1- “যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ পালন করলো এবং অশালীন কথা-কর্ম ও গুনাহ থেকে বিরত রইল, সে এমনভাবে (নিষ্পাপ অবস্থায়) ফিরে যাবে, যেন তার মা তাকে ঐদিনে প্রসব করেছে।

2- “খাবারের উপস্থিতিতে ও দু’টি খারাপ বস্তু আটকে রেখে কোনো সালাত নেই।”

3- “জুমু‘আর দিন ইমামের খুতবাহ দেওয়ার সময় যখন তুমি তোমার পাশের মুসল্লীকে বললে, ‘চুপ করো’, তখন তুমি অনর্থক কাজ করলে।”

4- “ফিতরাত (ভালো স্বভাব) পাঁচটি: খাতনা করা, (নাভির নীচে) ক্ষুর ব্যবহার করা, গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা ও বগলের পশম উপড়ে ফেলা।”

5- “তোমরা গোফ কেটে ফেল (অর্থাৎ ঠোটের ওপর থেকে কেটে দাও) এবং দাড়ি ছেড়ে দাও (অর্থাৎ বড় হতে দাও)।”

6- যে ব্যক্তি আমার এই উযূর ন্যায় উযূ করল, তারপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করল তাতে সে তার মনে কনো কিছু উদয় করলো না, আল্লাহ্ তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন

7- “হে আল্লাহ! আমার কবরকে পূজনীয় মূর্তি বানিয়ে দিওনা।

8- “মুনাফিকদের ওপর সবচেয়ে কঠিন সালাত হলো এশা ও ফজরের সালাত। তারা যদি তার ফযিলত জানতো তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হত

9- “অযু নষ্ট হলে পুনরায় অযু না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের কারো সালাত কবুল করবেন না।”

10- “মিসওয়াক মুখের পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ ও আল্লাহর সন্তোষ লাভের উপায়।”

11- “পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমু‘আ থেকে আরেক জুমু‘আ আদায় করা এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পালন করা, এগুলোর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে; যদি সে কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।”

12- “যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় সাওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।”

13- “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়।”

14- “তোমরা মৃতদেরকে গালি দিও না। কেননা তারা নিশ্চিতভাবে তাদের কৃতকর্মের ফল পেয়ে গেছে।”

15- “যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করলো সে আল্লাহর যিম্মাদারিতে থাকলো

16- “সাদাকা করলে সম্পদ কমে যায় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা উঁচুতে তুলে দেন।”

17- “মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর, হে, আদম সন্তান ! আমিও খরচ করবো তোমার প্রতি।”

18- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক ওয়াক্ত সালাতের পরে কথাগুলো বলে আল্লাহর প্রশংসা করতেন।

19- “এমন কোন দিন নাই যাতে নেক আমল করা আল্লাহর নিকট এ দিনগুলো অর্থাৎ যিলহজ্জ মাসের দশ দিনের নেক আমল অপেক্ষা অধিক প্রিয় হবে।

20- যে ব্যক্তি ‘আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার ‘আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।”

21- “যে ব্যক্তি অযু করে এবং তা উত্তমরূপে করে, তার দেহ থেকে সমুদয় গুনাহ বের হয়ে যায়, এমন কি তার নখের ভিতর থেকেও (গুনাহ) বের হয়ে যায়।”

22- তোমরা পেশার থেকে সতর্ক থাকো। কারণ, কবরের অধিকাংশ শাস্তি তা হতে।

23- “তোমরা কবরের উপর বসবে না এবং কবরের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে না।”

24- এরা এমন সম্প্রদায় যে, এদের মধ্যে কোন সৎ বান্দা অথবা বলেছেন কোন সৎ লোক মারা গেলে তার কবরের উপর তারা মসজিদ নির্মাণ করত।

25- “আমি সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করার জন্য নির্দেশিত হয়েছি।

26- নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই সিজদার মাঝখানে বলতেন: (اللَّهمَّ اغْفِرْ لي، وارْحَمْنِي، وعافِني، واهْدِني، وارزقْنِي) অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সুস্থতা দান করুন,আমাকে সঠিক পথপ্রদর্শন করুন এবং রিজিক দান করুন।

27- অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনিই সালাম। আপনার পক্ষ থেকেই শান্তি। আপনি বরকতময়, হে মহামহিম ও মহা সম্মানিত।

28- “দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে, তাতে সমর্থ না হলে বসে, যদি তাতেও সক্ষম না হও তাহলে কাত হয়ে শুয়ে।”

29- তুমি কি সালাতের আযান শুনতে পাও?” তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তবে তুমি (জামা’আতে) উপস্থিত হবে।”

30- যখন তোমাদের কেউ সালাতে উপস্থিত হয় আর ইমাম একটি অবস্থায় থাকে, তখন সে তাই করবে যেমন ইমাম করবে।

31- “যে ব্যক্তি কোনো চুক্তিবদ্ধ মানুষকে হত্যা করল সে জান্নাতের ঘ্রাণ পাবে না, অথচ তার ঘ্রাণ চল্লিশ বছর দূরের দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে”।

32- بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ» “ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি।

33- আপনি কী মনে করেন , যদি আমি ফরয সালাতসমূহ আদায় করি, রমাদানের সিয়াম পালন করি, হালালগুলোকে হালাল মানি এবং হারামসমূহকে হারাম মনে করি,

34- “পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। “الحمد لله” ‘আলহামদু লিল্লা ‘ মিযান-দাঁড়িপাল্লা পরিপূর্ণ করে দেয় এবং “سبحان الله والحمد لله” ‘সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহ’ কালেমা আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিপূর্ণ করে দেয়।

35- “মুওয়াযযিন যখন ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে, তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তখন তার জবাবে বলেঃ ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার

36- “যদি কেউ কোনো সালাত ভুলে যায়, তাহলে যখন তা স্মরণ করবে, তখনই তা আদায় করবে। এ ছাড়া সালাতের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই

37- “বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে সালাত ছেড়ে দেয়া”।

38- “আমাদের ও তাদের মধ্যে প্রতিশ্রুতি হচ্ছে সালাত। যে তা পরিত্যাগ করল সে কুফুরী করল।”

39- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক রমযান মাসের (শেষ) দশদিন ই‘তিকাফ করতেন। তারপর যে বছরে তিনি মারা যান, সে বছরে বিশ দিন ই‘তিকাফ করেছিলেন।

40- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন একটি যুদ্ধে একজন নারীকে নিহত পাওয়া গেল।

41- “যে ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহর কালিমাকেই উঁচু রাখার জন্য যুদ্ধ করবে, তার যুদ্ধই শুধু আল্লাহর রাস্তায় হবে।”

42- “যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়ায্‌যিন যা বলে তোমরাও অনুরূপ বল।”

43- ও দু’টো থাক, আমি পবিত্র অবস্থায় ও দু’টি পরেছিলাম।

44- ওটা শিরার (ধমনী) রক্ত। তবে এরূপ হওয়ার আগে নিয়মিত যতদিন হায়য হতো সে কয়দিন সালাত অবশ্যই ছেড়ে দাও। তারপর গোসল করে নিবে ও সালাত আদায় করবে।”

