- তিনি ফজরের শেষ রাকা‘আতে রুকু‘ থেকে মাথা উঠিয়ে سَمِعَ الله لمن حَمِدَه رَبَّنا ولك الحَمْدُ বলার পর বলেন, “হে আল্লাহ তুমি অমুক অমুককে ধ্বংস কর”। তারপর আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন, “এ বিষয়ে তোমার কোন অধিকার নেই”। আলে-ইমরান: (১২৮)

75- সালাতুল খাওফের পদ্ধতি যেমনটি তা বর্ণনা করেছেন যাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু

76- জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করাও জিহাদের মতো।

77- ‘আমর ইবন আবাসার ইসলাম গ্রহণের কাহিনী এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সালাত ও অযু শিক্ষা দেওয়ার ঘটনা।

78- আল্লাহ মক্কা থেকে হস্ত বাহিনীকে বিরত রেখেছেন। তার ওপর তার রাসূল ও মু’মিনদের বিজয়ী করেছেন। আর এ শহর আমার পূর্বে কারো জন্য বৈধ ছিল না এবং আমার পরে কারো জন্য বৈধ নয়। আর আমার জন্যও দিনের কিছু সময়ের জন্য বৈধ করা হয়েছে। আর তা হলো এ সময়টুকু।

79- কোনো এক দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাতুল খাওফ আদায় করেন। তখন এক জামা‘আত তার সাথে সালাতে দাড়ালো এবং অপর জামা‘আত দুশমনের মুকাবালায় দাড়ালো। যারা তার সাথ ছিল তাদের নিয়ে তিনি এক রাকা‘আলা আদায় করলেন। অতঃপর তারা চলে গেল এবং অন্যরা আসলো। তারপর তাদের নিয়ে এক রাকা‘আত আদায় করলেন। আর উভয় জামা‘আত এক রাকা‘আত এক রাকা‘আত নিজেরা আদায় করে নিল।

80- হে আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবন আবূ রাবী‘আকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! সালামাহ ইবন হিশামকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবন ওয়ালীদকে রক্ষা কর। হে আল্লাহ! দুর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি কর। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের ওপর তোমার শাস্তি কঠোর করে দাও। হে আল্লাহ! ইউসুফ আলাইহিস সালামের সময়ের দুর্ভিক্ষের মতো তাদেরকে করে দিন।

81- কতিপয় কুরাইশ প্রায় গাধার সমান তাদের একটি বকরী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে দিয়ে টেনে হিঁচড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন: যদি তোমরা এর চামড়া গ্রহণ করতে। তারা বললো: এটা তো মৃত। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “পানি এবং ছলম বৃক্ষের পাতার রস (কারাজ) এটাকে পবিত্র করে দেয়।

82- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাত্র ফেটে গিয়েছিল, ফলে তিনি ফাটা স্থানে রুপার একটি টুকরা দিয়ে জোড়া লাগান।

83- চোখ দু’টো হলো গুহ্যদ্বার বেধে রাখার রশি স্বরূপ। সুতরাং চোখ দু’টি যখন ঘুমায় তখন রশির বন্ধন খুলে যায়।

84- ১৮৬৫- আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “একটি লোক বলল, ‘(আজ রাতে) আমি অবশ্যই সাদকাহ করব।’ সুতরাং সে আপন সাদকার বস্তু নিয়ে বের হল এবং (অজান্তে) এক চোরের হাতে তা দিয়ে দিল। লোকেরা সকালে উঠে বলাবলি করতে লাগল যে, ‘আজ রাতে এক চোরের হাতে সাদকা দেওয়া হয়েছে।’ সাদকাকারী বলল, ‘হে আল্লাহ! তোমারই যাবতীয় প্রশংসা! (আজ রাতে) অবশ্যই আবার সাদকা করব।’ সুতরাং সে নিজ সাদকা নিয়ে বের হল এবং (অজান্তে) এক বেশ্যার হাতে তা দিয়ে দিল। সকাল বেলায় লোকেরা বলাবলি করতে লাগল যে, ‘আজ রাতে এক বেশ্যাকে সাদকা দেওয়া হয়েছে।’ সে তা শুনে আবার বলল, ‘হে আল্লাহ! তোমারই প্রশংসা যে, বেশ্যাকে সাদকা করা হল। আজ রাতে পুনরায় অবশ্যই সাদকাহ করব।’ সুতরাং তার সাদকা নিয়ে বের হয়ে গেল এবং (অজান্তে) এক ধনী ব্যক্তির হাতে সাদকা দিল। সকাল বেলায় লোকেরা আবার বলাবলি করতে লাগল যে, ‘আজ এক ধনী ব্যক্তিকে সাদকা দেওয়া হয়েছে।’ লোকটি শুনে বলল, ‘হে আল্লাহ! তোমারই সমস্ত প্রসংশা যে, চোর, বেশ্যা তথা ধনী ব্যক্তিকে সাদকা করা হয়েছে।’ সুতরাং তাকে বলা হল যে, ‘(তোমার সাদকা ব্যর্থ যায়নি; বরং) তোমার যে সাদকা চোরের হাতে পড়েছে তার দরুন হয়তো চোর তার চৌর্যবৃত্তি ত্যাগ ক’রে দেবে। বেশ্যা হয়তো তার দরুন তার বেশ্যাবৃত্তি ত্যাগ করবে। আর ধনী; সম্ভবতঃ সে উপদেশ গ্রহণ করবে এবং সে তার আল্লাহ প্রদত্ত ধন-সম্পদ আল্লাহর রাহে ব্যয় করবে।” এই শব্দে হাদিসটি বুখারী বর্ণনা করেছেন, আর মুসলিম বর্ণনা করেছেন তার অর্থ।

