1- “বিধবা ও মিসকীন-এর জন্য (খাদ্য জোগাড়) চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদের মতো অথবা রাতে সালাত আদায়কারী ও দিনে সিয়াম পালকারীর মতো।”

2- “তোমরা নিজেদের ঘরগুলোকে কবরে পরিণত করো না, আর আমার কবরকে ঈদ বা মেলায় পরিণত করো না এবং তোমরা আমার ওপর দুরূদ পড়। কারণ, তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের দুরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়।”

3- “পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমু‘আ থেকে আরেক জুমু‘আ আদায় করা এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পালন করা, এগুলোর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে; যদি সে কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।”

4- “মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে সকল কষ্ট, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, অনিষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ থেকে ক্ষমা করেন।

5- যে ব্যক্তি ইলম শেখার উদ্দেশ্যে বের হলো, সে ফিরে না আসা পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তায়।

6- “নিশ্চই হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট

7- “যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথাযোগ্য তাওয়াক্কুল (ভরসা) রাখতে, তবে তিনি তোমাদেরকে রিজিক দান করতেন, যেমন পাখিকে তিনি রিযিক দান করে থাকেন। তারা সকালে ক্ষুধার্ত হয়ে (বাসা থেকে) বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে (বাসায়) ফিরে।”

8- জনৈক বান্দা পাপ করে বলল, হে আমার রব! আমার পাপ মার্জনা করে দাও

9- “প্রত্যেক সৎ কাজই সাদাকা।”

10- “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”

11- “যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিযক প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বর্ধিত হোক, সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ণ রাখে।”

12- “দু’আই হল ইবাদত

13- “আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আর চেয়ে অধিক সম্মানিত কোনো বস্তু নেই।”

14- “যে ব্যক্তি প্রতিদিন একশত বার (سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ) ‘সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলবে তার গুনাহরাশি মাফ করে দেওয়া হবে; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।”

15- যে ব্যক্তি বলবে: (لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ) “আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই, তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব, তারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা এবং তিনি সকল বস্তুর উপর সর্বশক্তিমান।” দশবার

16- “আল্লাহ তা‘আলা যার দ্বারা কল্যাণ চান, তাকে দীনের জ্ঞান দান করেন।

17- “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পাঠ করবে তার জন্য এর এর কারণে একটি সাওয়াব আছে। আর সাওয়াবটি তার দশ গুণ বৃদ্ধি পায়।

18- যে কোনো বান্দা আন্তরিকতার সাথে এ সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মাবূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।”

19- বান্দার উপরে আল্লাহর হক হচ্ছে, তারা তাঁরই ইবাদাত করবে আর কোন কিছুকে আল্লাহর সাথে শিরক করবে না। আর পক্ষান্তরে আল্লাহর উপরে বান্দার হক হচ্ছে, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে শিরক করবে না, তিনি তাকে আযাব দিবেন না।

20- যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”

21- “আল্লাহ আমার উম্মাতের মধ্য হতে একজনকে কিয়ামাতের দিন সমগ্র সৃষ্টিজগতের সামনে উপস্থিত করবেন।

22- আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং (আমীরের) কথা শোনা ও তার আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি; যদিও তোমাদের উপর কোন নিগ্রো দাস আমীর হয়। (স্মরণ রাখ) তোমাদের মধ্যে যে আমার পর জীবিত থাকবে, সে অনেক মতভেদ বা অনৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের রীতিকে আঁকড়ে ধর এবং তা মাড়ির দাঁত দিয়ে মজবুত করে ধর।

23- “মুওয়াযযিন যখন ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে, তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তখন তার জবাবে বলেঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার

24- “মহান আল্লাহ বলেছেনঃ আমার এবং আমার বান্দার মাঝে সালাতকে অর্ধেক করে ভাগ করেছি। আমার বান্দার জন্য রয়েছে সে যা চায়

25- “আমি তোমাদেরকে কোন অপবাদ দেওয়ার জন্য কসম করাইনি। বরং আমার নিকটে জিবরীল এসে জানিয়ে গেলেন যে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের কাছে তোমাদের ব্যাপারে গর্ব করছেন।”

26- তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারবর্গের মাধ্যমে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর।

27- লজ্জা মঙ্গলই বয়ে আনে।

28- আল্লাহ তাআলা বলেন: যখন আমি আমার বান্দার পছন্দনীয় পার্থিব জিনিসকে কেড়ে নিই, অতঃপর সে (তাতে) সাওয়াবের আশা রাখে, তখন তার জন্য আমার নিকট জান্নাত ছাড়া অন্য কোন বিনিময় নেই।

29- তুমি তোমার মাতা-পিতার নিকট ফিরে যাও এবং তাদের সাথে উত্তম সাহচর্য অবলম্বন কর।

30- ব্যক্তি যেসব দিনার ব্যয় করে তন্মধ্যে সর্বোত্তম দিনার হলো সেসব দিনার যা সে নিজের পরিবারের জন্যে ব্যয় করে, আর সে দিনার যা সে আল্লাহর রাস্তায় নিজের বাহনের জন্যে ও আল্লাহর রাস্তায় তার সাথীদের জন্যে ব্যয় করে।

31- তোমরা আমার কবরকে মেলায় পরিণত করো না আর তোমাদের ঘরগুলোকে কবরে পরিণত করো না। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের সালাম আমার কাছে পৌঁছে যায়।

32- যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন তাদের সাবালিকা হওয়া অবধি করবে, কিয়ামতের দিন আমি এবং সে এ দু’টি আঙ্গুলের মত পাশাপাশি আসব।

33- لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا، وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا، أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ؟ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ “তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর তোমাদের ঈমান পরিপূর্ণ হবে না যতক্ষণ না তোমরা একে অপরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কোন জিনিস বলে দিব না, যার মাধ্যমে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে? (তা হলো) তোমরা পরস্পরের মাঝে সালামের ব্যাপক প্রসার করো।”

34- কে প্রশ্ন করলাম,আল্লাহর নিকট কোন আমলটি সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি বললেন, “যথা সময়ে সালাত আদায় করা।” আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ’তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা।” আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ’তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা।

35- الطِّيَرَةُ شِرْكٌ، الطِّيَرَةُ شِرْكٌ، الطِّيَرَةُ شِرْكٌ، -ثلاثًا-»، وَمَا مِنَّا إِلَّا، وَلَكِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ ‘ শুভাশুভ নির্ণয় করা শির্ক।শুভাশুভ নির্ণয় করা শির্ক। শুভাশুভ নির্ণয় করা শির্ক।” একথা তিনি তিনবার বললেন। (বর্ণনাকারী বলেন) এমন কিছু আমাদের অনেকের মনে সৃষ্টি হতেই পারে, তবে তা মহান আল্লাহ তাঁর প্রতি তাওয়াক্কুল-ভরসা দ্বারা দূর করে দিবেন।’

36- নিশ্চয় আমি আগামীকাল যুদ্ধের পতাকা এমন এক ব্যক্তিকে দিব, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাকে ভালোবাসেন। তার হাতেই আল্লাহ বিজয় দান করবেন।

37- তুমি কি জানো না যে, ইসলাম পূর্বের সমস্ত পাপকে মিটিয়ে দেয়, হিজরত পূর্বের সমস্ত পাপকে নিশ্চিহ্ন ক’রে ফেলে এবং হজ্জ ক্ষমা ও পূর্বের পাপসমূহ ধ্বংস ক’রে দেয়?

38- তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, তোমাদের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় কর। তোমাদের রামযান মাসের সাওম পালন কর, তোমাদের ধন-দৌলতের যাকাত আদায় কর এবং তোমাদের প্রশাসকগণের আনুগত্য কর, তবেই তোমাদের রবের জান্নাতে প্রবেশ করবে।

39- আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলব না, যার দ্বারা আল্লাহ গোনাহসমূহকে মোচন করবেন এবং (জান্নাতে) তার দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন?” তাঁরা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, “(তা হচ্ছে) কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে ওযূ করা, অধিক মাত্রায় মসজিদে গমন করা এবং এক অক্তের সালাত আদায় ক’রে পরবর্তী অক্তের সালাতের জন্য অপেক্ষা করা। আর এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ। এ হল প্রতিরক্ষা বাহিনীর মত কাজ।

40- আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের উত্তম আমল ও তোমাদের মালিকের নিকট সবচেয়ে পবিত্র আমলের সন্ধান দিব না?