45- “তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা কর; কেননা কাতার সোজা করা সলাতের পূর্ণতার অন্তর্ভুক্ত।“

46- তোমাদের মধ্যে কেউ যখন অযু করে তখন সে যেন নাকে পানি দেয়, এরপর যেন নাক ঝেড়ে নেয়। আর যে ইস্তিঞ্জা করে সে যেন বেজোড় সংখ্যক ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করে।

47- ”নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে আমি দশ রাক‘আত সালাত আমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে রেখেছি।

48- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে (সালাতের জন্য) উঠতেন তখন মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন।

49- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল, তার মনে হয় সে সালাতে কিছু একটা অনুভব করে। তিনি বললেন, সে (সালাত) ছেড়ে যাবে না, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়।

50- যখন রাতের খাবার উপস্থিত হয় এবং সলাতের ইকামতও শুরু হয়ে যায় তখন তোমরা আগে আহার করো।

51- “যখন তোমরা পায়খানায় আসবে, তখন তোমরা কিবলামুখী হয়ে বসবে না, অথবা কিবলার দিকে পিঠ করেও বসবে না, বরং তোমরা পূর্ব-পশ্চিম দিকে ঘুরে বসবে।”

52- যখন তোমাদের কেউ পেশাব করবে তখন সে যেন তার পুরুষাঙ্গ ডান হাত দিয়ে না ধরে, ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা না করে। আর (পান করার সময়) পানির পাত্রে যেন নিঃশ্বাস না ফেলে।

53- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের পর সূর্য উজ্জ্বল হয়ে না উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।

54- أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ - أَوْ: لاَ يَخْشَى أَحَدُكُمْ - إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ، أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ، أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ “তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা‘আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, অথবা তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দিবেন।”

55- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত শুরু করতেন, তখন উভয় হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকূ‘তে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং যখন রুকূ‘ হতে মাথা উঠাতেন তখনও একইভাবে দু’হাত উঠাতেন।

56- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত তার দুই হাতের মাঝে রেখে আমাকে তাশহহুদ শিখিয়েছেন যেমনিভাবে তিনি কুরআনের সূরা শেখান। অর্থ: “সকল মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর বর্ষিত হোক।” আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল।

57- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বলে দু‘আ করতেন, হে আল্লাহ আমি কবরের আযাব থেকে, জাহান্নামের আযাব থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

58- হে আল্লাহর রাসূল! আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও কিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কী পাঠ করেন? তিনি বললেন, এ সময় আমি বলি-“হে আল্লাহ! আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান করে দাও যেমন ব্যবধান করেছ পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ আমাকে আমার গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র কর যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ আমার গোনাহকে বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।”

59- তোমরা সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করো। তোমাদের কেউ যেন তার বাহুদ্বয় কুকুরের ন্যায় বিছিয়ে না রাখে।

60- আমি আনাস ইব্নু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তাঁর না‘লাইন (চপ্পল) পরে সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, হাঁ।

61- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অপবিত্র নর জিন্ন ও নারী জিন্ন থেকে আশ্রয় চাই।

62- যে ব্যক্তি সত্য অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট শাহাদাত প্রার্থনা করবে, তাকে আল্লাহ তা‘আলা শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছাবেন; যদিও তার মৃত্যু নিজ বিছানায় হয়।

63- লোকদেরকে সবশেষে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে বিদায় হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে; তবে ঋতুবতী নারীর জন্য এ তাওয়াফ শিথিল (মাফ) করা হয়েছে।

64- আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জানাবাতের গোসলের জন্যে পানি রাখলাম। তারপর দু’বার বা তিনবার ডান হাত দিয়ে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধৌত করলেন। অতঃপর তার হাত মাটিতে ঘষলেন।

65- তোমরা আমার কবরকে মেলায় পরিণত করো না আর তোমাদের ঘরগুলোকে কবরে পরিণত করো না। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের সালাম আমার কাছে পৌঁছে যায়।

66- আমার অধিক পরিমাণে ‘মযী’ বের হত। কিন্তু আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করছিলাম। কারণ, তার কন্যা আমার নিকট। তাই এ ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করার জন্য মিকদাদকে বললাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তার লিঙ্গ ধৌত করবে এবং অযু করবে।

67- যখন তোমরা কাপড় পরিধান করবে ও ওযূ করবে তখন তোমরা তোমাদের ডান দিক থেকে আর‎ম্ভ করবে।

68- আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহর নিকট কোন্ কাজটি সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি বললেন, “যথা সময়ে সালাত আদায় করা।” আমি নিবেদন করলাম, ‘তারপর কোনটি?’ তিনি বললেন, “মা-বাপের সাথে সদ্ব্যবহার করা।”

69- যে দিনেই বান্দারা যখন ভোর করে দু’জন ফিরিশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের বিনিময় দিন।’ আর অপরজন বলেন, ‘হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস দিন।

70- যে ব্যক্তি সরঞ্জাম দিয়ে আল্লাহর পথে কোন মুজাহিদ প্রস্তুত ক’রে দিল, নিঃসন্দেহে সে জিহাদ করল। আর যে ব্যক্তি কোন মুজাহিদের পরিবারে উত্তমরূপে প্রতিনিধিত্ব করল, নিঃসন্দেহে সেও জিহাদ করল।

71- আমি ‘আমর ইব্নু আবূ হাসানকে দেখেছি তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু যায়দকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি এক পাত্র পানি আনলেন এবং তাঁদের (দেখাবার) জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মতো উযূ করলেন। তিনি পাত্র থেকে দু’হাতে পানি ঢাললেন ও তার দু’হাত তিনবার ধুলেন।

72- তুমি কি জানো না যে, ইসলাম পূর্বের সমস্ত পাপকে মিটিয়ে দেয়, হিজরত পূর্বের সমস্ত পাপকে নিশ্চিহ্ন ক’রে ফেলে এবং হজ্জ ক্ষমা ও পূর্বের পাপসমূহ ধ্বংস ক’রে দেয়?