85- আজকের পরে তোমরা আমার ভাইয়ের জন্য কাঁদবে না।

86- নু’মান ইবন বাশীর —রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা— কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু (একবার) অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাঁর বোন কান্না করতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, ‘ও (আমার) পাহাড় গো! ও আমার এই গো! ও আমার ওই গো!’ এভাবে তাঁর একাধিক গুণ বর্ণনা করতে লাগলেন। সুতরাং যখন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন, তখন বললেন, ‘তুমি যা কিছু বলেছ, সে সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছিল যে, তুমি ঐরূপ ছিলে নাকি?’ (বুখারী)

87- তারা কাযা করবে না। রাসূলের স্ত্রীদের মধ্যে কেউ নিফাস /প্রসূতি অবস্থায় চল্লিশ দিন বসে থাকত, কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিফাসের সালাত কাযা করার নির্দেশ দিতেন না।

88- আল্লাহ তা’আলা এটা আদামের কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তুমি হাজ্জ পালনকারীগণ যা করে তাই কর কিন্তু পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করো না।

89- তারা তাকে হত্যা করেছে, আল্লাহ তাদের হত্যা করুন। যখন তারা জানত না তারা কেন জিজ্ঞাসা করল না। অবশ্যই অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। তার জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল অথবা সে তার জখমের উপর একটি পট্টি বেঁধে নিত, অতঃপর তার উপর মাসাহ করত এবং পুরো দেহ ধুয়ে নিত।

90- তুমি সুন্নাতকে যথাযথ অনুসরণ করছ, তোমার সালাত হয়ে গেছে।

91- পবিত্র মাটি একজন মুসলিমের পবিত্রতা যদিও দশ বছর পর্যন্ত হয়, যখন তুমি পানি পাবে তখন পানিই স্পর্শ করবে, কারণ সেটাই কল্যাণকর।

92- হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি তার স্ত্রী থেকে তাড়াতাড়ি পৃথক হয়ে গেলে এবং ধাতু নির্গত না হলে তার কী হুকুম (সে গোসল করবে কি-না)? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “পানি পানির ফলেই ফরয হয়।”

93- তোমরা ফজরের সালাত সকাল করে আদায় কর। কারণ, তা তোমাদের সাওয়াবের দিক বিবেচনায় অধিক। অথবা সাওয়াবের জন্য মহান।

94- আমি বিলালকে দেখলাম আবতাহ নামক স্থানে বের হল ও আযান দিল। যখন সে হাইয়া আলাস সালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ পৌঁছলো তার গর্দানকে ডানে ও বামে ঘুরালো তবে সে নিজে ঘুরেনি।

95- মু’আজ্জিন আযানের বিষয়ে অধিক ক্ষমতা রাখেন আর ইমাম ইকামাতের ব্যাপারে অধিক ক্ষমতা রাখেন।

96- সা‘ঈদ ইব্নু হারিস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ-কে একটি কাপড়ে সালাত আদায় করা সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে কোন এক সফরে বের হয়েছিলাম। এক রাতে আমি কোন দরকারে তাঁর নিকট গেলাম। দেখলাম, তিনি সালাতে রত আছেন। তখন আমার শরীরে মাত্র একখানা কাপড় ছিল। আমি কাপড় দিয়ে শরীর জড়িয়ে নিলাম আর তাঁর পার্শ্বে সালাতে দাঁড়ালাম। তিনি সালাত শেষ করে জিজ্ঞেস করলেন, জাবির! রাতের বেলা আসার কারণ কী? তখন আমি তাঁকে আমার প্রয়োজনের কথা জানালাম। আমার কাজ শেষ হলে তিনি বললেন, এ কিরূপ জড়ানো অবস্থায় তোমাকে দেখলাম? আমি বললাম, কাপড় একটিই ছিল (তাই এভাবে করেছি)। তিনি বললেন, কাপড় যদি বড় হয়, তাহলে শরীরে জড়িয়ে পরবে। আর যদি ছোট হয় তাহলে লুঙ্গি হিসেবে ব্যবহার করবে। সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় বর্ণিত: যদি বড় হয় তবে তার দুই কিনারা দুই দিকে ছাড়বে। আর যদি ছোট হয় তাহলে সেটি তোমার কোমরে বেঁধে নিবে।”

97- এই সালাত এমন তাতে লোকেদের কোনো কথা যথাযথ নয়। (এতে যা বলতে হয়,) তা হল তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠ।”

98- বিলাল সুবহে সাদিকের পূর্বে (ফজরের সালাতের) আযান দিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরে গিয়ে বলতে নির্দেশ দিলেন : “জেনে রাখ! বান্দা ঘুমিয়ে ছিল। জেনে রাখ! বান্দা ঘুমিয়ে ছিল।”

99- যখন তোমাদের কেউ সালাতে দাড়ায়, অবশ্যই রহমত তার সম্মূখীন হয়। সতুরাং সে যেন পাথর দূর না করে।

100- মসজিদে হদ্দ (শরী‘আতের শাস্তি) কার্যকর করা যাবে না এবং তাতে কিসাস কার্যকর করা যাবে না।