41- সে ব্যক্তির নাক ধূলায় মলিন হোক, আবার সে ব্যক্তির নাক ধূলায় মলিন হোক, সে ব্যক্তির নাক ধূলায় মলিন হোক, যে ব্যক্তি তার পিতামাতা উভয়কে কিংবা একজনকে বার্ধক্যাবস্থায় পেল; অথচ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না।

42- আল্লাহর যিকিরকারীগণ অগ্রগামী হয়েছে।

43- মিরাজের রাতের সফরে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের সঙ্গে আমার সাক্ষাত হয়। তখন তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনার উম্মতকে আমার পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন এবং তাদের জানিয়ে দিবেন যে জান্নাতের মাটি উত্তম আর এর পানি সুমিষ্ট। তবে তা ফাঁকা ময়দান। এর ছায়া হলো সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদু লিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার।

44- তুমি যা বললে, যদি প্রকৃত অবস্থা তাই হয় তাহলে তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত ছাই নিক্ষেপ করছ আর সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফিরিশতা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এ অবস্থায় বহাল থাকবে।

45- কোনো কাওম যখন কোনো মজলিস থেকে আল্লাহর যিকির করা ছাড়া ওঠে পরে তখন তারা যেন গাধার শবদেহ থেকে উঠল। আর এটি তাদের জন্য পরিতাপের কারণ হবে।

46- এতে আমি খুশী নই যে, আমার নিকট এই উহুদ পাহাড় সমান স্বর্ণ থাকবে, এ অবস্থায় তিনদিন অতিবাহিত হবে অথচ তার মধ্য থেকে একটি দীনারও আমার কাছে অবশিষ্ট থাকবে। অবশ্য তা থাকবে যা আমি ঋণ আদায়ের জন্য বাকী রাখব অথবা আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এইভাবে এইভাবে এইভাবে দান করার জন্যে রাখব।

47- এক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার সর্বাপেক্ষা হকদার কে? তিনি বললেন, “তোমার মা। এরপরও তোমার মা। এরপরও তোমার মা। এরপর তোমার বাবা। এরপর তোমার নিকট আত্মীয়-স্বজন। এরপর তোমার নিকটবর্তীগণ।”

48- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সফরে সাওম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম রাখ, আর যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম ভঙ্গ কর।”

49- রাসূল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল। তারা সালাত পড়ছে যেমন আমরা সালাত পড়ছি, তারা সিয়াম রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে।’ তিনি বললেন, “আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।” সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন ক’রে নিজের যৌন ক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে?’ তিনি বললেন, “কি রায় তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কাম-ক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে।

50- হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের ওপর ইসলামের শারী‘আতের বিষয় অনেক হয়ে গেছে। সুতরাং আমাদেরকে একটি বিষয় জানান, যা আমরা শক্তভাবে আঁকড়ে ধরব। তিনি বললেন: “সর্বদা তোমার জিহ্বা যেন আল্লাহ তা‘আলার যিকির দ্বারা সিক্ত থাকে।”

51- যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের কোনো পার্থিব দুর্ভোগ দূরীভূত করবে, আল্লাহ তার থেকে কিয়ামতের দিনের দুর্ভোগসমূহের মধ্যে কোনো একটি দুর্ভোগ দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তির প্রতি সহজ করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার প্রতি সহজ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন।

52- হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহর সমীপে তাওবা কর ও তাঁর নিকট ক্ষমা চাও! কেননা, আমি প্রতিদিন এক শো বার তাওবা করি।

53- হানাহানির সময় ইবাদত করা আমার দিকে হিজরত করা মতো

54- আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় কালাম সম্পর্কে তোমাকে জানাব না কি? আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কথা হল