73- একবার আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলাম। তখন তাঁকে দেখলাম তিনি তাজা মিসওয়াক দ্বারা মিসওয়াক করছেন। তিনি বলেন: মিসওয়াকের কিনারা তার মুখে রেখে তিনি উ‘ উ‘ শব্দ করছেন। মিসওয়াকটি তার মুখে রেখে যেন তিনি বমি করছেন।

74- তোমার জন্য তো এটুকুই যথেষ্ট ছিল যে, তুমি তোমার হাত দ্বারা এরূপ করবে: তারপর তিনি দু’ হাত মাটিতে মারলেন এবং তিনি বাম হাতকে ডান হাতের উপর মাসেহ করলেন। আর দুই হাতের কব্জির সম্মুখভাগ ও চেহারাকে মাসেহ করলেন।

75- আমার পূর্বে আল্লাহ যে কোন নবীকে যে কোন উম্মতের মাঝে পাঠিয়েছেন তাদের মধ্যে তাঁর (কিছু) সহযোগী ও সঙ্গী হত। তারা তাঁর সুন্নতের উপর আমল করত এবং তাঁর আদেশের অনুসরণ করত। অতঃপর তাদের পরে এমন অপদার্থ লোক সৃষ্টি হল যে, তারা যা বলত, তা করত না এবং তারা তা করত, যার আদেশ তাদেরকে দেওয়া হত না। সুতরাং যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ হাত দ্বারা জিহাদ করবে সে মু’মিন, যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ অন্তর দ্বারা জিহাদ করবে সে মু’মিন এবং যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে নিজ জিভ দ্বারা জিহাদ করবে সে মু’মিন। আর এর বাইরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান নেই।

76- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করল এমতাবস্থায় যে, তিনি (সওয়ারীর উপর আরোহণ করার জন্য) পাদানে পা রেখে দিয়েছিলেন, ‘কোন্ জিহাদ সর্বশ্রেষ্ঠ?’ তিনি বললেন, “অত্যাচারী বাদশাহর সামনে হক কথা বলা।”

77- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাতে সালাত কায়েম, যাকাত আদায় ও প্রতিটি মুসলমানের মঙ্গল কামনা করার শর্তে আমি বায়আত করেছি।’

78- হে মুআয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি।” অতঃপর হে মুআয আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে: (অর্থ) “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার যিকির, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) এবং সুন্দর ইবাদত করতে সাহায্য কর।” দোআটি পড়া অবশ্যই ত্যাগ করবে না।

79- পায়ের গোড়ালিগুলোর জন্য জাহান্নামের ‘আযাব রয়েছে।

80- এক রাতে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইশার সালাত আদায় করতে দেরী করছিলেন, তখন ‘উমার ইব্নুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উঠে গিয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললনে, ‘আস-সালাত’ হে আল্লাহর রাসূল! বাচ্চা ও নারীরা ঘুমিয়ে পড়ার উপক্রম। তারপর তিনি বের হলেন তার মাথা থেকে পানির ফোঁটা ঝরছিল। আর তিনি বলছিলেন “যদি আমার উম্মাতরে জন্য কষ্টকর হবে বলে মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে এ সালাত এ সময়ে আদায় করার নির্দেশ দিতাম।

81- আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু সিয়াম স্বতন্ত্র, তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।’ সিয়াম ঢাল স্বরূপ অতএব তোমাদের কেউ যেন সিয়ামের দিনে অশ্লীল না বলে এবং হৈ-হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালি-গালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, ‘আমি সিয়াম রেখেছি।’ সেই মহান সত্তার শপথ! যার হাতে মুহাম্মদের জীবন আছে, নিঃসন্দেহে সায়িমের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। সায়িমের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে, তখন সে আনন্দিত হয়; [১] যখন সে ইফতার করে [ইফতারের জন্য সে আনন্দিত হয়]। আর [২] যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, স্বীয় সিয়ামের জন্য সে আনন্দিত হবে।’’ [বুখারী ও মুসলিম, এই শব্দগুলি বুখারীর] বুখারীর অন্য বর্ণনায় আছে, ‘সে [সায়িম] পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করে একমাত্র আমারই জন্য। সিয়াম আমার জন্যই। আর আমি নিজে তার পুরস্কার দেব। আর প্রত্যেক নেকী দশগুণ বর্ধিত হয়।’ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আদম সন্তানের প্রত্যেক সৎকর্ম কয়েকগুণ বর্ধিত করা হয়। একটি নেকী দশগুণ থেকে নিয়ে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু সিয়াম ছাড়া। কেননা, তা আমার উদ্দেশ্যে [পালিত] হয়। আর আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। সে পানাহার ও কাম প্রবৃত্তি আমার [সন্তুষ্টি অর্জনের] উদ্দেশ্যেই বর্জন করে।’ সায়িমের জন্য দু’টি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দ হল ইফতারের সময়, আর অপরটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎকালে। আর নিশ্চয় তার মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট।”

82- হে আয়েশা! উঠো, বিতর সালাত আদায় করো।

83- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বোত্তম সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো, তিনি বললেন, “দীর্ঘ কিয়ামযুক্ত সালাত।”

84- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম কোন কাজটি করতেন? ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বললেন, সর্বপ্রথম মিসওয়াক করতেন।

85- সে এমন ব্যক্তি যার উভয় কানে অথবা তিনি বললেন, তার কানে শয়তান পেশাব করেছে।

86- “দশটি কাজ প্রকৃতিগত আচরণ; (১) গোঁফ ছেঁটে ফেলা। (২) দাড়ি বাড়ানো। (৩) দাঁতন করা। (৪) নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা। (৫) নখ কাটা। (৬) আঙ্গুলের জোড়সমূহ ধোয়া। (৭) বগলের লোম তুলে ফেলা। (৮) গুপ্তা-ঙ্গের লোম পরিষ্কার করা। (৯) পানি দ্বারা ইস্তেঞ্জা (শৌচকর্ম) করা।”

87- যখন তোমাদের কেউ নিদ্রা যায় তখন) তার গ্রীবাদেশে শয়তান তিনটি করে গাঁট বেঁধে দেয়; প্রত্যেক গাঁটে সে এই বলে মন্ত্র পড়ে যে, ‘তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি ঘুমাও।

88- তোমার ওপর কর্তব্য হচ্ছে (আল্লাহর জন্য) বেশি বেশি সাজদাহ করা। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সাজদাহ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দিবেন এবং এর বিনিময়ে তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দিবেন।

89- রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আল্লাহর ইবাদতের জন্য) যত পরিশ্রম করতেন, অন্য কোনো মাসে তেমন পরিশ্রম করতেন না। (অনুরূপভাবে) রমযানের শেষ দশকে যত পরিশ্রম করতেন অন্য দিনগুলোতে তত পরিশ্রম করতেন না।

90- আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য দাঁতন ও ওযূর পানি প্রস্তুত করে রাখতাম। অতঃপর আল্লাহর যখন রাতে তাঁকে জাগাবার ইচ্ছা হত, তখন তিনি জেগে উঠতেন। তারপর দাঁতন করতেন, ওযূ ক’রতেন ও সালাত আদায় করতেন।

91- যে বান্দার দু’টি পা আল্লাহর পথে ধুলায় ধূসরিত হবে, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।

92- তোমাদের কাউকে একবার চিমটি কাটায় যতোটুকু ব্যথা পাও শহীদ তার শাহাদাতের সময় ততোটুকুই কষ্ট পায়।

93- যে ব্যক্তি দু’টি ঠাণ্ডা সালাত পড়বে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

94- হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে শাহাদত বরণ করি, তাহলে কি পাপরাশি মিটিয়ে দেয়া হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হ্যাঁ, যদি তুমি আল্লাহর পথে নেকীর কামনায় ধৈর্যের সাথে অগ্রসর হয়ে এবং পশ্চাদপসরণ না করে শহীদ হয়ে যাও। কিন্তু ঋণ ছাড়া। যেহেতু জিবরীল আলাইহিস সালাম এখনই আমাকে এ কথা বললেন।

95- নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের প্রথমভাগে ঘুমাতেন এবং রাতের শেষভাগে উঠে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করতেন।

96- যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক দিনও সিয়াম পালন করে, আল্লাহ্ তার মুখমণ্ডলকে জাহান্নামের আগুন থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে সরিয়ে নেন।

97- লোকেরা যতদিন দ্রুত ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে।

98- তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমআর দিন সিয়াম পালন না করে। কিন্তু তার পূর্বে অথবা পরে একদিন সাওম পালন করবে।

99- আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে এক সা‘ খাদ্যদ্রব্য বা এক সা‘ যব বা এক সা’ পনির বা এক সা‘ কিসমিস দিয়ে সাদকাতুল ফিতর আদায় করতাম। অতঃপর যখন মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর যুগ আসল আর গম আমদানী হলো তখন তিনি বললেন, আমার মনে হয় এ গম থেকে এক মুদ গম (পূর্বোক্তগুলোর) দু’ মুদ-এর সমপরিমাণ হবে।

100- আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাহরী খেলাম, এরপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন। আনাস রহ. বলেন, আমি যায়েদকে জিজ্ঞেস করলাম, সাহরী ও সালাতের আযানের মধ্যে কত সময়ের ব্যবধান ছিলো? তিনি বলেন, পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করার পরিমাণ সময়।

101- মক্কা বিজয়ের পর সেখান থেকে আর হিজরত নেই; কিন্তু জিহাদ ও নিয়ত অবশিষ্ট রয়েছে। আর যখন তোমাদের জিহাদে যাওয়ার ডাক দেওয়া হবে তখন তোমরা বেরিয়ে পড়বে।

102- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রামাদানের শেষ দিন ই‘তিকাফ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণ (সে দিনগুলোতে) ই‘তিকাফ করেছেন।

103- তোমরা সাহরী খাও; কেননা সাহরীতে রয়েছে বরকত।

104- এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সফরে সাওম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম রাখ, আর যদি তোমার ইচ্ছা হয় তবে সাওম ভঙ্গ কর।”

105- তোমরা রমযানের একদিন বা দু’দিন পূর্বে (নফল) সাওম পালন করবে না। তবে যদি কোনো ব্যক্তি এ সময় সাওম পালন করতে অভ্যস্ত থাকে, তবে সে সাওম পালন করতে পারে।

106- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক পুরুষ, মহিলা, আযাদ ও গোলামের পক্ষ থেকে সাদাকাতুল ফিতর অথবা বলেছেন রামাযানের সাদাকা হিসেবে এক সা‘ খেজুর বা এক ‘সা’ যব আদায় করা ফরয করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর লোকেরা প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সকলের পক্ষ থেকেই এক ‘সা’ এর বদলে অর্ধ ‘সা’ গম দিতে লাগলো।

107- যে মহিলা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, তার সাথে কোনো মাহরাম না থাকা অবস্থায় তার জন্য একদিন- এক রাত্রির পথ সফর করা বৈধ নয়।

108- নিজ স্ত্রীর সাথে মিলন জনিত কারণে নাপাক অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সাওম পালন করতেন।

109- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দিনের সাওম থেকে নিষেধ করেছেন। ফিতর ও নাহারের দিন। আর আপাদমস্তক এক কাপড়ে জড়িয়ে থাকা ও ইয়াহতিবা থেকে নিষেধ করেছেন এবং ফজর ও আসরের পর সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।

110- সিয়াম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে, তাহলে সে যেন তার সাওম পূর্ণ করে নেয়। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

111- এই দুই দিনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাওম পালন করতে নিষেধ করেছেন। তোমাদের সাওম ছেড়ে ফিতরের দিন। আরেক দিন, যেদিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর গোশত খাও।

112- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তালবিয়া ছিল এরূপ: আমি হাযির হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির; আপনার কোনো অংশীদার নেই, আমি হাযির। নিশ্চয় সকল প্রশংসা ও সকল নিআমত আপনার এবং কর্তৃত্ব আপনারই, আপনার কোনো অংশীদার নেই।

113- আমার বন্ধু (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সাওম পালন করা এবং দু‘রাকাত সালাতুদ-দুহা এবং আমি যেন ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করি।

114- তোমরা রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর।

115- আমি দেখছি শেষ সাত রাতে তোমাদের স্বপ্নগুলো মিলে গেছে। অতএব, যে ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী, সে যেন শেষ সাত রাতে তা সন্ধান করে।

116- যখন রাত্র এদিক হতে ঘনিয়ে আসে এবং দিন এ দিক হতে চলে যায়, তখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।

117- পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।

118- হে আল্লাহর রাসূল! আমি জাহেলী যুগে মসজিদুল হারামে এক রাত অন্য বর্ণনায় এক দিন ই‘তিকাফ করার মানত করেছি। তিনি বললেন, তোমার মানত পূরণ কর।

119- যখন তোমরা তা দেখবে তখন সিয়াম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন সিয়াম ছেড়বে। আর যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে।

120- রাসূল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতক সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল। তারা সালাত পড়ছে যেমন আমরা সালাত পড়ছি, তারা সিয়াম রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে।’ তিনি বললেন, “আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।” সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন ক’রে নিজের যৌন ক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে?’ তিনি বললেন, “কি রায় তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কাম-ক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে।

121- মানুষের জামা‘আতের সঙ্গে সালাত পড়ার নেকী, তার বাজারে ও বাড়ীতে সালাত পড়ার চেয়ে বিশেরও বেশি গুণ নেকী।

122- দৈহিক ব্যথা বা অন্য কোন অসুবিধার কারণে যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রাতের সালাত ছুটে যেত, তাহলে তিনি দিনের বেলায় ১২ রাকাত সালাত পড়তেন।

123- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বিপদে) চিৎকারকারী, মাথা মুণ্ডনকারী ও জামাকাপড় ছিড়েঁ ফেলা নারীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন।

124- যে ব্যক্তি (কাঁচা) রসূন অথবা পিঁয়াজ খায়, সে আমাদের থেকে দূরে অবস্থান করবে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকবে—এবং সে তার ঘরে অবস্থান করবে।

125- যখন রমযানের শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নিজে জাগতেন, নিজ পরিজনদেরকেও জাগাতেন, কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং লুঙ্গি বেঁধে নিতেন।

126- সে জাহান্নামী! লোকেরা তাকে দেখতে গেল আর তারা একটি আবা (বড় জামা) পেল যা সে আত্মসাৎ করেছিল।

127- পাঁচ ওয়াক্তের নামাযের উদাহরণ প্রচুর পানিতে পরিপূর্ণ ঐ নদীর মত, যা তোমাদের কারো দুয়ারের (সামনে বয়ে) প্রবাহিত হয়, যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে।”

