যিকিরের ফযীলত

যিকিরের ফযীলত

1- নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মহান রব থেকে বর্ণনা করে বলেছেন: “@জনৈক বান্দা পাপ করে বলল, হে আমার রব! আমার পাপ মার্জনা করে দাও*। তারপর আল্লাহ তা‘আলা বললেন: আমার বান্দা পাপ করেছে এবং সে জানে যে, তার একজন রব আছে, যিনি পাপ মার্জনা করেন এবং পাপের কারণে ধরেন। এ কথা বলার পর সে আবার পাপ করে এবং বলে, হে আমার রব ! আমার পাপ ক্ষমা করে দাও। তারপর আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার এক বান্দা পাপ করেছে এবং সে জানে যে, তার একজন রব আছে যিনি পাপ মার্জনা করেন এবং পাপের কারণে তাকে ধরবেন। তারপর সে পুনরায় পাপ করে বলে, হে আমার রব! আমার পাপ মাফ করে দাও। এ কথা শুনে আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় বলেন, আমার বান্দা পাপ করেছে এবং সে জানে যে, তার একজন রব আছে, যিনি বান্দার পাপ মার্জনা করেন এবং পাপের কারণে পাকড়াও করেন। তারপর আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে বান্দা! এখন যা ইচ্ছা তুমি আমল করো। আমি তোমার গুনাহ মাফ করে দিয়েছি।”

4- “মুওয়াযযিন যখন ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে, তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তখন তার জবাবে বলেঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার*’। যখন মুওয়াযযিন বলে ‘আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ এর জবাবে সেও বলেঃ ‘আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লাহ’ এর জবাবে সে বলেঃ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লাহ’। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ ‘হাইয়্যা আলাস সলাহ’ এর জবাবে সে বলেঃ ‘লা-হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ ‘হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ’ এর জবাবে সে বলেঃ ‘লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহ’। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ এর জবাবে সে বলেঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’। অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ এর জবাবে সে বলেঃ ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’। আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে জান্নাতে যাবে”।

5- রাসূলুল্লাহ একবার তাঁর সাহাবীদের একটি হালাকার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “কিসে তোমাদেরকে উপবেশন করিয়েছে?” তারা জবাব দিয়েছিলেন: আমরা আল্লাহর যিকির করব ও তিনি আমাদেরকে ইসলামের পথ দেখিয়েছেন এবং আমাদেরকে এর মাধ্যমে নি‘আমাত প্রদান করেছেন এ কারণে তাঁর প্রশংসা করার জন্য বসেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “এটা ব্যতীত অন্য কোন কিছুই তোমাদেরকে এখানে উপবেশন করায়নি?” তারা বলেছিলেন: আল্লাহর কসম! অন্য কোন বিষয় আমাদেরকে উপবেশন করায়নি। তিনি বলেছিলেন: @“আমি তোমাদেরকে কোন অপবাদ দেওয়ার জন্য কসম করাইনি। বরং আমার নিকটে জিবরীল এসে জানিয়ে গেলেন যে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের কাছে তোমাদের ব্যাপারে গর্ব করছেন।”

10- রাসূল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল। তারা সালাত পড়ছে যেমন আমরা সালাত পড়ছি, তারা সিয়াম রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে।’ তিনি বললেন, “আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।” সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন ক’রে নিজের যৌন ক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে?’ তিনি বললেন, “কি রায় তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কাম-ক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে।

18- “তোমরা যখন মুওয়াযযিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ কর*। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওসীলাহ প্রার্থনা কর। কেননা, ওসীলাহ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওসীলাহ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফাআত অর্জন হয়ে যাবে”।

19- তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন- হে আল্লাহর রসূল ! শয়তান আমার মাঝে , আমার সালাতের মাঝে ও কিরাআতের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং গোলমাল বাধিয়ে দেয় । তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “@এটা এক (প্রকারের) শয়তান— যার নাম ’খিনযিব’। যে সময় তুমি তার উপস্থিতি বুঝতে পারবে তখন (আউয়ুবিল্লাহ পড়ে) তার অনিষ্ট হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে তিনবার তোমার বাম পাশে থুথু ফেলবে*”। তিনি বলেন, তারপরে আমি তা করলাম আর আল্লাহ আমার হতে তা দূর করে দিলেন।