55- সেই মহান সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার জীবন! যদি তোমরা পাপ না কর, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে (তোমাদের পরিবর্তে) এমন এক জাতি আনয়ন করবেন, যারা পাপ করবে এবং আল্লাহ তা‘আলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করবে। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।

56- হে লোকসকল! তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় করো, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো, খাবার খেতে দাও এবং রাতের বেলা মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সালাত পড়ো। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

57- মহান আল্লাহ বলেন, আমি আমার বান্দার সাথেই আছি যতক্ষণ সে আমার যিকির করে এবং আমার যিকিরে তার দু’ঠোঁট নড়াচড়া করে।

58- মহান আল্লাহ এভাবে উৎকর্ণ হয়ে কোন কথা শোনেন না, যেভাবে সেই মধুরকণ্ঠী পয়গম্বরের প্রতি উৎকর্ণ হয়ে শোনেন।

59- দু’জন মুসলিম পরস্পর সাক্ষাৎ করার পর যখন মুসাফাহা করে, তখন তাদের বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই তাদের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

60- যিকিরের মজলিসের মর্যাদা সম্পর্কিত হাদীস

61- আল্লাহ বলেন, যখন আমার বান্দা কোনো খারাপ কর্ম করার ইচ্ছা করে, তোমরা তা না করা পর্যন্ত তার ওপর লিপিবদ্ধ কর না। যখন বাস্তবায়ন করে তখন তুমি কর্ম সমান গুনাহ লিখ। আর যদি আমার কারণে তা ছেড়ে দেয়, তখন তার জন্য একটি নেকি লিপিবদ্ধ কর। আর যদি কোনো নেক আমল করার ইচ্ছা করল কিন্তু সে করেনি। তোমরা তার জন্য একটি নেকি লিখ। আর যদি সে নেক আমলটি করে, তাহলে তোমরা দশ গুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত নেকি লিপিবদ্ধ কর।

62- আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কিছু লোক একটা জানাযা নিয়ে পার হয়ে গেল। লোকেরা তার প্রশংসা করল। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “অবধারিত হয়ে গেল।” অতঃপর দ্বিতীয় আরেকটি জানাযা নিয়ে পার হলে লোকেরা তার দুর্নাম করল। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “অবধারিত হয়ে গেল।” উমার বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘কী অবধারিত হয়ে গেল?’ তিনি বললেন, “তোমরা যে এর প্রশংসা করলে তার জন্য জান্নাত, আর ওর দুর্নাম করলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেল। তোমরা হলে পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী।” মুত্তাফাকুন আলাইহি

63- কুরআন তিলাওয়াতকারী এবং এতে দক্ষ ব্যক্তি সম্মানিত পূণ্যবানদের সাথে থাকবেন (জান্নাতে)। আর যে ব্যক্তি ভেঙ্গে ভেঙ্গে অতি কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কুরআন তিলাওয়াত করে, সে দ্বিগুণ পুরস্কার পাবে।

64- আবূ হুরায়রাহ থেকে একটি বর্ণনা বর্ণিত: তিনি বলেন, আল্লাহর রয়েছে নিরানব্বই নাম। এক কম একশ। যে ব্যক্তি এ গুলোর হিফাযত করবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবেন। তিনি নিজে বিজোড়, তাই বিজোড়কে তিনি পছন্দ করেন। হাদীসটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।

65- হে আল্লাহর রাসূল! ছোট বা বড় কোন পাপ করতে আমি ছাড়িনি। তিনি বললেন: “তুমি কী এ সাক্ষ্য দাওনা যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই, আর মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল?”