128- আমরা সালাতে কথা বলতাম। সালাতে একজন মানুষ তার পাশের লোকের সাথে কথা বলত। অবশেষে এ আয়াত নাযিল হলো, “তোমরা আল্লাহর জন্যে চুপ করে দাঁড়াও”। ফলে আমাদের চুপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো এবং কথা বলতে নিষেধ করা হলো।

129- নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকূ ও সিজদাতে এই তাসবীহটি অধিক মাত্রায় পড়তেন, ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা অবিহামদিক, আল্লাহুম্মাগফিরলী।’ অর্থাৎ, হে আমাদের রব আল্লাহ! তোমার প্রশংসা সহকারে তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা কর।

130- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে সূর্য্য গ্রহণ হলো। তখন তিনি একজন আহ্বানকারীকে আহ্বান করতে প্রেরণ করলেন: সালাতের জন্যে উপস্থিত হোন। তারা একত্র হলো এবং তিনি সামনে অগ্রসর হলেন। তিনি তাকবীর বললেন, দুই রাকা‘আতে চারটি রুকু‘ ও চারটি সেজদা আদায় করেন।

131- রাতের সব অংশেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে) সালাত বিতর আদায় করতেন। রাতের প্রথমাংশে, মধ্যভাগে ও শেষাংশের সালাতে বিতর আদায় করতেন। রাতের শেষভাগে সাহরির সময় তার বিতর শেষ হতো।

132- তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্ততিদেরকে সালাতের আদেশ দাও; যখন তারা সাত বছরের হবে। আর তারা যখন দশ বছরের সন্তান হবে, তখন তাদেরকে সালাতের জন্য প্রহার কর এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।”

133- আমরা আপনাকে কীভাবে সালাম দেব তা জানলাম। তবে কীভাবে আপনার উপর সালাত পেশ করবো? তিনি বললেন, তোমরা বলো, হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ এর উপর রহমত প্রেরণ করো এবং মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজনের উপর। যেমন তুমি রহমত প্রেরণ করেছো ইবরাহীমের উপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত। আর বরকত নাযিল করো মুহাম্মাদের উপর এবং মুহাম্মাদের পরিবার পরিজনের উপর যেমন বরকত নাযিল করেছো ইবরাহীমের উপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত।

134- যে ব্যক্তি জুমু‘আহর দিন জানাবাত গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং সালাতের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কুরবানী করল। আর যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কুরবানী করল।

135- তোমাদের মধ্যে যে জুমু‘আয় উপস্থিত হয় সে যেন গোসল করে।

136- যে ব্যক্তি মৃতের জন্য সালাত আদায় করা পর্যন্ত জানাযায় উপস্থিত থাকবে, তার জন্য এক কীরাত, আর যে ব্যক্তি মৃতের দাফন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে তার জন্য দু’ কীরাত। জিজ্ঞেস করা হল দু’ কীরাত কী? তিনি বললেন, দু’টি বিশাল পর্বত সমতুল্য (সাওয়াব)।

137- যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযূ করল, অতঃপর জুমআহ পড়তে এল এবং মনোযোগ সহকারে নীরব থেকে খুতবাহ শুনল, সে ব্যক্তির এই জুমআহ ও (আগামী) জুমআর মধ্যেকার এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের (ছোট) পাপসমূহ মাফ ক’রে দেওয়া হল। আর যে ব্যক্তি (খুৎবাহ্ চলাকালীন সময়ে) কাঁকর স্পর্শ করল, সে অনর্থক কর্ম করল।

138- যে ব্যক্তি সকাল অথবা সন্ধ্যায় মসজিদে গমন করে, আল্লাহ তার জন্য আপ্যায়ন সামগ্রী জান্নাতে প্রস্তুত করেন। সে যতবার সকাল অথবা সন্ধ্যায় গমনাগমন করে,( আল্লাহও তার জন্য ততবার আতিথেয়তার সামগ্রী প্রস্তুত করেন।)

139- যে ব্যক্তি তীর সঙ্গে নিয়ে আমাদের কোনো মসজিদ অথবা কোনো বাজারের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করবে, তার উচিৎ হবে, হাতের চেটো দ্বারা তার ফলাকে ধরে নেওয়া। যাতে কোনো মুসলিম তার দ্বারা কোনো প্রকার কষ্ট না পায়।

140- হে লোকসকল! তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় করো, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো, খাবার খেতে দাও এবং রাতের বেলা মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সালাত পড়ো। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

141- হে আল্লাহর রাসূল, সবচাইতে উত্তম ব্যক্তি কে?

142- ইমাম যখন আমীন বলবে, তখন তোমরাও আমীন বলবে; কেননা যে ব্যক্তির আমীন ফিরিশতাদের আমীনের সাথে মিলবে তার পূর্ব-জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।

143- যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদকা করবে, (আল্লাহ তা কবুল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র সম্পদ কবুল করেন। আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার জন্য তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সদকা পাহাড় বরাবর হয়ে যায়।

144- হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহের সমর্থ রাখে সে যেন অবশ্যই বিয়ে করে। কারণ, এটা চোখকে অধিক সংযত করে ও লজ্জাস্থানকে সবচেয়ে বেশি হিফাযত করে, আর যে সমর্থ রাখে না সে সিয়ামকে আবশ্যক করে নিবে। কারণ, সিয়াম তার যৌন চাহিদাকে দমনকারী।

145- তোমাদের কেউ যখন সালাতের ইমামতি করে, সে যেন সালাত সংক্ষেপ করে; কেননা, তাদের মধ্যে রয়েছে দুর্বল, রোগী ও কর্মজীবি লোকে। তোমরা যখন নিজেরা একাকী সালাত আদায় করো তখন যতো ইচ্ছা দীর্ঘ করো।

146- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ব্যক্তিকে বড় বা ছোট সেনা দলের অধিনায়ক নিয়োগ করে পাঠানোর সময় বিশেষভাবে তার জন্য আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বনের এবং তার সহ-যোদ্ধাদের সাথে উত্তম ব্যবহারের উপদেশ দিতেন। তিনি বলতেন, “তোমরা আল্লাহর নামে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো, যারা আল্লাহর সাথে কুফরী করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। তোমরা জিহাদ করো, বিশ্বাসঘাতকতা করো না, চুরি করো না, কারো অঙ্গহানি বা অঙ্গ বিকৃত করো না এবং শিশুদের হত্যা করো না। যখন তুমি শত্রু পক্ষের মুশরিকদের মুখোমুখী হবে, তখন তাদেরকে তিনটি বিষয়ের প্রতি আহবান জানাবে। তারা সেগুলোর যে কোন একটির প্রতি সাড়া দিলে তুমি তাদের থেকে তা কবুল করো এবং তাদেরকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকো। ১. অতঃপর তুমি তাদেরাক ইসলামের দাওয়াত দাও। তারা যদি তা কবুল করে তবে তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নাও এবং তাদেরকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকো। অতঃপর তাদেরকে স্বদেশ ছেড়ে মুহাজিরদের দেশে চলে আসার আহবান জানাও এবং তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তারা যদি এ কাজ করে তবে যেসব সুযোগ-সুবিধা মুহাজিরগন পাবে তারাও তা পাবে এবং মুহাজিরদের উপর যেসব দায়দায়িত্ব বর্তাবে তা তাদের উপরও বর্তাবে। তারা যদি (স্বদেশ ত্যাগ করতে) অসম্মত হয় তবে তাদের জানিয়ে দাও যে, তারা বেদুইন মুসলমানদের সমান মর্যাদা পাবে, তাদের উপর আল্লাহর সেই সব হুকুম জারি হবে যা মুমিন মুসলমানদের উপর জারী হয় এবং তারা গনীমত ও ফাই-এর কিছুই পাবে না, তবে যদি তারা মুসলমানদের সাথে মিলে জিহাদ করে। ২. তারা যদি ইসলামে দাখিল হতে অস্বীকার করে তবে তাদেরকে জিযয়া দিতে বলো। তারা যদি তা দেয় তবে তাদের নিকট থেকে তা গ্রহণ করো এবং তাদেরকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকো। ৩. তারা যদি জিযয়া দিতেও অস্বীকার করে, তবে তুমি তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করো এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। আর তুমি কোন দুর্গ অবরোধ করলে পর তারা তোমার নিকট আল্লাহর যিম্মাদারি এবং তোমার নবীর যিম্মাদারি লাভের আশা করলে তুমি তাদের জন্য আল্লাহর যিম্মাদারি এবং তোমার নবীর যিম্মাদারি দান করবে না, তবে তোমার নিজের জিম্মাদারী ও তোমার সাথীদের জিম্মাদারী দান করো। কারণ, তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের সাথীদের যিম্মাদারি ভঙ্গ করা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যিম্মাদারি ভঙ্গ করার চেয়ে তোমাদের জন্য অধিকতর সহজ। আর তুমি কোন দূর্গ অবরোধ করলে পর তারা তোমার নিকট আল্লাহর হুকুম মানতে চাইলে তুমি তাদেরকে আল্লাহর হুকুমের ওপর রাখবে না, বরং তোমার হুকুম মানতে বাধ্য করো, কারণ তুমি জান না তাদের ব্যাপারে তুমি আল্লাহর হুকুম সঠিকভাবে জানতে পারবে কি পারবে না।

147- অনুসরণ করার জন্যেই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে। অতএব, তোমরা আমলে তার সাথে অনৈক্য করো না। যখন সে তাকবীর বলে তোমরাও তখন তাকবীর বল এবং যখন সে রুকু করে তোমরাও তখন রুকু কর। আর যখন সে, ‘সামিআ‘ল্লাহুলিমান হামিদাহ’ বলে, তোমরা তখন ‘রাব্বানা লাকাল হামদ্’ বল, আর যখন সে সাজদাহ করে তোমরাও তখন সাজদাহ কর। আর যখন সে বসে সালাত পড়ে তোমরাও তখন সম্মিলিতভাবে বসে সালাত পড়।

148- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সকল মানুষের চেয়ে অধিক দানশীল।

149- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবানের চাইতে বেশি সিয়াম কোনো মাসে রাখতেন না।

150- সূর্য উদয় ও অস্ত যাওয়ার পূর্বে যে সালাত আদায় করে সে কখনোই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।

151- আগামী বছর যদি আমি বেঁচে থাকি, তাহলে মুহাররম মাসের নবম তারিখে অবশ্যই রোযা রাখব।

152- কতক তাসবীহ রয়েছে প্রতিটি ফরয সালাতের পর যে ব্যক্তি এগুলো পাঠ করবে সে হতাশ হবে না।

153- যে ব্যক্তি তীর নিক্ষেপের জ্ঞান অর্জন করল, তারপর সে তা পরিত্যাগ করল, সে আমাদের দলভুক্ত নয় অথবা সে অবাধ্য হলো।

154- যে ব্যক্তি মারা গেল অথচ তার নফসকে জিহাদ সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করে নি, সে মুনাফিকীর একটি শাখার ওপর মারা গেল।

155- স্বর্ণ ও রৌপ্যের যে মালিক তার স্বর্ণের হক আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তার স্বর্ণ-রৌপ্যগুলোকে আগুন দিয়ে গলিয়ে চ্যাপটা করা হবে। অতঃপর জাহান্নামের আগুনে গরম করে তার পার্শ্বদেশে, পিঠে এবং কপালে তা দিয়ে ছেঁকা দেয়া হবে।

156- তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ ক’রে হয়!

157- ‘আরাফার দিন অপেক্ষা এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহ সর্বাধিক বেশি সংখ্যায় বান্দাকে জাহান্নামমুক্ত করেন। এ দিন তিনি (বান্দার) নিকটবর্তী হন, অতঃপর তাদের সম্পর্কে ফিরিশতাদের নিকট গৌরব করে বলে, তারা কী চায়?

158- সাগরের পানি পবিত্র এবং এর মৃত প্রাণী হালাল।

159- পানি যখন দুই ‘কুল্লা’ হবে তখন তা নাপাক হবে না।

160- যদি তোমাদের কেউ ঘুম থেকে জাগ্রত হয়, সে যেন অযু করে এবং তিনবার নাক পরিষ্কার করে। কারণ, শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাত যাপন করে।

161- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অযু করলেন। আর অযুতে তিনি মাথার অগ্রভাগ এবং পাগড়ি ও মোজার উপর মাসাহ করলেন।

162- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অযু করতেন তখন তার দুই কনুইর উপর পানি পৌঁছাতেন।

163- তুমি ফিরে যাও এবং তোমার অযূকে সুন্দর কর।

164- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সা‘ থেকে পাঁচ মুদ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করতেন এবং এক মুদ পানি দিয়ে ওযু করতেন।

165- যে কোনো মুসলিম উত্তমরূপে ওযু করল তারপর মনোযোগ সহকারে মন দিয়ে দাঁড়িয়ে দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করল, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।

166- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি তার মোজার উপরিভাগের ওপর মাসেহ করেন।

167- তোমাদের কেউ যখন অযু করে মোজা পরিধান করে, তখন সে যেন মোজাদ্বয়ের উপর মাসেহ করে এবং ইচ্ছা করলে তা না খুলেই যেন সালাত আদায় করে। তবে বড় নাপাকীর কারণে মাসেহ করা বৈধ হবে না।

168- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করে অযু না করেই সালাতের জন্য বের হয়ে গিয়েছিলেন।

169- সেটি তো তার এক টুকরো গোশত বৈ কিছু নয়।

170- আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কিছু লোক একটা জানাযা নিয়ে পার হয়ে গেল। লোকেরা তার প্রশংসা করল। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “অবধারিত হয়ে গেল।” অতঃপর দ্বিতীয় আরেকটি জানাযা নিয়ে পার হলে লোকেরা তার দুর্নাম করল। নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “অবধারিত হয়ে গেল।” উমার বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘কী অবধারিত হয়ে গেল?’ তিনি বললেন, “তোমরা যে এর প্রশংসা করলে তার জন্য জান্নাত, আর ওর দুর্নাম করলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেল। তোমরা হলে পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী।” মুত্তাফাকুন আলাইহি

171- তোমরা যদি এই শহরের (মদীনার) লোক হতে, তাহলে আমি তোমাদেরকে অবশ্যই কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উঁচুস্বরে কথা বলছ!’

