সালাত - الصفحة 2

সালাত - الصفحة 2

2- “তোমাদের কারো সালাতে যদি সন্দেহ হয়—কত রাকা‘আত পড়ছে তিন নাকি চার তা জানে না, সে যেন সন্দেহ পরিহার করে প্রবল ধারণার উপর ভিত্তি করে। তারপর সালামের পূর্বে দু’টি (সাহু) সাজদাহ করবে*। যদি সে পাঁচ রাকা‘আত পড়ে থাকে তাহলে তা তার সালাতকে জোড় করবে। আর যদি সালাত চার রাকা‘আত পূর্ণ করার জন্য আদায় করে থাকে, তাহলে সাজদাহ দু’টি হবে শয়তানের জন্য নাকে খত দেয়ার মত অপ্রীতিকর।”

18- একদা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মসজিদে বসা ছিলাম, এক ব্যক্তি উটের পিঠে সওয়ার হয়ে সেখানে এসে তার উটকে মসজিদে বসিয়ে বাঁধলেন। তারপর সাহাবীদেরকে বললেন: “তোমাদের মধ্যে মুহাম্মাদ কে?” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাদের মধ্যেই হেলান দেওয়া অবস্থাতে ছিলেন, আমরা বললাম: হেলান দেওয়া এই সাদা ব্যক্তিটি। তখন সে বলল: হে আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: “আমি তোমার জবাব দিয়েছি।” তখন সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলল: আমি আপনাকে কিছু বিষয় কঠিনভাবে জিজ্ঞাসা করছি, হয়ত তা আপনাকে কষ্ট দেবে, তবে আপনি আমার ব্যাপারে আপনার অন্তরে কোন কষ্ট নেবেন না। তখন তিনি বললেন: “তুমি জিজ্ঞাসা কর যা জানতে চাও।” তখন সে বলল: আমি আপনার রব এবং আপনার পূর্ববর্তীদের রবের কসম করে জিজ্ঞাসা করছি, আল্লাহ কী আপনাকে সমগ্র মানব জাতীর কাছে প্রেরণ করেছেন? তিনি বললেন: “আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ!), অবশ্যই।” তারপর সে বলল: আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আল্লাহ কী আপনাকে আদেশ করেছেন যে, আমরা রাতে-দিনে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করব? তিনি বললেন: “আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ!), অবশ্যই।” তারপর সে বলল: আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আল্লাহ কী আপনাকে আদেশ করেছেন যে, আমরা বছরের এই মাসে সিয়াম পালন করব? তিনি বললেন: “আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ!), অবশ্যই।” তারপর সে বলল: আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আল্লাহ কী আপনাকে আদেশ করেছেন যে, আপনি আমাদের ধনী ব্যক্তিদের থেকে এই সদাকাহ (যাকাত) গ্রহণ করে তা আমাদের দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করে দিবেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ!), অবশ্যই।” তারপর লোকটি বলল: আপনি যা নিয়ে আগমন করেছেন তার উপরে আমি ঈমান আনলাম আর আমি হচ্ছি আমার পিছনে থাকা কওমের প্রতিনিধি, @এবং আমি বনু সা‘দ ইবনু বকরের ভাই দ্বিমাম ইবনু ছা‘লাবাহ।

19- “তোমরা যখন মুওয়াযযিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ কর*। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওসীলাহ প্রার্থনা কর। কেননা, ওসীলাহ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওসীলাহ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফাআত অর্জন হয়ে যাবে”।

20- ‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মসজিদ (মাসজিদুন নাববী) নির্মাণ করার ইচ্ছা করলেন তখন লোকেরা তা অপছন্দ করলেন এবং তারা মসজিদকে তার অবস্থাতে রেখে দিতে পছন্দ করলেন। তখন তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ “@যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে মাসজিদ নির্মাণ করল, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্যে জান্নাতে অনুরূপ তৈরি করবেন”।

25- (একদিন) কিছু লোক সাহল বিন সা’দ সা’ঈদীর নিকট আগমন করে এবং মিম্বরটি কোন্ কাঠের তৈরি ছিল, এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক হলো । তারা এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি সম্যকরূপে অবগত আছি যে, তা কিসের ছিল। প্রথম যেদিন তা স্থাপন করা হয় এবং প্রথম যে দিন এর উপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসেন তা আমি দেখেছি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের অমুক মহিলার (বর্ণনাকারী বলেন, সাহল তার নামও উল্লেখ করেছিলেন) নিকট লোক পাঠিয়ে বলেছিলেন, “তোমার কাঠমিস্ত্রি গোলামকে আমার জন্য কিছু কাঠ দিয়ে এমন জিনিস তৈরি করার নির্দেশ দাও, যার উপর বসে আমি লোকদের সাথে কথা বলতে পারি”। অতঃপর সে মহিলা তাকে আদেশ করেন এবং সে (মদিনা হতে নয় মাইল দূরবর্তী) জঙ্গলের এক গাছের কাঠ দ্বারা তা তৈরি করে নিয়ে আসে। মহিলাটি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট তা পাঠিয়েছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আদেশে এখানেই তা স্থাপন করা হয়। অতঃপর আমি দেখেছি, এর উপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করেছেন। এর উপরেই তাকবীর দিয়েছেন এবং এর উপরেই (দাঁড়িয়ে) রুকূ’ করেছেন। অতঃপর পিছন ফিরে তা থেকে নেমে এসে মিম্বারের গোড়ায় সিজদা্ করেছেন এবং পুনরায় ফিরে সলাত শেষ করেছেন, অতঃপর সালাত শেষ করে সমবেত লোকদের দিকে ফিরে বলেছেনঃ “@হে লোক সকল! আমি এটা এ জন্য করেছি যে, তোমরা যেন আমার অনুসরণ করতে এবং আমার সালাত শিখে নিতে পার”।