66- “আমলসমূহ ছয় প্রকার ও মানুষ চার প্রকার। দুটি আবশ্যককারী কাজ এবং একটি এমন কাজ যা অপরটির সমান। একটি ভালোকাজ তার দশগুণ সমপরিমাণ আবার একটি ভালোকাজ সাতশত গুণ

67- “কিয়ামাতের আলামতসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে: ইলম উঠে যাওয়া, অজ্ঞতা বেড়ে যাওয়া, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাওয়া, মদ্যপান বেড়ে যাওয়া, পুরুষের সংখ্যা কমে যাওয়া ও নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া, এমনকি পঞ্চাশজন নারীর জন্য মাত্র একজন পরিচালক বিদ্যমান থাকবে।”

68- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন: “সেটা হচ্ছে ইলম উঠে যাওয়ার সময়

69- “তোমরা আলিমদের সাথে বড়াই করার জন্য ইলম শিখবে না, নির্বোধের সাথে বিতর্ক করার জন্যও নয়,

70- “আল্লাহ তা‘আলা সিরাতে মুস্তাকীমের একটি উদাহরণ পেশ করেছেন

71- “তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, সে যখন তার পরিবারের কাছে ফিরে যাবে, তখন সেখানে সে তিনটি বড় হৃষ্টপুষ্ট গর্ভবতী উটনী দেখতে পাবে?

72- “কুরআনের ধারককে বলা হবে: তুমি পাঠ কর এবং উপরে উঠতে থাক। তারতীল সহকারে সুন্দর করে পাঠ করবে যেভাবে তুমি দুনিয়াতে তারতীল সহকারে সুন্দর করে পাঠ করতে। নিশ্চয় তোমার সর্বশেষ পাঠকৃত আয়াতের স্থানেই তোমার আবাসস্থল।”

73- “প্রকাশ্যে কুরআন তেলাওয়াতকারী প্রকাশ্যে সদাকাকারীর ন্যায় আর গোপনে কুরআন তেলাওয়াতকারী গোপনে সদাকাকারীর ন্যায়।”

74- তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দশটি করে আয়াত পাঠ করতেন, তারপরে তারা পরবর্তী দশটি আয়াত আর গ্রহণ করতেন না, যতক্ষণ না এ আয়াতগুলোর মধ্যে থাকা ইলম ও আমল সম্পর্কে তারা জানতে পারতেন

75- হে আবুল মুনযির! তুমি কি জান, তোমার সাথে থাকা আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ? তখন আমি বললাম: اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ [আল-বাকারা:২৫৫]। এ কথা শুনে তিনি আমার বুকের উপর হাত মেরে বললেন: হে আবুল মুনযির! তোমার ইলমকে স্বাগত।”

76- আপনি বলুন: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ তথা: আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মাবূদ নেই, তাহলে আমি আপনার জন্য কিয়ামাতের দিন সাক্ষ্য দেব।

77- “তোমরা যখন মুওয়াযযিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ কর

78- এটা এক (প্রকারের) শয়তান— যার নাম ’খিনযিব’। যে সময় তুমি তার উপস্থিতি বুঝতে পারবে তখন (আউয়ুবিল্লাহ পড়ে) তার অনিষ্ট হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে তিনবার তোমার বাম পাশে থুথু ফেলবে

79- আল্লাহর পথে একদিন সীমান্ত পাহারা দেওয়া দুনিয়া ও এর উপর যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম।

80- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন পায়খানায় যেতেন তখন আমি ও আমার একটি ছেলে পানির পাত্র এবং ‘আনাযা’ (এমন লাঠি যার মাথায় লোহা লাগানো থাকে) নিয়ে যেতাম। তিনি পানি দ্বারা শৌচকার্য করতেন।

81- আল্লাহ তাআলাকে সম্মান করার এক প্রকার হচ্ছে: পাকা চুলওয়ালা বয়স্ক মুসলিম, সীমালঙ্ঘন ও অতিরঞ্জন পরিহারকারী কুরআনের বাহক (হাফেয ও আলেম) এবং ন্যায়পরায়ণ বাদশাহর সম্মান করা।

82- আমি তো আপনাকে দেখলাম কিবলাহ বিহীন দিকে সালাত আদায় করছেন? তিনি বললেন, যদি আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন করতে না দেখতাম, তবে আমিও তা করতাম না।

83- আমি আনসারগণকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (অনেক) কিছু করতে দেখেছি। তাই আমি শপথ করেছি যে, তাঁদের মধ্যে যাঁরই সঙ্গী হব, তাঁরই খিদমত করব।

84- মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালবাসে (কিয়ামতে) সে তারই সাথী হবে।

85- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে দুই ভাই ছিল। তাদের মধ্যে একজন নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে (দ্বীন শিক্ষার জন্য) আসত আরেকজন কোনো পেশায় নিয়োজিত ছিল। অতঃপর উপার্জনশীল (ভাইটা) নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে তার (শিক্ষার্থী) ভাইয়ের (কাজ না করার) অভিযোগ করল। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সম্ভবতঃ তোমাকে তার কারণেই রুযী দেওয়া হচ্ছে।”

86- নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য তার এ কাজের বিনিময়ে জান্নাত ওয়াজেব ক’রে দিয়েছেন অথবা তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত ক’রে দিয়েছেন।

87- কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের জন্য তার অবর্তমানে দো‘আ করলে কবুল করা হয়। তার মাথার নিকট একজন ফিরিশতা নিয়োজিত থাকেন, যখনই সে তার ভাইয়ের জন্য নেক দো‘আ করে, তখনই নিয়োজিত ফিরিশতা বলেন, ‘আমীন এবং তোমার জন্যও অনুরূপ।

88- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যেভাবে সলাত আদায় করতেন তোমাদের নিয়ে সেভাবে সালাত আদায় করতে আমি ত্রুটি করবো না।

89- কোনো মুসলিম কিংবা কোনো মুমিন বান্দা যখন অযু করে অতঃপর তার চেহারা ধৌত করে,তখন তার চেহারা থেকে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে সে সকল গুনাহ বের হয়ে যায় যার দিকে তার দু’চোখের দৃষ্টি পড়েছিল।

90- তোমরা বহু এমন (পাপ) কাজ করছ, সেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুল থেকেও সূক্ষ্ম (নগণ্য)। কিন্তু আমরা সেগুলোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে বিনাশকারী মহাপাপ বলে গণ্য করতাম।

91- তোমরা আমার (মৃত্যুর) পর অগ্রাধিকার দেখবে! সুতরাং ধৈর্য ধারণ করবে; যে অবধি তোমরা হাওযের কাছে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করবে।

92- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’জন সাহাবী অন্ধকার রাতে তাঁর নিকট থেকে বাইরে গমন করেন। আর তাদের সম্মুখভাগে দু’টো প্রদীপের ন্যায় আলো বিদ্যমান ছিল।

93- তিনি (আমার মা) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোপন তথ্য কখনো কাউকে বলবে না। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আল্লাহর কসম, হে সাবিত! যদি তা কাউকে বলতাম, তাহলে অবশ্যই তোমাকে বলতাম।

94- চল্লিশটি সৎকর্ম আছে তার মধ্যে উচ্চতম হল, দুধ পানের জন্য (কোন দরিদ্রকে) ছাগল সাময়িকভাবে দান করা। যে কোন আমলকারী এর মধ্য হতে যে কোন একটি সৎকর্মের উপর প্রতিদানের আশা করে ও তার প্রতিশ্রুত পুরস্কারকে সত্য জেনে আমল করবে, তাকে আল্লাহ তার বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

95- সে অল্প আমল করে বেশি পুরস্কার পেলো।

96- নিশ্চয় আল্লাহর সর্বাধিক নিকটবর্তী মানুষ সেই, যে প্রথমে সালাম দেয়।

97- সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো সে ব্যক্তি যে দীর্ঘায়ু পেয়েছে এবং উত্তম আমল করেছে।

98- এমন অনেক আলুথালু কেশধারী ধুলো-মলিন চেহারা বিশিষ্ট, দ্বার থেকে বিতাড়িত ও নিগৃহীত ব্যক্তি রয়েছে, যারা আল্লাহর নামে শপথ করলে আল্লাহ তা সত্যে পরিণত করে দেন।

99- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কোনো কিছু চাওয়া হলে তিনি কখনো না বলতেন না।

100- যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কিছু খরচ করে, তার জন্য সাতশ’ গুণ নেকী লেখা হয়।