172- হে লোক সকল! তোমরা দুই শ্রেণির এমন গাছ (সবজি) খেয়ে থাক; যা আমি (কাঁচা অবস্থায় খাওয়া) অনুপযুক্ত মনে করি; পিঁয়াজ ও রসুন।

173- যার কাছে এমন কুরবানীর পশু আছে যাকে যবেহ করার ইচ্ছা রাখে, সে যেন যুলহিজ্জার চন্দ্রোদয়ের পর থেকে কুরবানী যবেহ না করা পর্যন্ত নিজ চুল, নখ কিছু অবশ্যই না কাটে।

174- আমরা পবিত্র হওয়ার পর হলদে ও মেটে বর্ণের স্রাবকে কিছুই গণ্য করতাম না।

175- তোমার হায়েয তোমাকে যে পরিমাণ বিরত রাখত সে পরিমাণ তুমি বিরত থাক। অতঃপর তুমি গোসল কর।

176- যখন তোমাদের কেউ তার পরিবারের নিকট আসে তারপর যখন পুণরায় তার কাছে যেতে চায় সে যেন মাঝখানে একবার অযু করে নেয়।

177- যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন অযু করল সে যথেষ্ট করল ও ভালো করল, আর যে গোলস করল সে অধিক উত্তম।

178- জুমু‘আর দিন প্রত্যেক বালিগের জন্য গোসল করা কর্তব্য। আর মিস্ওয়াক করবে এবং সুগন্ধি পাওয়া গেলে তা ব্যবহার করবে।”

179- দুই অভিশাপকারী থেকে তোমরা সতর্ক থাকো। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল দুই অভিশাপকারী কি? বলল, যে মানুষের চলাচলের রাস্তায় অথবা তাদের ছায়ায় পেশাব-পায়খানা করে।

180- যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানগুলোকে শিকলে বন্দী করা হয়।

181- নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশূরার দিন সাওম পালন করেছেন।

182- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন প্রকার পানি স্পর্শ করা ছাড়া নাপাকী অবস্থায় ঘুমাতেন।

183- ঈদুল ফিতর এবং ‘ঈদুল আযহা- এ দুই দিন কেউ সাওম পালন করবে না। তিন—‘আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এবং ফজরের পর সূর্য উদয় পর্যন্ত কেউ কোন সালাত আদায় করবে না। চার—আর মাসজিদে হারাম (কা‘বা), আমার মাসজিদ (মাসজিদে নাববী) এবং মাসজিদে আকসা (বাইতুল মাকদিস)- এ তিন মাসজিদ ব্যতীত অন্য কোন মাসজিদের জন্য সফরের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে না।

184- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তিন সময়ে আমাদের মৃতদের জানাযা পড়তে এবং তাদেরক কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন: সূর্য উদয়কালে যতক্ষণ না তা উপরে ওঠে যায়, সূর্য যখন বরাবর থাকে যতক্ষণ না পশ্চিমাকাশে ঢলে যায় এবং যখন অস্ত যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় যতক্ষণ না তা ডুবে যায়।

185- যে ব্যক্তি আযান শুনে এই দু‘আ বলবে, اللهم رب هذه الدعوة التامة, والصلاة القائمة, آت محمدا الوسيلة والفضيلة, وابعثه مقاما محمودا الذي وعدته “হে আল্লাহ এই পূর্ণাঙ্গ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই রব! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তুমি জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান ও মর্যাদা দান করো এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছো। তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ অনিবার্য হয়ে যাবে।”

186- পাপ্ত বয়স্কা নারীর সালাত আল্লাহ তা‘আলা উড়না ছাড়া কবুল করেন না।

187- দুই কাঁদ খালি রেখে তোমাদের কেউ যেন এক কাপড়ে সালাত আদায় না করে।

188- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন— সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যে দিকেই মুখ করত না কেন। কিন্তু যখন ফরয সালাত আদায়ের ইচ্ছা করতেন, তখন নেমে পড়তেন এবং ক্বিবলামুখী হতেন।

189- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফর করতেন তখন নফল সালাত আদায় করার ইচ্ছা করলে তিনি তার উষ্টিকে কিবলামুখ করতেন এবং তাকবীর বলতেন। তারপর সালাত আদায় করতেন যে দিকে তার বাহন তাকে ফিরাতো।

190- কবরস্থান এবং গোসল খানা ছাড়া সমগ্র যমীন মসজিদ।

191- পুরুষদের বেলায় তাসবীহ্ (সুবহানাল্লাহ্) বলা, তবে মহিলাদের বেলায় ‘তাসফীক’ (এক হাতের তালু দিয়ে অন্য হাতের তালুতে মারা)।

192- তোমাদের কেউ যখন কোনো বস্তুর দিকে ফিরে সালাত আদায় করে যা তাকে মানুষকে থেকে আড়াল করে, আর কেউ তার সামনে দিয়ে যেতে চায়, তাহলে সে তাকে বাধা দিবে, সে যদি না মানে, তবে সে ব্যক্তি (মুসল্লী) তার সাথে লড়াই করে, কেননা সে শয়তান।

193- “তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায়, তখন সে তার রবের সাথে কানে কানে (ফিসফিস ক’রে কথা) বলে। আর তার রব তার ও কেবলার মধ্যস্থলে থাকেন। সুতরাং তোমাদের কেউ যেন কেবলার দিকে থুথু না ফেলে; বরং তার বামে অথবা পদতলে ফেলে। অতঃপর তিনি তাঁর চাদরের এক প্রান্ত ধরে তাতে থুথু নিক্ষেপ করলেন। তারপর তিনি তার এক অংশকে আর এক অংশের সাথে রগড়ে দিয়ে বললেন, কিংবা এইরূপ করে।”

194- আমার সামনে থেকে তোমার এই পর্দা সরিয়ে নাও, কারণ সালাত আদায়ের সময় এর ছবিগুলো আমার সামনে ভেসে ওঠে।

195- “লোকদের কী হয়েছে যে, তারা সালাতের মধ্যে আকাশের দিকে দৃষ্টি তুলছে?” এ ব্যাপারে তিনি কঠোর বক্তব্য রাখলেন; এমনকি তিনি বললেন, “তারা যেন অবশ্যই এ কাজ হতে বিরত থাকে; নচেৎ অবশ্যই তাদের দৃষ্টি-শক্তি কেড়ে নেওয়া হবে।”

196- সালাতে হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে। অতএব কেউ যখন হাই তুলে তখন সে যেন যথাসাধ্য তা রোধ করে।

197- মাসজিদে থুথু ফেলা গুনাহের কাজ, আর তার কাফফারাহ (প্রতিকার) হচ্ছে তা দাবিয়ে দেয়া (মুছে ফেলা)।