26- “তোমরা যখন সালাত আদায় করবে, তোমাদের কাতারগুলো ঠিক করে নিবে। অতঃপর তোমাদের কেউ তোমাদের ইমামতি করবে। সে যখন তাকবীর বলবে, তোমরাও তখন তাকবীর বলবে*। সে যখন {غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلا الضَّالِّينَ} [الفاتحة: 7] বলবে তোমরা তখন আমীন বলবে। আল্লাহ তোমাদের ডাকে সাড়া দিবেন। যখন সে তাকবীর বলে রুকু’তে যাবে, তোমরাও তাকবীর বলে রুকু’তে যাবে। কেননা, ইমাম তোমাদের আগে রুকু’তে যাবে এবং তোমাদের আগে রুকু থেকে উঠবে”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “এটা ওটার বিনিময়ে, (তথা ইমাম যেমন রুকু সাজদায় আগে যাবে, তেমনি আগে উঠবে)। যখন সে سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলবে, তখন তোমরা اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ বলবে, আল্লাহ তোমাদের কথা শুনবেন। কেননা আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষায় বলছেনঃ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ (আল্লাহ তার প্রশংসাকারীর প্রশংসা শুনেন)। যখন সে তাকবীর বলবে এবং সাজদায় যাবে, তোমরাও তার পরপর তাকবীর বলে সাজদায় যাবে। কেননা, ইমাম তোমাদের আগে সাজদায় যাবে এবং তোমাদের আগে সিজদা থেকে উঠবে”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “ওটা ওটার পরিবর্তে।যখন বৈঠকের আসনে থাকবে, তখন তোমাদের প্রথম পাঠ হবে, التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ لِلهِ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ অর্থাৎ- সকল প্রকার পবিত্র ও একান্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদাতসমূহ আল্লাহরই জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর পক্ষ হতে শান্তি, রহমত ও বারাকাত নাযিল হোক এবং আমাদের উপর ও আল্লাহর নেককার বান্দাদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবূদ নেই এবং আমি এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল ”।

27- তিনি রমযান ও রমযান ছাড়া ফরজ হোক বা অন্য কোন সালাত হোক, দাঁড়িয়ে শুরু করার সময় "আল্লাহু আকবার" বলতেন, আবার রুকূ‘তে যাওয়ার সময় "আল্লাহু আকবার" বলতেন। অতঃপর (রুকূ‘ হতে উঠার সময়) سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলতেন, সিজদা্য় যাওয়ার পূর্বে رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলতেন। অতঃপর সিজদার জন্য অবনত হবার সময় আল্লাহু আকবার বলতেন। আবার সিজদা্ হতে মাথা উঠানোর সময় "আল্লাহু আকবার " বলতেন। অতঃপর (দ্বিতীয়) সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলতেন এবং সিজদা্ হতে মাথা উঠানোর সময় তাকবীর বলতেন। দু’ রাক‘আত আদায় করে দাঁড়ানোর সময় আবার তাকবীর বলতেন। সালাত শেষ করা পর্যন্ত প্রতি রাক‘আতে এরূপ করতেন। সালাত শেষে তিনি বলতেন, @যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমাদের মধ্য হতে আমার সালাত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাতের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই সালাতই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সালাত ছিল।

30- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ফরয সালাতের পর বলতেন*: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، اللَّهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ» ’’আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন মাবূদ নেই, তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই। প্রশংসা তাঁরই, তিনি সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল। হে আল্লাহ্! আপনি যা প্রদান করতে চান তা রোধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রোধ করেন তা প্রদান করার কেউ নেই। সম্মান ওয়ালার সম্মান কোন উপকারে আসে না তোমার থেকেই সম্মান।’’

32- তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন- হে আল্লাহর রসূল ! শয়তান আমার মাঝে , আমার সালাতের মাঝে ও কিরাআতের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং গোলমাল বাধিয়ে দেয় । তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “@এটা এক (প্রকারের) শয়তান— যার নাম ’খিনযিব’। যে সময় তুমি তার উপস্থিতি বুঝতে পারবে তখন (আউয়ুবিল্লাহ পড়ে) তার অনিষ্ট হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে তিনবার তোমার বাম পাশে থুথু ফেলবে*”। তিনি বলেন, তারপরে আমি তা করলাম আর আল্লাহ আমার হতে তা দূর করে দিলেন।

45- আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন একজন সহাবী এসে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলেন। তিনি বললেন, ফিরে যাও ও সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাম করলেন। তিনি বললেন, ফিরে গিয়ে সালাত আদায় কর। কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার বললেন। সহাবী বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেন, যখন তুমি সালাতের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাক্বীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু‘তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ‘ করবে। অতঃপর মাথা তুলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। অতঃপর ধীরস্থীরভাবে সাজাদহ করবে ও সাজদাহ্ হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর তোমার পুরো সালাতে এভাবেই করবে।

47- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তেখারা শিখাতেন। যেভাবে কুরআনের সূরা শেখাতেন। (আর) বলতেন, ‘যখন তোমাদের কারো কোন বিশেষ কাজ করার ইচ্ছা হয়, তখন সে যেন দু’ রাকআত প’ড়ে এই দুআ বলে। অর্থ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট তোমার ইলমের উসিলায় মঙ্গল প্রার্থনা করছি। তোমার কুদরতের উসিলায় শক্তি প্রার্থনা করছি এবং তোমার বিরাট অনুগ্রহ থেকে ভিক্ষা যাচনা করছি। কেননা, তুমি শক্তি রাখ, আমি শক্তি রাখি না। তুমি জান, আমি জানি না এবং তুমি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। হে আল্লাহ! যদি তুমি জান এই কাজটি আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের শেষ পরিণামে ভালো, তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত ও সহজ করে দাও। অতঃপর তাতে আমার জন্য বরকত দান কর। আর যদি তুমি জান এই কাজ আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের শেষ পরিণামে মন্দ, তাহলে তা আমার নিকট থেকে ফিরিয়ে নাও এবং আমাকে ওর নিকট থেকে সরিয়ে দাও। আর যেখানেই হোক মঙ্গল আমার জন্য বাস্তবায়িত কর, অতঃপর তাতে আমার মনকে পরিতুষ্ট করে দাও। তিনি বলেন, “সে তার প্রয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ করবে।”

51- রাসূলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আবূ বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা সালাত আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দ্বারা আরম্ভ করতেন। অপর বর্ণনায় বর্ণিত: আমি আবূ বকর, উমার ও উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমের সাথে সালাত আদায় করেছি। তাদের কাউকে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়তে শুনিনি। আর সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় বর্ণিত: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আবূ বকর, উমার ও উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমের পিছনে সালাত আদায় করি, তারা আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন দ্বারা সালাত আরম্ভ করতেন। তারা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কিরাতের শুরুতে এবং শেষে উল্লেখ করতেন না।

87- আবুল আব্বাস সাহল ইবন সা’দ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সংবাদ পৌঁছল যে, আমর ইবন আউফ গোত্রের মাঝে অনিষ্ট (ঝগড়া-বিবাদ) সংঘটিত হয়েছে। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে কিছু লোককে নিয়ে তাদের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা ক’রে দেওয়ার জন্য সেখানে হাজির হলেন। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আটকে গেলেন। অপর দিকে সালাতের সময় হয়ে গেল। সুতরাং বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট এসে বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আটকে গেছেন। এদিকে সালাতেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি কি সালাতে লোকেদের ইমামতি করবেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি চাও।’ অতঃপর বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সালাতের ইকামত দিলেন আর আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এগিয়ে গিয়ে (তাহরীমার) তকবীর বললেন লোকেরাও তকবীর বলল। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং কাতারগুলো অতিক্রম ক’রে (প্রথম) কাতারে এসে দাঁড়ালেন। (তা দেখে) লোকেরা হাততালি দিতে শুরু করল। আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সালাতরত অবস্থায় কোন দিকে তাকাতেন না, কিন্তু লোকেদের অধিক মাত্রায় হাততালির কারণে তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে হাতের ইশারায় (নিজের জায়গায় থাকতে) নির্দেশ দিলেন। আবূ বাকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর হাত উপরে তুলে আল্লাহর প্রশংসা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পিছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে গিয়ে লোকদের ইমামত করলেন এবং সালাত শেষ ক’রে লোকদের দিকে ফিরে বললেন, “হে লোক সকল! কি ব্যাপার যে, সালাত অবস্থায় কিছু ঘটতে দেখে তোমরা হাততালি দিতে শুরু করলে? (জেনে রেখো, সালাতে) হাততালি দেওয়া তো মহিলাদের কাজ। সালাত অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে। কারণ, এটা শুনলে কেউ তার দিকে ভ্রুপেক্ষ না ক’রে পারবে না। হে আবূ বকর! তোমাকে যখন ইশারা করলাম, তখন ইমামত করতে তোমার কিসের বাধা ছিল?” তিনি বললেন, ‘আবূ কুহাফার ছেলের জন্য সঙ্গত ছিল না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে লোকেদের ইমামত করবে।’ (বুখারী ও মুসলিম)