198- আমাকে মসজিদসমূহ মজবুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

199- হতে পারে তোমরা তোমাদের ইমামের পিছনে কিরাত পড়। আমরা বললাম হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল। বললেন, তোমরা তা করো না, তবে সূরা ফাতিহা। কারণ, যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়ে না তার সালাত হয় না।

200- যখন তুমি সেজদা করো তোমার দুই কব্জিকে যমীনে রাখো আর দুই কনুইকে তুলে রাখো।

201- আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চার জানু হয়ে সালাত আদায় করতে দেখেছি।

202- যখন তোমাদের কেউ সেজদাহ করে সে যেন উটের বসার মতো না বসে। আর সে যেন তার দুই হাতকে তার দুই হাঁটু রাখার আগে রাখে।

203- ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু তার দুই হাঁটুর পূর্বে দুই হাতকে রাখতেন। আর তিনি বলতেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করবেতন।

204- আমি রাসূলুল্লাহর সাথে সালাত আদায় করি। তিনি ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে বলতেন আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ আর বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে বলতেন আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

205- যে ব্যক্তি ফরয সালাতের পরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করতে কোন কিছুই বাঁধা দেবে কেবল মৃত্যু ছাড়া।

206- তারা সত্য বলেছে, তাদেরকে এমন শাস্তি দেওয়া হয় যা সব চতুষ্পদ জন্তু শুনতে পায়।

207- নিশ্চয় এ উম্মতকে কবরে শাস্তি দেওয়া হয়। যদি তোমরা ভয়ে দাফন করবে এ আশঙ্ক না করতাম তাহলে আমি আল্লাহর নিকট দো‘আ করতাম যাতে তিনি তোমাদের কবরের শাস্তি শোনায় যা আমি শুনি।

208- তোমাদের কারো সালাতে যদি সন্দেহ হয়—কত রাকা‘আত পড়ছে তিনি না চার তা জানে না, সে যেন সন্দেহ পরিহার করে প্রবল ধারণার উপর ভিত্তি করে। তারপর সালাত শেষ করার পর সালামের পূর্বে দু’টি (সাহু) সাজদাহ করবে। যদি সে পাঁচ রাকা‘আত পড়ে থাকে তাহলে তা তার সালাতকে জোড় করবে। আর যদি সালাত চার রাকা‘আত পূর্ণ করার জন্য আদায় করে থাকে, তাহলে সাজদাহ দু’টি হবে শয়তানের জন্য নাকে খত দেয়ার মত অপ্রীতিকর।

209- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজর হবার পর জামা‘আত দাঁড়ানোর পূর্বে সংক্ষিপ্ত দু’রাক‘আত সলাত আদায় করতেন।

210- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং সকালের (ফজের পূর্বে) দু’রাক‘আত সালাত ছাড়তেন না।

211- যে ব্যক্তি যুহরের পূর্বে এবং পরে চার রাকা‘আত সালাতের হিফাযত করে তাকে আল্লাহ জাহান্নামের ওপর হারাম করে দেবেন।

212- আল্লাহ সে ব্যক্তির উপর রহমত বর্ষণ করেন যে আসরের (ফরযের) পূর্বে চার রাক‘আত (নফল) সালাত আদায় করে।

213- আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দুই রাকা‘আতে সূরা কাফিরুন এবং সূরা ইখলাস পড়েন। সহীহ মুসলিম।

214- রাত ও দিনের সালাত দুই রাকা‘আত দুই রাকা‘আত করে।

215- রমযান মাসের সিয়ামের পর সর্বোত্তম সিয়াম হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহার্রামের সিয়াম। আর ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুুদের) সালাত।”

216- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা তের রাক‘আত সলাত আদায় করতেন, যার ভিতর আছে বিতির এবং ফজরের দু’ রাক‘আত (সুন্নাত)।

217- তোমরা ভোর করার পূর্বে ভিতিরের সালাত আদায় কর।

218- যে ব্যক্তি শেষ রাতে জাগ্রত না হওয়ার আশঙ্কা করে সে যেন প্রথম রাতে বিতির পড়ে নেয়, আর যে ব্যক্তি শেষ রাতে জাগার আশা করে সে যেন শেষ রাতে বিতির পড়ে নেয়। কারণ, শেষ রাতের সালাতের সময় ফিরিশতাদের উপস্থিত হয়। আর তা অবশ্যই উত্তম।

219- জামা‘আতের সালাত তোমাদের কারো একাকী সালাত হতে পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব রাখে। আর ফাজরের সালাতে রাতের ও দিনের মালাকগণ একত্রিত হয়।

220- যে ব্যক্তি আযান শুনলো এবং তার কোন ওযর না থাকা সত্ত্বওে জামাআতে উপস্থতি হলো না, তার সালাত নাই।

221- হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরে সলাত আদায় কর। কেননা, ব্যক্তির উত্তম সালাত হচ্ছে তার ঘরের সালাত তবে ফরয সালাত ব্যতীত।

222- আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পুরুষদের কাতারের মধ্যে সর্বোত্তম কাতার হল প্রথম কাতার, আর নিকৃষ্টতম কাতার হল শেষ কাতার। আর মহিলাদের কাতারের মধ্যে সর্বোত্তম কাতার হল শেষ কাতার এবং নিকৃষ্টতম কাতার হল প্রথম কাতার।” সহীহ মুসলিম।

223- ওয়াবেসাহ ইবন মা‘বাদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে কাতারের বাহিরে একা সালাত আদায় করতে দেখে তাকে সালাত পুণরায় আদায় করার নির্দেশ দেন। সুনানে আবূ দাউদ।

224- “আমলসমূহ ছয় প্রকার ও মানুষ চার প্রকার। দুটি আবশ্যককারী কাজ এবং একটি এমন কাজ যা অপরটির সমান। একটি ভালোকাজ তার দশগুণ সমপরিমাণ আবার একটি ভালোকাজ সাতশত গুণ

225- আল্লাহ তা‘আলা যখন কোন ভুমিতে কারো মৃত্যুর ফয়সালা করেন, তখন সেখানে তার প্রয়োজন সৃষ্টি করেন।”

226- এবং আমি বনু সা‘দ ইবনু বকরের ভাই দ্বিমাম ইবনু ছা‘লাবাহ।

227- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতের সময় উযূ করতেন

228- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার একবার উযূ করেছেন।

229- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূতে দু’বার দু’বার করে ধুয়েছেন।

230- “তোমাদের কেউ যখন তার পেটে কোন কিছু অনুভব করে, তারপর তার সন্দেহ হয় যে, পেট থেকে কিছু বের হল কি না। তখন সে মসজিদ থেকে বের হবে না যতক্ষণ না শব্দ শোনে অথবা গন্ধ পায়”। (অর্থাৎ ওযু ভঙ্গের পূর্ণ বিশ্বাস না হওয়া পর্যন্ত যেন বের না হয়।)

231- “প্রত্যেক মুসলিমের উচিত সাত দিনে এক দিন গোসল করা। এই দিন সে তার মাথা ও শরীর ধৌত করবে”।

232- আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ইসলাম গ্রহণ করতে এলাম, তিনি আমাকে বরই পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করার নির্দেশ দিলেন।